নিজস্ব প্রতিবেদক :
নির্বাচন করব কি, করব না তা আজকের মধ্যে পরিষ্কার হওয়া দরকার। পার্টির চেয়ারম্যান সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন, নির্বাচন করব কি-না বিকেলের মধ্যে জানাতে পারব বলে জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
রোববার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর ১টায় বনানীর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, নির্বাচন করব নাকি করব না সেটা আজকের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। আজকে বিকেলে এ বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত জানাব। ৭ জানুয়ারির নির্বাচন করার জন্য আমরা আসছি। আমরা নির্বাচনী পরিবেশ পরিস্থিতির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আজ এবং আগামীকাল এই দুইদিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজকে হলো প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন এবং আগামীকাল প্রতীক বরাদ্দের দিন। তাই নির্বাচনটা আমরা কীভাবে করব নাকি করব না তা আজকের মধ্যে পরিষ্কার হওয়া দরকার। আমাদের চেয়ারম্যান পার্টি অফিসে আছেন। আমাদের অনেক সিনিয়র নেতা বাইরে রয়েছেন তাদের সঙ্গে ফোনে কথা হচ্ছে। আমরা একটি ভালো পরিবেশের অপেক্ষা করছিলাম। আমরা যাই করি আজকে বিকেলের মধ্যে জানাব এবং জিএম কাদেরের নেতৃত্বে করব।
বিকেল ৪টার মধ্যে সরকারি দলের পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক খবর আসবে এই জন্য কোনো কৌশল অবলম্বন করেছে কি না, জাতীয় পার্টি যে বিকেলে তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের আনুষ্ঠানিক ও অ-আনুষ্ঠানিক আলোচনা চলছে। নির্বাচন কেন্দ্রিক নানা বিষয়ে আমাদের আলোচনা চলছে। তবে বিকেল চারটা কিংবা পাঁচটায় এই ধরনের কোন বিষয় না। এখন আমরা আমাদের দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছি। সেজন্য আমরা আজকে কিছুটা সময় নিচ্ছি। এটা আমাদের নিজেদের প্রয়োজনে সময় নিচ্ছি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন ‘নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন জাতীয় পার্টিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তবে জাতীয় পার্টি এর থেকে বেশি চেয়েছে’ এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে জাতীয় পার্টি মহাসচিব বলেন, চাওয়া পাওয়ার কথা উনি বলেছেন এই বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। চাওয়া তো সব সময় বেশি থাকে। তবে আমরা আসন চেয়েছি কি— না চেয়ে চেয়েছি এ বিষয়ে উত্তর দেওয়ার সুযোগ এখন আমার নেই। তবে আমরা যাই করি না কেন আমরা আমাদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একসঙ্গে কাজ করি।
এরপর আসন সংযত নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বিষয়টি এড়িয়ে যান জাতীয় পার্টির মহাসচিব।
নানা নাটকীয়তার মধ্যদিয়ে নির্বাচনে আসা জাতীয় পার্টি ২৯৪ আসনে দলীয় মনোনয়ন দেয়। দলীয় টিকিট পেলেও ৬ জন প্রার্থী শেষ পর্যন্ত মনোনয়নপত্র দাখিল থেকে বিরত রয়েছেন। নির্বাচন কমিশন বাছাই শেষে ২৭২ আসনে জাপার প্রার্থীদের বৈধ ঘোষণা করেছে। আপিল শেষে ২৮৩ আসনে প্রার্থী রয়েছে জাপার।
অন্যদিকে, ছেলে সাদ এরশাদের আসন নিয়ে টান দেওয়া এবং অনুসারীদের মনোনয়ন নিশ্চিত না হওয়ায় ২৯ নভেম্বর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান রওশন এরশাদ।
আসন সমঝোতা নিয়ে কয়েকদিন ধরেই দর-কষাকষি চলছিল। দফায় দফায় বৈঠকও চলে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাদের মধ্যে। জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে ৭০ আসনের তালিকা দিলেও আওয়ামী লীগ প্রায় ৩০টি আসন নিয়ে দর-কষাকষি চলছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। তবে সিনিয়র নেতাদের আসন নিয়ে জটিলতার খবর রটে গেছে। জাপার ছাড় দেওয়া আসনে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সরিয়ে নেওয়ার শর্ত দিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের বক্তব্য হচ্ছে স্বতন্ত্রের বিষয়ে তাদের কিছু করার নেই।