Dhaka রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মারুফ মৃধার বিধ্বংসী বোলিংয়ে ভারতকে উড়িয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৩৮:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ২০৩ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে হারিয়ে যুব এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। পেসার মারুফ মৃধার বিধ্বংসী বোলিংয়ের পর আরিফুল ইসলামের ৯৪ রানের ইনিংসে টিম ইন্ডিয়াকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে টাইগার যুবারা। সেই সঙ্গে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে অপরাজিত থেকে ফাইনালে পৌঁছে গেল মাহফুজুর রহমান রাব্বির দল। আগামী রোববারের ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ আরেক সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে চমকে দেওয়া সংযুক্ত আরব আমিরাত।

শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) দুবাইয়ে আইসিসির একাডেমি প্রথম সেমিফাইনালে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে ১৮৯ রানের লক্ষ্যমাত্রা দেয় ভারত। জবাবে ৪৩ বল ও ৪ উইকেট হাতে রেখে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে টাইগাররা।

মাঝারি লক্ষ্যের পেছনে ছুটতে গিয়ে বাংলাদেশের শুরুটা একদমই ভালো হয়নি। উল্টো ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ভারতীয়দের ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছে বাংলাদেশ। মারকুটে ওপেনার জিশান আলম (০) ইনিংসের প্রথম ওভারেই বোল্ড হয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে যান রাজ লিমবানির বোলিংয়ে। ১৩ রান করা চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান ষষ্ঠ ওভারে উইকেট দিয়েছেন নামান তিওয়ারিকে। বড় ক্ষতিটা হয় পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ওপেনার আশিকুর রহমানের বিদায়ে। আগের ম্যাচে শতক করা আশিকুর আজ ২২ বল খেলে ৭ রান করে রান আউট হয়েছেন।

বাংলাদেশের রান তখন ৯.৪ ওভারে ৩ উইকেটে ৩৪। এই বিপদ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে একটা জুটির দরকার ছিল বাংলাদেশ। আরিফুল ইসলাম ও আহরার আমিনের লড়াকু ব্যাটিং সে দাবি মেটায়। আমিন ধরে খেলেছেন। আর আরিফুল বাজে বলের প্রাপ্য মিটিয়ে করেছেন দারুণ ব্যাটিং। দুজনের যুগলবন্দীতে বিপদ কাটিয়ে দাপট দেখানো শুরু করে বাংলাদেশ। শুরুতে সময় নিলেও আরিফুল থিতু হওয়ার পর চার-ছক্কায় দ্রুত রান বাড়াতে থাকে।

চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১৩৮ রান তুলেছেন আরিফুল ও আহরার

আরিফুল শতকের খুব কাছে গিয়েও ফিরেছেন তিন অঙ্ক না ছুঁয়ে। ছক্কা মেরে তিন অংক স্পর্শ করতে গিয়ে ৯৪ রানে আউট হন আরিফুল। ৯০ বল খেলে ৯টি চার ও ৪টি ছক্কায় ১০৪ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসটি সাজিয়েছেন। আরিফুল যখন আউট হন, জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৭ রান। সেই রান তুলতে আরও ২টি উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। শিহাব জেমসের (৭ বলে ৯ রান) পর আউট হয়েছেন আহরার (১০১ বলে ৪৪ রান)। অধিনায়ক মাহফুজুর (৩ *) ও শেখ পারভেজ (২ *) অপরাজিত থেকে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নিয়েছেন নামান তিওয়ারি।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১৩ রানে ৩ উইকেট হারায় ভারত। যুক্তিও আছে। মৃধার মূল শক্তি সুইং। দুবাইয়ের আইসিসি একাডেমি মাঠে সকালের কন্ডিশন নিশ্চয়ই তাঁকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। যা কাজে লাগিয়ে ভারতের দুই ওপেনার আদর্শ সিং (২), আরশিন কুলকার্নি (১) ও চারে নামা অধিনায়ক উদয় সাহারানকে আউট করেন।

২ বলে ২ রান করে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার আদর্শ সিং। বাঁহাতি পেসার মারুফ মৃধার বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। এরপর ৬ বলে ১ রান করা আরেক ওপেনার আর্শিন কুলকার্নিকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান মৃধা।

অধিনায়ক উদয় শাহারানকে রানের খাতাই খুলতে দেননি মারুফ। অর্থাৎ প্রথম তিন উইকেটের তিনটিই শিকার করেন এই বাঁহাতি পেসার।

চ্যাম্পিয়ন ভারতকে বিদায় করে ফাইনালে বাংলাদেশ

এরপর দলের হাল ধরান চেষ্টা করেন প্রিয়ানসু মলিয়া ও শচিন দাস। তবে বাংলাদেশি বোলারদের তোপের মুখে বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেনি শচিন। ২৩ রানের জুটিটি ভেঙে দেন ডানহাতি পেসার রোহানাত দৌল্লা বর্ষণ। ৩৬ রানে ছিল না ভারতের ৪ উইকেট।

এরপর প্রিয়ানসু মলিয়া ও মুশের খানের ২৫ রানের জুটি দলীয় স্কোর ৬১ রানে নিয়ে যায়। ১৬ তম ওভারে জোড়া আঘাতে মলিয়াকে ১৯ রানে ও অ্যারাভেলি আভিনিশকে ০ রানে ফেরান ডানহাতি পেসার বর্ষণ। তখন মনে হয়েছিল ভারতকে ১০০ রানের আগেই গুটিয়ে দিতে পারবে বাংলাদেশ।

কিন্তু সেটি হতে দেয়নি মুশের ও মুরুগান অভিশেকের করা সপ্তম উইকেটের জুটি। ১০৮ বলে ৮৪ রানের পার্টনারশিপে তারা দলকে নিয়ে যান ১৪৫ রানে। মুশের ফিফটি হাকিঁয়ে (৬১ বলে ৫০) রাব্বির বলে আরিফের হাতে ক্যাচ হন। এরপর ৩ রান দলীয় স্কোরকার্ডে তিন রান যোগ না হতেই ফেরত যান নতুন ব্যাটার সৌমি পান্ডে।

৪ উইকেট নিয়েছেন মৃধা

মুরুগানও হাকাঁন ফিফটি। অবশেষে ৭৪ বলে ৬২ রান (৬ চার ও ২ ছক্কা) করে মারুফের বলে জিসান আলমের হাতে ধরা পড়েন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১৮৮ রানে অলআউট হয় ভারত।

বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট (৪১ রান খরচায়) শিকার করেন মারুফ মৃধা। ২টি উইকেট তুলে নেন রোহানাত দৌল্লা বর্ষণ ও শেখ পারভেজ জীবন।

এদিকে আগামী ১৭ ডিসেম্বর ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ সংযুক্ত আরব আমিরাত। আজ প্রথম সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে ১১ রানে হারিয়ে অঘটনের জন্ম দেয় তারা।

আবহাওয়া

সংস্কারের অভাবে সড়কের বেহাল দশা, ভোগান্তিতে হাজারো মানুষ

মারুফ মৃধার বিধ্বংসী বোলিংয়ে ভারতকে উড়িয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

প্রকাশের সময় : ০৭:৩৮:২৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : 

ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে হারিয়ে যুব এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। পেসার মারুফ মৃধার বিধ্বংসী বোলিংয়ের পর আরিফুল ইসলামের ৯৪ রানের ইনিংসে টিম ইন্ডিয়াকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে টাইগার যুবারা। সেই সঙ্গে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে অপরাজিত থেকে ফাইনালে পৌঁছে গেল মাহফুজুর রহমান রাব্বির দল। আগামী রোববারের ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ আরেক সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে চমকে দেওয়া সংযুক্ত আরব আমিরাত।

শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) দুবাইয়ে আইসিসির একাডেমি প্রথম সেমিফাইনালে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে ১৮৯ রানের লক্ষ্যমাত্রা দেয় ভারত। জবাবে ৪৩ বল ও ৪ উইকেট হাতে রেখে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে টাইগাররা।

মাঝারি লক্ষ্যের পেছনে ছুটতে গিয়ে বাংলাদেশের শুরুটা একদমই ভালো হয়নি। উল্টো ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ভারতীয়দের ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছে বাংলাদেশ। মারকুটে ওপেনার জিশান আলম (০) ইনিংসের প্রথম ওভারেই বোল্ড হয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে যান রাজ লিমবানির বোলিংয়ে। ১৩ রান করা চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান ষষ্ঠ ওভারে উইকেট দিয়েছেন নামান তিওয়ারিকে। বড় ক্ষতিটা হয় পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ওপেনার আশিকুর রহমানের বিদায়ে। আগের ম্যাচে শতক করা আশিকুর আজ ২২ বল খেলে ৭ রান করে রান আউট হয়েছেন।

বাংলাদেশের রান তখন ৯.৪ ওভারে ৩ উইকেটে ৩৪। এই বিপদ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে একটা জুটির দরকার ছিল বাংলাদেশ। আরিফুল ইসলাম ও আহরার আমিনের লড়াকু ব্যাটিং সে দাবি মেটায়। আমিন ধরে খেলেছেন। আর আরিফুল বাজে বলের প্রাপ্য মিটিয়ে করেছেন দারুণ ব্যাটিং। দুজনের যুগলবন্দীতে বিপদ কাটিয়ে দাপট দেখানো শুরু করে বাংলাদেশ। শুরুতে সময় নিলেও আরিফুল থিতু হওয়ার পর চার-ছক্কায় দ্রুত রান বাড়াতে থাকে।

চতুর্থ উইকেট জুটিতে ১৩৮ রান তুলেছেন আরিফুল ও আহরার

আরিফুল শতকের খুব কাছে গিয়েও ফিরেছেন তিন অঙ্ক না ছুঁয়ে। ছক্কা মেরে তিন অংক স্পর্শ করতে গিয়ে ৯৪ রানে আউট হন আরিফুল। ৯০ বল খেলে ৯টি চার ও ৪টি ছক্কায় ১০৪ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসটি সাজিয়েছেন। আরিফুল যখন আউট হন, জয়ের জন্য দরকার ছিল ১৭ রান। সেই রান তুলতে আরও ২টি উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। শিহাব জেমসের (৭ বলে ৯ রান) পর আউট হয়েছেন আহরার (১০১ বলে ৪৪ রান)। অধিনায়ক মাহফুজুর (৩ *) ও শেখ পারভেজ (২ *) অপরাজিত থেকে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নিয়েছেন নামান তিওয়ারি।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১৩ রানে ৩ উইকেট হারায় ভারত। যুক্তিও আছে। মৃধার মূল শক্তি সুইং। দুবাইয়ের আইসিসি একাডেমি মাঠে সকালের কন্ডিশন নিশ্চয়ই তাঁকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। যা কাজে লাগিয়ে ভারতের দুই ওপেনার আদর্শ সিং (২), আরশিন কুলকার্নি (১) ও চারে নামা অধিনায়ক উদয় সাহারানকে আউট করেন।

২ বলে ২ রান করে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার আদর্শ সিং। বাঁহাতি পেসার মারুফ মৃধার বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। এরপর ৬ বলে ১ রান করা আরেক ওপেনার আর্শিন কুলকার্নিকে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান মৃধা।

অধিনায়ক উদয় শাহারানকে রানের খাতাই খুলতে দেননি মারুফ। অর্থাৎ প্রথম তিন উইকেটের তিনটিই শিকার করেন এই বাঁহাতি পেসার।

চ্যাম্পিয়ন ভারতকে বিদায় করে ফাইনালে বাংলাদেশ

এরপর দলের হাল ধরান চেষ্টা করেন প্রিয়ানসু মলিয়া ও শচিন দাস। তবে বাংলাদেশি বোলারদের তোপের মুখে বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেনি শচিন। ২৩ রানের জুটিটি ভেঙে দেন ডানহাতি পেসার রোহানাত দৌল্লা বর্ষণ। ৩৬ রানে ছিল না ভারতের ৪ উইকেট।

এরপর প্রিয়ানসু মলিয়া ও মুশের খানের ২৫ রানের জুটি দলীয় স্কোর ৬১ রানে নিয়ে যায়। ১৬ তম ওভারে জোড়া আঘাতে মলিয়াকে ১৯ রানে ও অ্যারাভেলি আভিনিশকে ০ রানে ফেরান ডানহাতি পেসার বর্ষণ। তখন মনে হয়েছিল ভারতকে ১০০ রানের আগেই গুটিয়ে দিতে পারবে বাংলাদেশ।

কিন্তু সেটি হতে দেয়নি মুশের ও মুরুগান অভিশেকের করা সপ্তম উইকেটের জুটি। ১০৮ বলে ৮৪ রানের পার্টনারশিপে তারা দলকে নিয়ে যান ১৪৫ রানে। মুশের ফিফটি হাকিঁয়ে (৬১ বলে ৫০) রাব্বির বলে আরিফের হাতে ক্যাচ হন। এরপর ৩ রান দলীয় স্কোরকার্ডে তিন রান যোগ না হতেই ফেরত যান নতুন ব্যাটার সৌমি পান্ডে।

৪ উইকেট নিয়েছেন মৃধা

মুরুগানও হাকাঁন ফিফটি। অবশেষে ৭৪ বলে ৬২ রান (৬ চার ও ২ ছক্কা) করে মারুফের বলে জিসান আলমের হাতে ধরা পড়েন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১৮৮ রানে অলআউট হয় ভারত।

বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট (৪১ রান খরচায়) শিকার করেন মারুফ মৃধা। ২টি উইকেট তুলে নেন রোহানাত দৌল্লা বর্ষণ ও শেখ পারভেজ জীবন।

এদিকে আগামী ১৭ ডিসেম্বর ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ সংযুক্ত আরব আমিরাত। আজ প্রথম সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে ১১ রানে হারিয়ে অঘটনের জন্ম দেয় তারা।