Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

করোনা বিস্তারে ভূমিকা রেখেছে হাত ধোয়ায় বেশি মনোযোগ?

  • যোগাযোগ ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৬:২৭:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর ২০২০
  • ১৯৭ জন দেখেছেন

সংগৃহিত ছবি

করোনাভাইরাস সংক্রমণে দূষিত পৃষ্ঠগুলো অতটা ঝুঁকিপূর্ণ নাও হতে পারে বলে বিজ্ঞানীদের ধারনা। মহামারীটি ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু বিজ্ঞানী প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিলেন যে হাতের পরিচ্ছন্নতার স্বাস্থ্যবিধির ওপর এতটা মনোযোগ দেয়া ততটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল কিনা?

যুক্তরাজ্যে পৌঁছার মুহূর্ত থেকে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শগুলোতে সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস করতে হাত ধোয়া ও পৃষ্ঠতলগুলো পরিষ্কারে জোর দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বিজ্ঞানীদের দাবি, ভাইরাস সংক্রমণে দূষিত পৃষ্ঠগুলো অতটা ঝুঁকিপূর্ণ নাও হতে পারে।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক মোনিকা গান্ধী বলেন, ভাইরাসটিতে সংক্রমণের সবচেয়ে সহজ উপায় হলো সংক্রমিত ব্যক্তির মুখ বা নাক থেকে ছড়িয়ে পড়া ড্রপলেট বা অ্যারোসলগুলো। আমরা এখন জানি যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার মূল কারণটি পৃষ্ঠতল স্পর্শ করা এবং আপনার চোখ স্পর্শ করা নয়। একে অন্যের কাছাকাছি এলে নাক ও মুখ থেকে ড্রপলেটের মাধ্যমে ভাইরাসটি অন্যজনকে আক্রান্ত করে।

গান্ধী কেবল একা নন, নিউ জার্সির রাটজার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজির অধ্যাপক এমানুয়েল গোল্ডম্যান বলেছেন, আমার মতে নির্জীব পৃষ্ঠের মাধ্যমে সংক্রমণের আশঙ্কা খুব কম। তাছাড়া সংক্রমণটি কেবল এমন পরিস্থিতিতে ঘটে যেখানে সংক্রমিত ব্যক্তি হাঁচি-কাশি দেয় এবং সেই পৃষ্ঠটি ‘দ্রুত’ অন্য কেউ স্পর্শ করে। তিনি এই ‘দ্রুত’কে সংজ্ঞায়িত করেছেন এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে।

আরও পড়ুন : করোনা ট্রাম্পকেও ছাড়ছে না বললেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসপিরেটরি সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. জুলিয়ান তাং যুক্তরাজ্য সরকারের বৈজ্ঞানিক পরামর্শদাতাদের নথিগুলোর দিকে ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, হাত ধোয়া তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণকে মাত্র ১৬ শতাংশ হ্রাস করতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) পৃষ্ঠতল সংক্রমণের সম্ভাব্য উৎস হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছে।

তিনি বিশ্বাস করেন, দূষিত পৃষ্ঠগুলোতে বেশি মনোযোগ দেয়া দেশগুলোকে কভিড-১৯কে বায়ুবাহিত সংক্রমণ হিসেবে গুরুত্ব সহকারে নেয়া থেকে বিরত রাখে এবং মাস্ক ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তাকে খর্ব করে। আমরা সব সময় বলেছি যে ভাইরাসটি সব মাধ্যমেই সংক্রমিত করে। হাতের মাধ্যমেও কিছু সংক্রমণ হতে পারে এবং আমরা হাত ধোয়ার বিরোধী নই, তবে এটায় অতিরিক্ত জোর দেয়া ভুল।

সংক্রমণের মূল ঝুঁকি যেখানে একে অন্যের কাছাকাছি এসে কথা বলা সেখানে পৃষ্ঠতল পরিষ্কারে প্রচুর সময় ও অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। আমরা যদি এই বিনিয়োগটি প্রথমেই মাস্কের পেছনে দিতে পারতাম এবং এর সঙ্গে হাত ধোয়া ও পৃষ্ঠতল পরিষ্কারের প্রচেষ্টা চালাতে পারতাম তাহলে আমরা অনেক ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পারতাম।

দ্য গার্ডিয়ান

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

করোনা বিস্তারে ভূমিকা রেখেছে হাত ধোয়ায় বেশি মনোযোগ?

প্রকাশের সময় : ০৬:২৭:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর ২০২০

করোনাভাইরাস সংক্রমণে দূষিত পৃষ্ঠগুলো অতটা ঝুঁকিপূর্ণ নাও হতে পারে বলে বিজ্ঞানীদের ধারনা। মহামারীটি ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু বিজ্ঞানী প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিলেন যে হাতের পরিচ্ছন্নতার স্বাস্থ্যবিধির ওপর এতটা মনোযোগ দেয়া ততটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল কিনা?

যুক্তরাজ্যে পৌঁছার মুহূর্ত থেকে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শগুলোতে সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস করতে হাত ধোয়া ও পৃষ্ঠতলগুলো পরিষ্কারে জোর দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বিজ্ঞানীদের দাবি, ভাইরাস সংক্রমণে দূষিত পৃষ্ঠগুলো অতটা ঝুঁকিপূর্ণ নাও হতে পারে।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক মোনিকা গান্ধী বলেন, ভাইরাসটিতে সংক্রমণের সবচেয়ে সহজ উপায় হলো সংক্রমিত ব্যক্তির মুখ বা নাক থেকে ছড়িয়ে পড়া ড্রপলেট বা অ্যারোসলগুলো। আমরা এখন জানি যে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার মূল কারণটি পৃষ্ঠতল স্পর্শ করা এবং আপনার চোখ স্পর্শ করা নয়। একে অন্যের কাছাকাছি এলে নাক ও মুখ থেকে ড্রপলেটের মাধ্যমে ভাইরাসটি অন্যজনকে আক্রান্ত করে।

গান্ধী কেবল একা নন, নিউ জার্সির রাটজার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজির অধ্যাপক এমানুয়েল গোল্ডম্যান বলেছেন, আমার মতে নির্জীব পৃষ্ঠের মাধ্যমে সংক্রমণের আশঙ্কা খুব কম। তাছাড়া সংক্রমণটি কেবল এমন পরিস্থিতিতে ঘটে যেখানে সংক্রমিত ব্যক্তি হাঁচি-কাশি দেয় এবং সেই পৃষ্ঠটি ‘দ্রুত’ অন্য কেউ স্পর্শ করে। তিনি এই ‘দ্রুত’কে সংজ্ঞায়িত করেছেন এক থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে।

আরও পড়ুন : করোনা ট্রাম্পকেও ছাড়ছে না বললেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী

লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসপিরেটরি সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. জুলিয়ান তাং যুক্তরাজ্য সরকারের বৈজ্ঞানিক পরামর্শদাতাদের নথিগুলোর দিকে ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, হাত ধোয়া তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণকে মাত্র ১৬ শতাংশ হ্রাস করতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) পৃষ্ঠতল সংক্রমণের সম্ভাব্য উৎস হওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছে।

তিনি বিশ্বাস করেন, দূষিত পৃষ্ঠগুলোতে বেশি মনোযোগ দেয়া দেশগুলোকে কভিড-১৯কে বায়ুবাহিত সংক্রমণ হিসেবে গুরুত্ব সহকারে নেয়া থেকে বিরত রাখে এবং মাস্ক ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তাকে খর্ব করে। আমরা সব সময় বলেছি যে ভাইরাসটি সব মাধ্যমেই সংক্রমিত করে। হাতের মাধ্যমেও কিছু সংক্রমণ হতে পারে এবং আমরা হাত ধোয়ার বিরোধী নই, তবে এটায় অতিরিক্ত জোর দেয়া ভুল।

সংক্রমণের মূল ঝুঁকি যেখানে একে অন্যের কাছাকাছি এসে কথা বলা সেখানে পৃষ্ঠতল পরিষ্কারে প্রচুর সময় ও অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। আমরা যদি এই বিনিয়োগটি প্রথমেই মাস্কের পেছনে দিতে পারতাম এবং এর সঙ্গে হাত ধোয়া ও পৃষ্ঠতল পরিষ্কারের প্রচেষ্টা চালাতে পারতাম তাহলে আমরা অনেক ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পারতাম।

দ্য গার্ডিয়ান