Dhaka সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ক্লিনিকের খরচ মেটাতে নবজাতককে অন্যের হাতে তুলে মা

ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি : 

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ক্লিনিকের খরচ মেটাতে নিজের তিন দিন বয়সী এক নবজাতককে অন্যের হাতে তুলে দিয়েছিলেন কোকিলা খাতুন নামে এক নারী।

গর্ভবতী থাকা অবস্থায় স্বামীর সাথে মনোমালিন্য হলে মায়ের বাড়িতে চলে যান কোকিলা খাতুন। কোকিলা খাতুনের মা ঝিনাইদহ শহরে ভিক্ষা করেন। এর মধ্যে কোকিলা খাতুনের প্রসব বেদনা উঠলে কালীগঞ্জ শহরের ডক্টরস ক্লিনিকে তাকে ভর্তি করানো হয়। গত ২৮ নভেম্বর ফুটফুটে এক শিশুসন্তানের জন্ম হয়। পরে সন্তানকে দত্তক দেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের হেলাই গ্রামের সোহাগ হোসেনের কাছে।

এ ঘটনা জানতে পেরে বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে থানায় এসে অভিযোগ করেন কোকিলা খাতুনের স্বামী আকাশ হোসেন। এরপর পুলিশ গিয়ে হেলাই গ্রাম থেকে নবজাতককে উদ্ধার করে। বিকেলে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান কালীগঞ্জ থানার ওসি আবু আজিফ।

ওসি আবু আজিফ জানান, বৃহস্পতিবার সকালে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি অভিযোগ করেন আকাশ হোসেন। গত ২৮ নভেম্বর তার স্ত্রী সিজারের মাধ্যমে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেয়। আকাশ হোসেনকে না জানিয়ে তার স্ত্রী ও শাশুড়ি সন্তানকে দত্তক দেয়। পরে তার স্ত্রী কোকিলা খাতুন ভুল বুঝতে পারে এবং স্বামীর সাথে যোগাযোগ করে সন্তানকে উদ্ধার করে আনতে বলে।

কোকিলা খাতুন জানান, তার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে তার খোঁজখবর রাখতেন না। এ কারণে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বাবার বাড়িতে চলে আসেন কোকিলা। ২৮ নভেম্বর প্রসব বেদনা উঠলে কোকিলার মা তাঁকে কালীগঞ্জ শহরের ডক্টরস ক্লিনিকে নিয়ে ভর্তি করেন। ওই দিন বিকেলে সিজারিয়ানের মাধ্যমে তার একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু সন্তান জন্মের পরও স্বামী তার খোঁজখবর নেননি। এদিকে ক্লিনিকের ব্যয় ও ওষুধের টাকা জোগাড়ে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েন। টাকা জোগাড়ে তার মা আনোয়ারা খাতুন স্বজনসহ বিভিন্ন মানুষের কাছে গিয়ে ব্যর্থ হলে তিনি সন্তান বিক্রি করতে বাধ্য হন।

নবজাতকটি দত্তক নেওয়া সোহাগ হোসেন জানান, ঝিনাইদহ শহরে ভিক্ষা করেন আনোয়ারা খাতুন। মেয়ের সিজারের কথা বলে ভিক্ষা করতে আসেন। সেখান থেকেই পরিচয়। সিজারের আগেই সন্তানটি তাদের দিবেন বলে জানান সন্তানের নানি আনোয়ারা খাতুন। বিনিময়ে সিজারের খরচ ও নগদ ৩০ হাজার টাকা দিতে হবে। স্থানীয় মেয়র ও কাউন্সিলরকে জানিয়ে শিশুটিকে তারা নিয়ে গিয়েছিলেন।

নবজাতক শিশুটির বাবা আকাশ হোসেন জানান, তার স্ত্রীর সাথে মনোমালিন্য হয়েছিল। তাকে না জানিয়ে সন্তানটিকে দত্তক দিয়েছিল। জানতে পেরে তিনি তার সন্তানকে ফেরত নিতে থানায় অভিযোগ করেছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি তরুণীর পা বিচ্ছিন্ন

ক্লিনিকের খরচ মেটাতে নবজাতককে অন্যের হাতে তুলে মা

প্রকাশের সময় : ০৯:৫৬:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৩

ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি : 

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ক্লিনিকের খরচ মেটাতে নিজের তিন দিন বয়সী এক নবজাতককে অন্যের হাতে তুলে দিয়েছিলেন কোকিলা খাতুন নামে এক নারী।

গর্ভবতী থাকা অবস্থায় স্বামীর সাথে মনোমালিন্য হলে মায়ের বাড়িতে চলে যান কোকিলা খাতুন। কোকিলা খাতুনের মা ঝিনাইদহ শহরে ভিক্ষা করেন। এর মধ্যে কোকিলা খাতুনের প্রসব বেদনা উঠলে কালীগঞ্জ শহরের ডক্টরস ক্লিনিকে তাকে ভর্তি করানো হয়। গত ২৮ নভেম্বর ফুটফুটে এক শিশুসন্তানের জন্ম হয়। পরে সন্তানকে দত্তক দেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের হেলাই গ্রামের সোহাগ হোসেনের কাছে।

এ ঘটনা জানতে পেরে বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে থানায় এসে অভিযোগ করেন কোকিলা খাতুনের স্বামী আকাশ হোসেন। এরপর পুলিশ গিয়ে হেলাই গ্রাম থেকে নবজাতককে উদ্ধার করে। বিকেলে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান কালীগঞ্জ থানার ওসি আবু আজিফ।

ওসি আবু আজিফ জানান, বৃহস্পতিবার সকালে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি অভিযোগ করেন আকাশ হোসেন। গত ২৮ নভেম্বর তার স্ত্রী সিজারের মাধ্যমে একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেয়। আকাশ হোসেনকে না জানিয়ে তার স্ত্রী ও শাশুড়ি সন্তানকে দত্তক দেয়। পরে তার স্ত্রী কোকিলা খাতুন ভুল বুঝতে পারে এবং স্বামীর সাথে যোগাযোগ করে সন্তানকে উদ্ধার করে আনতে বলে।

কোকিলা খাতুন জানান, তার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে তার খোঁজখবর রাখতেন না। এ কারণে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বাবার বাড়িতে চলে আসেন কোকিলা। ২৮ নভেম্বর প্রসব বেদনা উঠলে কোকিলার মা তাঁকে কালীগঞ্জ শহরের ডক্টরস ক্লিনিকে নিয়ে ভর্তি করেন। ওই দিন বিকেলে সিজারিয়ানের মাধ্যমে তার একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু সন্তান জন্মের পরও স্বামী তার খোঁজখবর নেননি। এদিকে ক্লিনিকের ব্যয় ও ওষুধের টাকা জোগাড়ে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েন। টাকা জোগাড়ে তার মা আনোয়ারা খাতুন স্বজনসহ বিভিন্ন মানুষের কাছে গিয়ে ব্যর্থ হলে তিনি সন্তান বিক্রি করতে বাধ্য হন।

নবজাতকটি দত্তক নেওয়া সোহাগ হোসেন জানান, ঝিনাইদহ শহরে ভিক্ষা করেন আনোয়ারা খাতুন। মেয়ের সিজারের কথা বলে ভিক্ষা করতে আসেন। সেখান থেকেই পরিচয়। সিজারের আগেই সন্তানটি তাদের দিবেন বলে জানান সন্তানের নানি আনোয়ারা খাতুন। বিনিময়ে সিজারের খরচ ও নগদ ৩০ হাজার টাকা দিতে হবে। স্থানীয় মেয়র ও কাউন্সিলরকে জানিয়ে শিশুটিকে তারা নিয়ে গিয়েছিলেন।

নবজাতক শিশুটির বাবা আকাশ হোসেন জানান, তার স্ত্রীর সাথে মনোমালিন্য হয়েছিল। তাকে না জানিয়ে সন্তানটিকে দত্তক দিয়েছিল। জানতে পেরে তিনি তার সন্তানকে ফেরত নিতে থানায় অভিযোগ করেছিলেন।