স্পোর্টস ডেস্ক :
যুবাদের এশিয়া কাপে নিজেদের আধিপত্য ধরে রেখেছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জাপানকে হারিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের সেমিফাইনাল প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই শেষ চার নিশ্চিত করল তারা।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) দুবাইয়ে আইসিসি একাডেমি মাঠে শ্রীলঙ্কাকে ১৯৯ রানে আটকে দেওয়ার পর ৪০.৫ ওভারে ৬ উইকেট হাতে রেখেই জিতেছে মাহফুজুর রহমানের দল। রান তাড়ায় অপরাজিত শতক করেছেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান আশিকুর রহমান।
শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষ ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯৯ রান সংগ্রহ করে শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশের পক্ষে ওয়াসি সিদ্দিকি নেন ৩টি উইকেট। এছাড়া মারুফ মৃধা ও মাহফুজুর রাব্বি নেন ২টি করে উইকেট।
২০০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। রানের খাতা খোলার আগেই দলীয় ১ রানে সাজঘরে ফিরে যান ওপেনার জিসান আলম।
এরপর ক্রিজে আসা রিজওয়ানকে সঙ্গে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন আরেক ওপেনার আশিকুর রহমান শিবলি। ৭৪ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার। তবে দলীয় ৭৫ রানে ৩৯ বলে ৩২ রান করে আউট হন রিজওয়ান।
এরপর ক্রিজে আসা আরিফুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাট করতে থাকেন আশিকুর। ৫৭ রানের জুটি গড়েন তারা। তবে দলীয় ১৩২ রানে ৪৪ বলে ১৮ রান করে ফিরে যান আরিফুল।
এরপর আহরার আমিনকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাট করতে থাকেন আশিকুর। সাবলীল ব্যাটিংয়ে ১১৯ বলে শতক পূরণ করেন এই ব্যাটার। দলীয় ১৯২ রানে ২৩ বলে ২৩ রান করে আহরার আউট হন। এরপর শিহাব জেমসকে সঙ্গে নিয়ে ৫৫ বল বাকি থাকতে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন আশিকুর। ১৩০ বলে ১১৬ রান করে অপরাজিত থাকেন এই ব্যাটার। ১৩০ বলের ইনিংসে ১১টি চার ও ২টি ছয়ে ১১৬ রান করেন তিনি।
এর আগে শ্রীলঙ্কার ইনিংসের শুরুটা ইতিবাচক ছিল। পুলিন্দু পেরেরা ও রবিশান ডি সিলভা উদ্বোধনী জুটিতে ৩৭ রান যোগ করেছিলেন। বাঁহাতি পেসার মারুফ মৃধা নবম ওভারে এসে পেরেরাকে বোল্ড করে ভাঙেন সে জুটি। ২৯ বলে ২৮ রানে থামে পেরেরার ইনিংস।
তিনে নামা লঙ্কান অধিনায়ক সিনেত জয়াবর্ধনের ইনিংসের শুরুটাও ভালো ছিল। ডি সিলভার সঙ্গে ৩৭ রানের জুটি গড়েন তিনি। তবে মাঝের ওভারে বোলিংয়ে এসে ইনিংসের চেহারা পাল্টে দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহফুজুর ও লেগ স্পিনার ওয়াসি সিদ্দিকী। মাহফুজুরের বাঁহাতি স্পিনে ৩৭ বলে ২১ রান করে বোল্ড হন রবিশান। জয়াবর্ধনেও (৩০ বলে ২৫ রান) তাঁর শিকার।
দিনুরা কালুপাহানা ও রুসান্দা গামাগের ৩৫ রানের জুটিতে ধাক্কাটা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করলেও শ্রীলঙ্কা সেটি পারেনি। ২৯তম ওভারে কালুপাহানা (৩৯ বলে ২০ রান) ও মালশা থারুপতিকে পরপর দুই বলে আউট করে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও তৈরি করেন ওয়াসি। হ্যাটট্রিক না হলেও আরেক থিতু ব্যাটসম্যান রুসান্দা গামেগেকে (৪৬ বলে ২৪ রান) আউট করেন তিনি।
১১৮ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর আর বেশি দূর যেতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। উইকেটকিপার শারুজান শানমুগানাথান (২১), বিশ্ব লাহিরু (২৫) ও রুভিশান পেরেরার (১৯) ইনিংসে ৫০ ওভার ব্যাটিং করলেও ১৯৯ রানেই থামে শ্রীলঙ্কা।
৩ উইকেট নেন ওয়াসি সিদ্দিক এবং মাহফুজুর ও মারুফ নেন ২টি করে উইকেট। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন রোহানাত দৌলা বর্ষণ এবং শেখ পারভেজ জীবন।
সেই সঙ্গে নিশ্চিত হলো দুবাইয়ে চলমান বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টটির সেমিফাইনালের রোডম্যাপও। গ্রুপ ‘এ’ থেকে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান ও ভারত। অন্যদিকে, ‘বি’ থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া এই গ্রুপটি থেকে আরেক সেমিফাইনালিস্ট সংযুক্ত আরব আমিরাত।
টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী, সেমিফাইনালের দ্বৈরথে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন মুখোমুখি হবে অন্য গ্রুপ রানার্স-আপের। সে হিসেবে আগামী ১৫ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ‘বি’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ মুখোমুখি হবে ‘এ’ গ্রুপ রানার্স-আপ ভারতের। এর আগে ২০২১ সালেও দুই দল সেমিতে মুখোমুখি হয়েছিল। এ ছাড়া একই দিনে ‘এ’ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান লড়বে ‘বি’ গ্রুপ রানার্স-আপ সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে।