সাভার উপজেলা প্রতিনিধি :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাভারে পরাজিত আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা. এনামুর রহমানের সমর্থক ও ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের প্রায় ১১ জন আহত হয়েছেন। আহতের ঘটনায় উভয় পক্ষের চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত চারজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে রাতে উভয় পক্ষ পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে।
আহতদের উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আহতরা হলেন- তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদের সমর্থক মো. হৃদয়, পান্না ও সাগর। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকা প্রতীকের পরাজিত প্রার্থী ডা. এনামুর রহমানের সমর্থক ইকবাল হোসেন সম্পদ, সিফাত, সায়মন, সাগর ও সাভার পৌর আওয়ামী লীগের ৬নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন। বাকিদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদের সমর্থক, সাভার পৌর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল হালিম ও মো. ফারুক হোসেন এবং ডা. এনামুর রহমানের সমর্থক মো. সাঈম ও সম্পদ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৭ জানুয়ারি কাতলাপুর কেন্দ্রের ফলাফলে কিছু ভোটে এগিয়ে যায় স্বতন্ত্র প্রার্থী তালুকদার মো. তৌহিদ জং মুরাদ। এতে করে ওই কেন্দ্রের ঈগল প্রতীকের সমর্থকরা চড়াও হয় নৌকার সমর্থকদের ওপর। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে থানায় খবর দিলে উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাসেলের ওপর মীমাংসার দায়িত্ব পড়ে। পরে এসআই রাসেল স্থানীয় হালিমের ওপর মীমাংসার দায়িত্ব দিলে গতকাল বুধবার হালিমের অফিসে যান উভয় পক্ষের সমর্থকরা। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঈগলের সমর্থকরা হামলা চালায়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১১ জন আহত হন। আহতরা বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা জানান, রাত ৯টার দিকে নির্বাচনের সময় নৌকার সমর্থক রকি, টিপু, বাবু, পলাশসহ ২০-৩০ জন আবদুল হালিমের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হন। প্রথমে তাঁরা প্রতিষ্ঠানের এক পাশে বসে থাকা আবদুল হালিমের ছেলে রবিউল আওয়াল হৃদয়ের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। পরে বাঁশ ও লাঠি দিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করেন তাঁরা। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১১ জন আহত হন। পরে আহতদের উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
নৌকার সমর্থক সাভার পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘ভোটের ফলাফলে ঈগলের প্রার্থী আমাদের কেন্দ্রে কিছু ভোট বেশি পায়। পরে তারা নৌকার সমর্থকদের মারধর করে। ওই ঘটনায় রাতে মীমাংসা জন্য বসার কথা ছিল। আমরা ৮-১০ জন হালিম সাহেবের ওইখানে গেলে তার ছেলে আইসা আমাদের মারধর করে।’
সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন বলেন, উভয় পক্ষই লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। ইতিমধ্যে আবদুল হালিমকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া উভয় পক্ষের আরো বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।