Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর হারালেন যারা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২২ আসনে জয়লাভ করে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে আওয়ামী লীগ। নিরঙ্কুশ এই জয়ের পর নতুন সরকার গঠন করতে যাচ্ছে দলটি।

এরই মধ্যে প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেছেন রাষ্ট্রপতি। আর রাষ্ট্রপতির সম্মতি নিয়ে ৩৬ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেবে।সেখানে ঠাঁই হয়নি বর্তমান মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর।

বুধবার (১০ জানুয়ারি) রাতে সচিবালয়ে নতুন মন্ত্রিসভার তালিকা সাংবাকিদের জানিয়ে দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। এই তালিকায় স্থান পাননি বিদায়ী মন্ত্রিসভার ২৮ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী। বাদ পড়াদের মধ্যে ১৪ জন মন্ত্রী, ১২ জন প্রতিমন্ত্রী এবং ২ জন উপমন্ত্রী রয়েছেন।

যারা বাদ পড়েছেন তাদের অনেকেই নানা কর্মকাণ্ডে বিতর্কিত হয়েছেন। কেউ কেউ দক্ষতা দেখাতে না পারায় নতুন মন্ত্রিসভায় ডাক পাননি বলে জানা গেছে।

প্রধানমন্ত্রীসহ নতুন মন্ত্রিসভার আকার দাঁড়িয়েছে ৩৭ জনে। তাদের মধ্যে ২৫ জন পূর্ণ মন্ত্রী। আর ১১ জন পাচ্ছেন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব।

বুধবার (১০ জানুয়ারি) রাতে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠান হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি)। সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গভবনে শপথ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে। নতুন সরকারে কে কোন মন্ত্রণালয় পাবেন, তা জানা যাবে দফতর বণ্টনের পর। শপথ গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী দফতর বণ্টন করবেন।

নতুন মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হয়নি বর্তমান সরকারের এমন মন্ত্রীরা হলেন- কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী, মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জাব্বার (টেকনোক্রেট মন্ত্রী)।

প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে বাদ পড়েছেন যারা: পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম (টেকনোক্রেট), শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হাসান রাসেল, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান (মনোনয়ন পাননি), প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন (মনোনয়ন পাননি), পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টচার্য, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ (মনোনয়ন পাননি), দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান (নির্বাচিত হতে পারেননি), বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী (নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন), মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম ফজিলাতুন নেছা, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

অন্যদিকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীমও ডাক পাননি এবার।

২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের পরও প্রধানমন্ত্রীর পর ২৫ জন পূর্ণ মন্ত্রীর শপথ হয়। এদের মধ্যে দুইজন ছিলেন টেকনোক্র্যাট কোটায়। এবারের জাতীয় নির্বাচনের আগে পদত্যাগ করেন তারা। ফলে বুধবার মন্ত্রী হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন যে ২৩ জন, তাদের মধ্যে কেবল ৯ জন নতুন সরকারে থাকছেন।
বাদ পড়া প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে তিনজন এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। মনোনয়ন পেয়েও পরাজিত হয়েছেন তিনজন। এই ছয়জনের কেউ নেই নতুন মন্ত্রিসভায়।

বাদ পড়ার তালিকা বিশ্লেষণে দেখা যায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রীর পাশাপাশি বাদ পড়েছেন প্রতিমন্ত্রীও। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়েও একই ঘটনা ঘটেছে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পূর্ণ মন্ত্রীর পাশাপাশি বাদ পড়েছেন উপমন্ত্রীও।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২২২টিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। একাদশ সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকে পেছনে ফেলে স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ৬২ জন; যাদের মধ্যে ৫৯ জন আওয়ামী লীগেরই নেতা। আর জাতীয় পার্টির আসন অর্ধেকের বেশি কমে নেমেছে ১১টিতে। দুটিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগের শরিক দল জাসদ ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি এবং একটিতে জয় পেয়েছে কল্যাণ পার্টি। একটি আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত রয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর হারালেন যারা

প্রকাশের সময় : ১১:০১:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২২২ আসনে জয়লাভ করে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে আওয়ামী লীগ। নিরঙ্কুশ এই জয়ের পর নতুন সরকার গঠন করতে যাচ্ছে দলটি।

এরই মধ্যে প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেছেন রাষ্ট্রপতি। আর রাষ্ট্রপতির সম্মতি নিয়ে ৩৬ সদস্যের মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) নতুন মন্ত্রিসভা শপথ নেবে।সেখানে ঠাঁই হয়নি বর্তমান মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর।

বুধবার (১০ জানুয়ারি) রাতে সচিবালয়ে নতুন মন্ত্রিসভার তালিকা সাংবাকিদের জানিয়ে দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। এই তালিকায় স্থান পাননি বিদায়ী মন্ত্রিসভার ২৮ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী। বাদ পড়াদের মধ্যে ১৪ জন মন্ত্রী, ১২ জন প্রতিমন্ত্রী এবং ২ জন উপমন্ত্রী রয়েছেন।

যারা বাদ পড়েছেন তাদের অনেকেই নানা কর্মকাণ্ডে বিতর্কিত হয়েছেন। কেউ কেউ দক্ষতা দেখাতে না পারায় নতুন মন্ত্রিসভায় ডাক পাননি বলে জানা গেছে।

প্রধানমন্ত্রীসহ নতুন মন্ত্রিসভার আকার দাঁড়িয়েছে ৩৭ জনে। তাদের মধ্যে ২৫ জন পূর্ণ মন্ত্রী। আর ১১ জন পাচ্ছেন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব।

বুধবার (১০ জানুয়ারি) রাতে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।

নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠান হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি)। সন্ধ্যা ৭টায় বঙ্গভবনে শপথ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে। নতুন সরকারে কে কোন মন্ত্রণালয় পাবেন, তা জানা যাবে দফতর বণ্টনের পর। শপথ গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী দফতর বণ্টন করবেন।

নতুন মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হয়নি বর্তমান সরকারের এমন মন্ত্রীরা হলেন- কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী, মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জাব্বার (টেকনোক্রেট মন্ত্রী)।

প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে বাদ পড়েছেন যারা: পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম (টেকনোক্রেট), শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ হাসান রাসেল, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান (মনোনয়ন পাননি), প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন (মনোনয়ন পাননি), পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টচার্য, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ (মনোনয়ন পাননি), দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান (নির্বাচিত হতে পারেননি), বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী (নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন), মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম ফজিলাতুন নেছা, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

অন্যদিকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীমও ডাক পাননি এবার।

২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনের পরও প্রধানমন্ত্রীর পর ২৫ জন পূর্ণ মন্ত্রীর শপথ হয়। এদের মধ্যে দুইজন ছিলেন টেকনোক্র্যাট কোটায়। এবারের জাতীয় নির্বাচনের আগে পদত্যাগ করেন তারা। ফলে বুধবার মন্ত্রী হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন যে ২৩ জন, তাদের মধ্যে কেবল ৯ জন নতুন সরকারে থাকছেন।
বাদ পড়া প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে তিনজন এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। মনোনয়ন পেয়েও পরাজিত হয়েছেন তিনজন। এই ছয়জনের কেউ নেই নতুন মন্ত্রিসভায়।

বাদ পড়ার তালিকা বিশ্লেষণে দেখা যায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রীর পাশাপাশি বাদ পড়েছেন প্রতিমন্ত্রীও। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়েও একই ঘটনা ঘটেছে।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পূর্ণ মন্ত্রীর পাশাপাশি বাদ পড়েছেন উপমন্ত্রীও।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৯টি আসনের মধ্যে ২২২টিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। একাদশ সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকে পেছনে ফেলে স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচিত হয়েছেন ৬২ জন; যাদের মধ্যে ৫৯ জন আওয়ামী লীগেরই নেতা। আর জাতীয় পার্টির আসন অর্ধেকের বেশি কমে নেমেছে ১১টিতে। দুটিতে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগের শরিক দল জাসদ ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি এবং একটিতে জয় পেয়েছে কল্যাণ পার্টি। একটি আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত রয়েছে।