Dhaka মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫, ২১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ এই সরকারকে বর্জন করেছে : মঈন খান

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। তিনি বলেন, আন্দোলন হবে শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ এই সরকারকে বর্জন করেছে। গতকাল জনগণ শুধু ভোট বর্জনই করেনি, তারা আওয়ামী লীগের বিদ্যমান কর্মকাণ্ডকে বর্জন করেছে। জনগণ যে ভোট বর্জন করেছে, এটাই তার প্রমাণ। বিএনপি জনগণের দল এবং জনগণের শক্তিকে বিশ্বাস করে।

সোমবার (৮ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দলের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। গত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার দীর্ঘ দুই মাস ১০ দিন পর প্রথমবারের মতো খুলেছে এই কার্যালয়।

তিনি বলেন, বিএনপি একটি উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক দল। আমরা লগি-বৈঠার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমরা অন্যায়ভাবে কারও গায়ে হাত দেই না। আমরা শান্তিপূর্ণ রাজনীতিতে বিশ্বাসী।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বিভিন্ন মিডিয়াতে দেখেছেন ভোটের কেন্দ্রের সামনে কৃত্রিম লাইন তৈরি করা হয়েছে। স্কুল ছাত্র, এমনকি শিশুরাও লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে এসব আমরা দেখতে পেরেছি। সুতারাং এদেশের মানুষ বিশ্বাস করে বর্তমান একদলীয় বাকশালি সরকারের অধিনে কোন ভাবেই সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না। এখানে যেটা হয়েছে সেটা হচ্ছে, ভোট ডাকাতি আর ভোট জালিয়াতি।

নির্বাচন নিয়ে দলের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেছেন, জনগণ গতকাল ভোট বর্জন করে এই বার্তা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, বর্তমান সরকার, বর্তমান নির্বাচন কমিশন এবং সর্ব শেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সব কিছুই হচ্ছে ভুয়া।

বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, বিভিন্ন আসনের ১৯৬টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৯টি কেন্দ্রে একটিও ভোট পড়েনি। বাংলাদেশে যেখানে নির্বাচনের দিন ভোট প্রদান একটি রাজনৈতিক উৎসবে পরিণত হয়। সেখানে ১৯টি কেন্দ্রে একটি ভোট পড়েনি। এটা প্রমাণ করে ক্ষমতাসীন সরকার এবং নির্বাচন কমিশন প্রহসনের যে নাটক করেছে গতকাল-সেটি ছিল একটি প্রহসনের নির্বাচন। একটি ভুয়া নির্বাচন। শুধুমাত্র এই নির্দিষ্ট ১৯টি কেন্দ্রেই নয়, বাংলাদেশে প্রায় প্রতিটি আসনেই এমন অনেক কেন্দ্রেই রয়েছে-যেখানে একটিও ভোট পড়েনি। কিংবা সারাদিন হয়তো ১০-২০টি ভোট পড়েছে।

তিনি আরও বলেন, সরকার ভোটারদের উপস্থিতি বাড়াতে বিভিন্ন রকমের অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। আওয়ামী লীগ নজিরবিহীনভাবে নিজেরাই নিজেদের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ডামি প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে এবং নিজেদের মধ্যে কৃত্রিম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করেও ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনতে পারিনি। সর্বোপরি আওয়ামী লীগের একচেটিয়া ভোট বর্জন করেছে জনগণ।

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ খুঁজে বের করা জন্য গঠিত সার্চ কমিটির নামে রিসার্চ কমিটি গঠন করে একটা নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সরকার গঠন করেছিল।

মঈন খান বলেন, জনগণ বিশ্বাস করে একদলীয় বাকশালী সরকারের অধীনে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। এখানে যেটা হচ্ছে, সেটা ভোট ডাকাতি আর ভোট নিয়ন্ত্রণ। এ নির্বাচনে কোন প্রার্থী বিজয়ী আর পরাজিত সেটা ছিল পূর্বনির্ধারিত। ১৪, ১৮ ও ২৪ সালে নির্বাচনে সরকার এ দেশের মানুষের যে ভোটাধিকার সেই ক্রমপর্যায়ে ছিনিয়ে নিয়েছে। মানুষ নির্বাচনে আস্থা হারিয়ে ফেলেছ।

তিনি আরো বলেন, এখানে আওয়ামী লীগ খুঁজে বের করা জন্য গঠিত সার্চ কমিটির নামে রিসার্চ কমিটি গঠন করে একটা নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সরকার গঠন করেছিল। নির্বাচন কমিশন একবার বলে ২৭ শতাংশ আর একবার বলে ৪০ শতাংশ, চার ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচন কমিশন কিভাবে এ হিসাব করে সেটা বোধগম্য নয়। এটা স্পষ্ট যে, ভোট যত শতাংশ পড়ুক না কেন, নির্বাচন কমিশনকে শিখিয়ে দেয়া হয়েছে এত শতাংশ বলতে হবে। তারা হয়তো সেটাই বলছে।

মঈন খান বলেন, গতকাল এই পাতানো নির্বাচন মাধ্যমে আওয়ামী লীগের শোচনীয় নৈতিক পরাজয় হয়েছে। যে কংগ্রেসমান নারী নির্যাতনের দায়ে বহিষ্কৃত হয়েছেন তাকে এই বর্জনের নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হিসেবে এনেছে আওয়ামী লীগ সরকার।

তিনি বলেন, নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করায় দেশের জনগণকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপি আগামীকাল থেকে এই সরকারের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনে অংশগ্রহণে গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করবে। যতদিন অন্য কোনো কর্মসূচি না আসছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ডামি নির্বাচনে ডামি প্রার্থীদের কাউকে ক্রেন দিয়ে তোলা হয়েছে আবার কাউকে ক্রেন দিয়ে তোলা হয়নি। ডামি নির্বাচন ডামি প্রার্থীকে হয়তো টেনে তুলেছে, হয়তো কাউকে তোলেনি। বিশ্বের কোনো দেশে স্বতন্ত্র প্রার্থী এভাবে জিতে! এবার তো প্রায় ২০ শতাংশের বেশি দেখলাম। এটা কোনো নির্বাচন নয়। নির্বাচন নিয়ে এ ধরনের রসিকতা করার কারো অধিকার নেই।

সংবাদ সম্মেলন আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ছাড়াও সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।

আবহাওয়া

২৪ ঘণ্টায় আ.লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ১১ নেতাকর্মী গ্রেফতার

বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ এই সরকারকে বর্জন করেছে : মঈন খান

প্রকাশের সময় : ০১:২৭:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। তিনি বলেন, আন্দোলন হবে শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ এই সরকারকে বর্জন করেছে। গতকাল জনগণ শুধু ভোট বর্জনই করেনি, তারা আওয়ামী লীগের বিদ্যমান কর্মকাণ্ডকে বর্জন করেছে। জনগণ যে ভোট বর্জন করেছে, এটাই তার প্রমাণ। বিএনপি জনগণের দল এবং জনগণের শক্তিকে বিশ্বাস করে।

সোমবার (৮ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে দলের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। গত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার দীর্ঘ দুই মাস ১০ দিন পর প্রথমবারের মতো খুলেছে এই কার্যালয়।

তিনি বলেন, বিএনপি একটি উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক দল। আমরা লগি-বৈঠার রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। আমরা অন্যায়ভাবে কারও গায়ে হাত দেই না। আমরা শান্তিপূর্ণ রাজনীতিতে বিশ্বাসী।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বিভিন্ন মিডিয়াতে দেখেছেন ভোটের কেন্দ্রের সামনে কৃত্রিম লাইন তৈরি করা হয়েছে। স্কুল ছাত্র, এমনকি শিশুরাও লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে এসব আমরা দেখতে পেরেছি। সুতারাং এদেশের মানুষ বিশ্বাস করে বর্তমান একদলীয় বাকশালি সরকারের অধিনে কোন ভাবেই সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না। এখানে যেটা হয়েছে সেটা হচ্ছে, ভোট ডাকাতি আর ভোট জালিয়াতি।

নির্বাচন নিয়ে দলের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেছেন, জনগণ গতকাল ভোট বর্জন করে এই বার্তা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, বর্তমান সরকার, বর্তমান নির্বাচন কমিশন এবং সর্ব শেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সব কিছুই হচ্ছে ভুয়া।

বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, বিভিন্ন আসনের ১৯৬টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৯টি কেন্দ্রে একটিও ভোট পড়েনি। বাংলাদেশে যেখানে নির্বাচনের দিন ভোট প্রদান একটি রাজনৈতিক উৎসবে পরিণত হয়। সেখানে ১৯টি কেন্দ্রে একটি ভোট পড়েনি। এটা প্রমাণ করে ক্ষমতাসীন সরকার এবং নির্বাচন কমিশন প্রহসনের যে নাটক করেছে গতকাল-সেটি ছিল একটি প্রহসনের নির্বাচন। একটি ভুয়া নির্বাচন। শুধুমাত্র এই নির্দিষ্ট ১৯টি কেন্দ্রেই নয়, বাংলাদেশে প্রায় প্রতিটি আসনেই এমন অনেক কেন্দ্রেই রয়েছে-যেখানে একটিও ভোট পড়েনি। কিংবা সারাদিন হয়তো ১০-২০টি ভোট পড়েছে।

তিনি আরও বলেন, সরকার ভোটারদের উপস্থিতি বাড়াতে বিভিন্ন রকমের অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। আওয়ামী লীগ নজিরবিহীনভাবে নিজেরাই নিজেদের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ডামি প্রার্থী দাঁড় করিয়েছে এবং নিজেদের মধ্যে কৃত্রিম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করেও ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনতে পারিনি। সর্বোপরি আওয়ামী লীগের একচেটিয়া ভোট বর্জন করেছে জনগণ।

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ খুঁজে বের করা জন্য গঠিত সার্চ কমিটির নামে রিসার্চ কমিটি গঠন করে একটা নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সরকার গঠন করেছিল।

মঈন খান বলেন, জনগণ বিশ্বাস করে একদলীয় বাকশালী সরকারের অধীনে কোনোভাবেই সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। এখানে যেটা হচ্ছে, সেটা ভোট ডাকাতি আর ভোট নিয়ন্ত্রণ। এ নির্বাচনে কোন প্রার্থী বিজয়ী আর পরাজিত সেটা ছিল পূর্বনির্ধারিত। ১৪, ১৮ ও ২৪ সালে নির্বাচনে সরকার এ দেশের মানুষের যে ভোটাধিকার সেই ক্রমপর্যায়ে ছিনিয়ে নিয়েছে। মানুষ নির্বাচনে আস্থা হারিয়ে ফেলেছ।

তিনি আরো বলেন, এখানে আওয়ামী লীগ খুঁজে বের করা জন্য গঠিত সার্চ কমিটির নামে রিসার্চ কমিটি গঠন করে একটা নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সরকার গঠন করেছিল। নির্বাচন কমিশন একবার বলে ২৭ শতাংশ আর একবার বলে ৪০ শতাংশ, চার ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচন কমিশন কিভাবে এ হিসাব করে সেটা বোধগম্য নয়। এটা স্পষ্ট যে, ভোট যত শতাংশ পড়ুক না কেন, নির্বাচন কমিশনকে শিখিয়ে দেয়া হয়েছে এত শতাংশ বলতে হবে। তারা হয়তো সেটাই বলছে।

মঈন খান বলেন, গতকাল এই পাতানো নির্বাচন মাধ্যমে আওয়ামী লীগের শোচনীয় নৈতিক পরাজয় হয়েছে। যে কংগ্রেসমান নারী নির্যাতনের দায়ে বহিষ্কৃত হয়েছেন তাকে এই বর্জনের নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হিসেবে এনেছে আওয়ামী লীগ সরকার।

তিনি বলেন, নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করায় দেশের জনগণকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানিয়ে বিএনপি আগামীকাল থেকে এই সরকারের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনে অংশগ্রহণে গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করবে। যতদিন অন্য কোনো কর্মসূচি না আসছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ডামি নির্বাচনে ডামি প্রার্থীদের কাউকে ক্রেন দিয়ে তোলা হয়েছে আবার কাউকে ক্রেন দিয়ে তোলা হয়নি। ডামি নির্বাচন ডামি প্রার্থীকে হয়তো টেনে তুলেছে, হয়তো কাউকে তোলেনি। বিশ্বের কোনো দেশে স্বতন্ত্র প্রার্থী এভাবে জিতে! এবার তো প্রায় ২০ শতাংশের বেশি দেখলাম। এটা কোনো নির্বাচন নয়। নির্বাচন নিয়ে এ ধরনের রসিকতা করার কারো অধিকার নেই।

সংবাদ সম্মেলন আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ছাড়াও সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।