Dhaka শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দাফনের সময় কেঁদে উঠলো ‘মৃত ঘোষণা’ করা শিশু

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০৮:১১:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর ২০২০
  • ১৯৭ জন দেখেছেন

প্রতিকী ছবি

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত ঘোষণার পর শিশুটিকে দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় কবরস্থানে। দাফন করার সময় হঠাৎ কেঁদে ওঠে শিশুটি। এমতবস্থায় তাকে কবরস্থান থেকে ফিরিয়ে এনে আবার ঢাকা মেডিকেলের নবজাতক বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) সকালে রায়েরবাগ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফনের সময় জীবিত হয় নবজাতকটি।

নবাজাতকের বাবা ইয়াছিন জানান, ৬ মাস ১৬ দিনের অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী শাহিনুর বেগমকে গত বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ভর্তি করেন। সে পেশায় বাস চালক। ঢাকা মেডিকেলের ২১২ নাম্বার ওয়ার্ডে ভর্তি করার পর সেখানকার চিকিৎসকরা তার স্ত্রীকে দেখেন এবং জানান তার প্রেশার অনেক হাই। বাচ্চাটি ডেলিভারি না করালে তার প্রেশার কমবে না।

ইয়াছিন আরও জানান, চিকিৎসকদের কথায় সম্মতি দেওয়ার পর বুধবার রাতেই তাকে লেবার রুমে নিয়ে নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করা হয়। ডেলিভারি না হওয়ায় তাকে ১১০ নম্বর ওয়ার্ডে রাখা হয়। সেখানে দু’দিন চেষ্টার পর আজ শুক্রবার ভোরে তার আবার ব্যথা শুরু হয়।

শুক্রবার ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে শাহিনুরের এক মেয়ে বাচ্চা হয়। কিছুক্ষণ পর চিকিৎসকরা জানান, বাচ্চাটি মৃত অবস্থায় হয়েছে। এরপর হাসপাতালের আয়া মৃত বাচ্চাটিকে প্যাকেট করে বেডের নিচে রেখে দেয় এবং কোথাও নিয়ে দাফন করার জন্য বলে।

আরও পড়ুন : চার মাসে দুই হাজার শিশুর মৃত্যু পানিতে ডুবে

ইয়াছিন জানায়, সকাল ৮টার দিকে তিনি মৃত নবজাতকটিকে আজিমপুর কবরস্থানে নিয়ে যান। সেখানে ১ হাজার ৫০০ টাকা সরকারি ফি চায়। দিতে না পারায় তাদের পরামর্শে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে নিয়ে যায়। সেখানে ৫০০ টাকা ফি ও কিছু বকশিস দেওয়ার পর মৃত নবজাতকটির জন্য কবর খোঁড়া শুরু হয়। কবর খোঁড়ার শেষ পর্যায়ে তখন কান্নাকাটি শব্দ শুনতে পান।

তিনি ও অন্য লোকজন আশপাশে কোথাও কিছু না পেয়ে পরে নবজাতকটির দিকে খেয়াল করেন। এরপর প্যাকেট খুলে দেখেন বাচ্চাটি নড়াচড়া করছে ও কান্নাকাটি করছে। এরপরই তাকে দ্রুত আবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে এবং তাকে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে। পরে নবজাতক বিভাগে ভর্তি করেন।

ইয়াছিন বলেন, এটি তার দ্বিতীয় বাচ্চা। এর আগে তার দশ বছরের ইসরাত জাহান নামে আরেকটি মেয়ে রয়েছে। তাদের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মালঙ্গা গ্রামে। তুরাগ ধউর নিসাতনগর এলাকায় থাকেন তারা। তার স্ত্রী গৃহিণী ও তিনি বিআরটিসি বাস চালক।
চিকিৎসকদের এমন ভুল সিদ্ধান্ত ও পরামর্শের তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

হাসপাতালটির গাইনি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নিলুফা সুলতানা বলেন, আমি ২ দিনের ছুটিতে আছি। নবজাতকটির বিষয়ে হাসপাতাল পরিচালক আমাকে জানিয়েছেন। আমি আমার বিভাগের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জকে নবজাতকটি বিষয়ে জানিয়েছি। তারা সব কিছু দেখছেন।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, নবজাতকটি জীবিত আছেন, ভালো আছেন, তাকে নবজাতক ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হয়েছে। নবজাতক শিশুটি অপরিপক্ব হয়ে জন্ম নিয়েছে। শিশুটির মায়ের একলামশিয়া ছিল। যে চিকিৎসক দায়িত্বে ছিল তার কোনো গাফিলতি ছিল কিনা। আমরা সেটা দেখবো। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

দাফনের সময় কেঁদে উঠলো ‘মৃত ঘোষণা’ করা শিশু

প্রকাশের সময় : ০৮:১১:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর ২০২০

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত ঘোষণার পর শিশুটিকে দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় কবরস্থানে। দাফন করার সময় হঠাৎ কেঁদে ওঠে শিশুটি। এমতবস্থায় তাকে কবরস্থান থেকে ফিরিয়ে এনে আবার ঢাকা মেডিকেলের নবজাতক বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) সকালে রায়েরবাগ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফনের সময় জীবিত হয় নবজাতকটি।

নবাজাতকের বাবা ইয়াছিন জানান, ৬ মাস ১৬ দিনের অন্তঃস্বত্ত্বা স্ত্রী শাহিনুর বেগমকে গত বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ভর্তি করেন। সে পেশায় বাস চালক। ঢাকা মেডিকেলের ২১২ নাম্বার ওয়ার্ডে ভর্তি করার পর সেখানকার চিকিৎসকরা তার স্ত্রীকে দেখেন এবং জানান তার প্রেশার অনেক হাই। বাচ্চাটি ডেলিভারি না করালে তার প্রেশার কমবে না।

ইয়াছিন আরও জানান, চিকিৎসকদের কথায় সম্মতি দেওয়ার পর বুধবার রাতেই তাকে লেবার রুমে নিয়ে নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করা হয়। ডেলিভারি না হওয়ায় তাকে ১১০ নম্বর ওয়ার্ডে রাখা হয়। সেখানে দু’দিন চেষ্টার পর আজ শুক্রবার ভোরে তার আবার ব্যথা শুরু হয়।

শুক্রবার ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে শাহিনুরের এক মেয়ে বাচ্চা হয়। কিছুক্ষণ পর চিকিৎসকরা জানান, বাচ্চাটি মৃত অবস্থায় হয়েছে। এরপর হাসপাতালের আয়া মৃত বাচ্চাটিকে প্যাকেট করে বেডের নিচে রেখে দেয় এবং কোথাও নিয়ে দাফন করার জন্য বলে।

আরও পড়ুন : চার মাসে দুই হাজার শিশুর মৃত্যু পানিতে ডুবে

ইয়াছিন জানায়, সকাল ৮টার দিকে তিনি মৃত নবজাতকটিকে আজিমপুর কবরস্থানে নিয়ে যান। সেখানে ১ হাজার ৫০০ টাকা সরকারি ফি চায়। দিতে না পারায় তাদের পরামর্শে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে নিয়ে যায়। সেখানে ৫০০ টাকা ফি ও কিছু বকশিস দেওয়ার পর মৃত নবজাতকটির জন্য কবর খোঁড়া শুরু হয়। কবর খোঁড়ার শেষ পর্যায়ে তখন কান্নাকাটি শব্দ শুনতে পান।

তিনি ও অন্য লোকজন আশপাশে কোথাও কিছু না পেয়ে পরে নবজাতকটির দিকে খেয়াল করেন। এরপর প্যাকেট খুলে দেখেন বাচ্চাটি নড়াচড়া করছে ও কান্নাকাটি করছে। এরপরই তাকে দ্রুত আবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে এবং তাকে চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে। পরে নবজাতক বিভাগে ভর্তি করেন।

ইয়াছিন বলেন, এটি তার দ্বিতীয় বাচ্চা। এর আগে তার দশ বছরের ইসরাত জাহান নামে আরেকটি মেয়ে রয়েছে। তাদের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মালঙ্গা গ্রামে। তুরাগ ধউর নিসাতনগর এলাকায় থাকেন তারা। তার স্ত্রী গৃহিণী ও তিনি বিআরটিসি বাস চালক।
চিকিৎসকদের এমন ভুল সিদ্ধান্ত ও পরামর্শের তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

হাসপাতালটির গাইনি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নিলুফা সুলতানা বলেন, আমি ২ দিনের ছুটিতে আছি। নবজাতকটির বিষয়ে হাসপাতাল পরিচালক আমাকে জানিয়েছেন। আমি আমার বিভাগের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জকে নবজাতকটি বিষয়ে জানিয়েছি। তারা সব কিছু দেখছেন।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, নবজাতকটি জীবিত আছেন, ভালো আছেন, তাকে নবজাতক ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হয়েছে। নবজাতক শিশুটি অপরিপক্ব হয়ে জন্ম নিয়েছে। শিশুটির মায়ের একলামশিয়া ছিল। যে চিকিৎসক দায়িত্বে ছিল তার কোনো গাফিলতি ছিল কিনা। আমরা সেটা দেখবো। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।