আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে মেট্রোরেলের দরজায় শাড়ি আটকে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) ৩৫ বছর বয়সী ওই নারীকে প্রায় ২৫ মিটার টেনে নিয়ে যায় ট্রেনটি। এ সময় ট্র্যাক অ্যাক্সেস গেটের সঙ্গে তার মাথা সজোরে ধাক্কা লাগে। দুইদিন পর শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) চিকিৎসাধীন অবস্থায় গুরুত্বর আহত ওই নারীর মৃত্যু হয়। ঘটনার সময় অনেকে ট্রেনটিকে পতাকা দেখিয়ে থামাতে চাইলেও ব্যর্থ হয়।
সবজি বিক্রেতা রীনা পশ্চিম দিল্লির নাংলোইয়ের বাসিন্দা। তার ১১ বছরের একটি ছেলে এবং ১৩ বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। স্বামী কয়েক বছর আগে মস্তিষ্কের টিউমারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি ইন্দ্রলোক মেট্রো স্টেশনে মেট্রোরেলের একটি বগিতে ছেলেসহ ওঠার চেষ্টা করছিলেন। ওইসময় তারা একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন।
এসময় তার শাড়ি মেট্রোর দরজায় আটকে যায় এবং তিনি ট্রেনটিতে ওঠতে পারেনি। এরপরে, ট্রেনটি চলতে শুরু করে এবং ওই নারীকে টেনে হিঁচড়ে প্রায় ২৫ মিটার নিয়ে যায়। তিনি প্ল্যাটফর্ম ট্র্যাক অ্যাক্সেস গেটের সঙ্গে সজোরে আঘাত পেয়ে ছিটকে পড়েন। তিনি মাথায় এবং পিঠে গুরুতর আঘাত পান। ওই নারীর ছেলে প্লাটফর্মেই ছিল।
দিল্লি মেট্রোর ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, মেট্রো ট্রেনগুলোর দরজায় সেন্সর থাকে, যা কোনোকিছুতে বাধাপ্রাপ্ত হলে দরজা স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে যায়। দরজার সেন্সরগুলোতে ২৫ মিলিমিটারের বেশি পুরু কাপড় শনাক্ত হয়ে থাকে। ওই নারীর শাড়িটি পাতলা ছিল। যার ফলে সেটি সেন্সরে ধরা পড়েনি।
ঘটনার পর ওই নারীকে দিল্লি মেট্রোরেল করপোরেশন এবং সিআইএসএফের কর্মকর্তারা দীপচাঁদ বন্ধু হাসপাতালে নিয়ে যান। তার পরিবারের সদস্যরা পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লোকনায়ক হাসপাতালে নিয়ে যান। সিআইএসএফের কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রীনাকে আরএমএল হাসপাতালে এবং তারপর সাফদরজং হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে শনিবার তার মৃত্যু হয়। রোববার (১৭ ডিসেম্বর) তার ময়নাতদন্ত করা হবে।
এর আগে গত ২১ অক্টোবর ভারতের মুম্বাইয়ে মেট্রোরেলে ওঠার চেষ্টা করছিলেন এক নারী। তিনি ওঠার আগেই ট্রেনের দরজা বন্ধ হয়ে তার জামা আটকে যায়। চলন্ত ট্রেনটি তাকে টেনে টেনে একেবারে প্ল্যাটফর্মের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়। গুরুতর আহত ওই নারী সম্প্রতি সুস্থ হয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করার পরই ওই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, ওই নারী যাত্রী মেট্রোকোচে ওঠার চেষ্টা করার সময় কোচের দরজা বন্ধ হয়ে তার জামা আটকে যায়। তিনি বাইরেই থেকে যান। মেট্রোরেলটিও চলতে শুরু করে। তবে ওই নারী শুরুতে নিজেকে ছাড়িয়ে নিতে চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হন। পরে ট্রেনটি তাকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যায়।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক 

























