Dhaka মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনের ফল নির্ধারিত হয়েছে উচ্চ পর্যায়ের টেবিল থেকে : মঈন খান

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৩৮:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৪
  • ১৯৮ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

গত ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদকে সরকার কুক্ষিগত করে নিয়েছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, ৭ জানুয়ারি কোনো নির্বাচন হয়নি। ভোটের ফলাফল সব নির্ধারিত হয়েছে ঢাকার একটি উচ্চ পর্যায়ের টেবিল থেকে। কে কত ভোট পাবে, কে কে নির্বাচিত হবে।

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে ‘৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত প্রহসনের নির্বাচনের বিষয়ে’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, গত তিন দিনে আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে শুধুমাত্র একটি কথা বলা হচ্ছে, তা হলো ‘এ নির্বাচন একটা ভুয়া এবং প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে’। মিডিয়ার পাশাপাশি সারাবিশ্বে যে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো রয়েছে, এখানে আমেরিকা বা যুক্তরাষ্ট্রই বলেন বা জাতিসংঘই বলেন তাদের প্রত্যেকটি বিবৃতি আপনারা পাঠ করুন সেখানে কি বলেছে। আমি একটি উদাহরণ দিয়ে বলছি আমেরিকার মতো রাষ্ট্র বলেছে এ নির্বাচন কোনোভাবেই অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। এ কথাটিই আমরা জাতীয়তাবাদী দল গত ১৫ মাস ধরে বলে আসছি।

মঈন খান বলেন, বিএনপির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশ জনগণ এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে এটা প্রমাণ করা যে, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। এ নির্বাচনের মাধ্যমে সেটির প্রমাণ হয়ে গেছে। সরকার যেটাতে বিশ্বাস করে সেটা হচ্ছে একদলীয় বাকশালীয় কায়দায় শাসন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম টাইমস ম্যাগাজিন বাংলাদেশ সরকারকে নাম দিয়েছে ‘বাকশাল- টু’।

বিএনপি সরকারের নির্বাচনের নানা কর্মকাণ্ডের ২৫০টি ঘটনার ওপর প্রমাণসহ একটি বই বের করেছি উল্লেখ করে মঈন খান বলেন, একসঙ্গে ভিডিও ক্লিপও রয়েছে। এ ধরনের আরেকটি ভলিয়ম আমরা অল্প কিছুদিনের মধ্যে জনগণের সামনে আবার উপস্থাপন করব। সবচেয়ে লজ্জা এবং দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এতদিন সরকার ভোট চুরি গোপনে করলেও এ নির্বাচনে সরকার ভোট ডাকাতি করেছে প্রকাশ্যে, ওপেনে। তারা দিনের আলোতে প্রকাশ্যে আলোচনা করেছে, সিট ভাগাভাগি করেছে যে, কে কোন আসন পাবে।

মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন করতে পারবে না। বিশ্ববাসীর কাছে আমরা এতদিন যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছি তা সত্য হচ্ছে। এটা প্রমাণ হয়ে গেছে যে এভাবে একটি ভুয়া নির্বাচনের আবহ সৃষ্টি করে, বিদেশি ক্ষমতা দিয়ে কোনো ধরনের গণতন্ত্র হতে পারে না তা আজকে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে মঈন খান অভিযোগ করেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিস সরকার বেদখল করে নিয়েছিল ২৮ অক্টোবর ক্র্যাকডাউন করে।’

বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র নেই দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র আজ মৃত। আমরা গণতন্ত্রের জন্য লাখ লাখ মানুষ নিজেদের রক্ত দিয়েছিল। এ অবস্থার জন্য নয়। সরকার বিশ্বাস করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থায়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, এ দেশের মানুষ ৭ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জন করে সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া বলেছে এ নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে, সুষ্ঠু হয়নি। অনেক সংস্থা বলেছে, নির্বাচনে সুষ্ঠু ও লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি করে হয়নি। সাজানো নাটক করে নির্বাচনের আবহ তৈরি করেছে- তা বিশ্বে প্রমাণিত হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আছি, থাকবো। ক্ষমতার জন্য নয়, জনগণের জন্য রাজনীতি করি। একটা ভোটের পরিবেশ আমরা সৃষ্টি করবো, ইনশাআল্লাহ।

এ সময় মঈন খান আরও বলেন, নির্বাচনের অনিয়মের ২৫০ ঘটনা নিয়ে আমাদের ডকুমেন্ট তৈরি হয়েছে। এগুলো যথেষ্ট নয়, আরও আড়াইশ অনিয়মের ঘটনা নিয়ে ডকুমেন্ট তৈরি হচ্ছে।

বাংলাদেশের গণতন্ত্র আজকে মৃত এমন মন্তব্য করে মঈন খান বলেন, লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে এ বাংলাদেশ তৈরি করেছিল। আজকে আওয়ামী লীগ সরকারকে আমরা প্রশ্ন করতে চাই, আওয়ামী লীগ নিজেদের মুক্তিযোদ্ধার পক্ষের শক্তি বলে দাবি করে তাহলে কেন তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। এ প্রশ্ন শুধু বিএনপির প্রশ্ন নয়, এটা বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের প্রশ্ন। এ প্রশ্ন মানুষ করেছে ৭ জানুয়ারি ভোট বর্জন করার মাধ্যমে। জনগণ শুধু যে ভোটই বর্জন করেছে বিষটা এমন নয়, তারা এ বাকশালী আওয়ামী লীগকেও বর্জন করেছে। সরকারি একটি গৃহপালিত বিরোধী দল রেখেছে। আমরা দেখেছি তারা ১১টি আসনে জয় পেয়েছে। এ সরকারকে নিজেদের ক্ষমতার মাধ্যমে কুক্ষিগত করে নিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, নিতাই রায় চৌধুরী, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, জয়নুল আবেদীন, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, স্বনির্ভর বিষয়ক শিরিন সুলতানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবেদ রাজা, চেয়ারপারসনের প্রেস উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলন শেষে নির্বাচনের দিন ঘটে যাওয়া বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্যচিত্র প্রচার করা হয় দলের পক্ষ থেকে।

আবহাওয়া

সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি তরুণীর পা বিচ্ছিন্ন

নির্বাচনের ফল নির্ধারিত হয়েছে উচ্চ পর্যায়ের টেবিল থেকে : মঈন খান

প্রকাশের সময় : ০৮:৩৮:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

গত ৭ জানুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদকে সরকার কুক্ষিগত করে নিয়েছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, ৭ জানুয়ারি কোনো নির্বাচন হয়নি। ভোটের ফলাফল সব নির্ধারিত হয়েছে ঢাকার একটি উচ্চ পর্যায়ের টেবিল থেকে। কে কত ভোট পাবে, কে কে নির্বাচিত হবে।

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে ‘৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত প্রহসনের নির্বাচনের বিষয়ে’ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, গত তিন দিনে আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে শুধুমাত্র একটি কথা বলা হচ্ছে, তা হলো ‘এ নির্বাচন একটা ভুয়া এবং প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে’। মিডিয়ার পাশাপাশি সারাবিশ্বে যে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো রয়েছে, এখানে আমেরিকা বা যুক্তরাষ্ট্রই বলেন বা জাতিসংঘই বলেন তাদের প্রত্যেকটি বিবৃতি আপনারা পাঠ করুন সেখানে কি বলেছে। আমি একটি উদাহরণ দিয়ে বলছি আমেরিকার মতো রাষ্ট্র বলেছে এ নির্বাচন কোনোভাবেই অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। এ কথাটিই আমরা জাতীয়তাবাদী দল গত ১৫ মাস ধরে বলে আসছি।

মঈন খান বলেন, বিএনপির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশ জনগণ এবং আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে এটা প্রমাণ করা যে, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। এ নির্বাচনের মাধ্যমে সেটির প্রমাণ হয়ে গেছে। সরকার যেটাতে বিশ্বাস করে সেটা হচ্ছে একদলীয় বাকশালীয় কায়দায় শাসন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম টাইমস ম্যাগাজিন বাংলাদেশ সরকারকে নাম দিয়েছে ‘বাকশাল- টু’।

বিএনপি সরকারের নির্বাচনের নানা কর্মকাণ্ডের ২৫০টি ঘটনার ওপর প্রমাণসহ একটি বই বের করেছি উল্লেখ করে মঈন খান বলেন, একসঙ্গে ভিডিও ক্লিপও রয়েছে। এ ধরনের আরেকটি ভলিয়ম আমরা অল্প কিছুদিনের মধ্যে জনগণের সামনে আবার উপস্থাপন করব। সবচেয়ে লজ্জা এবং দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এতদিন সরকার ভোট চুরি গোপনে করলেও এ নির্বাচনে সরকার ভোট ডাকাতি করেছে প্রকাশ্যে, ওপেনে। তারা দিনের আলোতে প্রকাশ্যে আলোচনা করেছে, সিট ভাগাভাগি করেছে যে, কে কোন আসন পাবে।

মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন করতে পারবে না। বিশ্ববাসীর কাছে আমরা এতদিন যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছি তা সত্য হচ্ছে। এটা প্রমাণ হয়ে গেছে যে এভাবে একটি ভুয়া নির্বাচনের আবহ সৃষ্টি করে, বিদেশি ক্ষমতা দিয়ে কোনো ধরনের গণতন্ত্র হতে পারে না তা আজকে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে মঈন খান অভিযোগ করেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিস সরকার বেদখল করে নিয়েছিল ২৮ অক্টোবর ক্র্যাকডাউন করে।’

বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র নেই দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র আজ মৃত। আমরা গণতন্ত্রের জন্য লাখ লাখ মানুষ নিজেদের রক্ত দিয়েছিল। এ অবস্থার জন্য নয়। সরকার বিশ্বাস করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থায়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, এ দেশের মানুষ ৭ জানুয়ারি নির্বাচন বর্জন করে সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া বলেছে এ নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে, সুষ্ঠু হয়নি। অনেক সংস্থা বলেছে, নির্বাচনে সুষ্ঠু ও লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি করে হয়নি। সাজানো নাটক করে নির্বাচনের আবহ তৈরি করেছে- তা বিশ্বে প্রমাণিত হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আছি, থাকবো। ক্ষমতার জন্য নয়, জনগণের জন্য রাজনীতি করি। একটা ভোটের পরিবেশ আমরা সৃষ্টি করবো, ইনশাআল্লাহ।

এ সময় মঈন খান আরও বলেন, নির্বাচনের অনিয়মের ২৫০ ঘটনা নিয়ে আমাদের ডকুমেন্ট তৈরি হয়েছে। এগুলো যথেষ্ট নয়, আরও আড়াইশ অনিয়মের ঘটনা নিয়ে ডকুমেন্ট তৈরি হচ্ছে।

বাংলাদেশের গণতন্ত্র আজকে মৃত এমন মন্তব্য করে মঈন খান বলেন, লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের বুকের রক্ত ঢেলে দিয়ে এ বাংলাদেশ তৈরি করেছিল। আজকে আওয়ামী লীগ সরকারকে আমরা প্রশ্ন করতে চাই, আওয়ামী লীগ নিজেদের মুক্তিযোদ্ধার পক্ষের শক্তি বলে দাবি করে তাহলে কেন তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। এ প্রশ্ন শুধু বিএনপির প্রশ্ন নয়, এটা বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের প্রশ্ন। এ প্রশ্ন মানুষ করেছে ৭ জানুয়ারি ভোট বর্জন করার মাধ্যমে। জনগণ শুধু যে ভোটই বর্জন করেছে বিষটা এমন নয়, তারা এ বাকশালী আওয়ামী লীগকেও বর্জন করেছে। সরকারি একটি গৃহপালিত বিরোধী দল রেখেছে। আমরা দেখেছি তারা ১১টি আসনে জয় পেয়েছে। এ সরকারকে নিজেদের ক্ষমতার মাধ্যমে কুক্ষিগত করে নিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান, নিতাই রায় চৌধুরী, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, জয়নুল আবেদীন, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, স্বনির্ভর বিষয়ক শিরিন সুলতানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবেদ রাজা, চেয়ারপারসনের প্রেস উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলন শেষে নির্বাচনের দিন ঘটে যাওয়া বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্যচিত্র প্রচার করা হয় দলের পক্ষ থেকে।