Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফ্রান্সের স্বপ্নভঙ্গ করে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ১০:৩০:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ১৮৮ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

চারবার বিশ্বকাপ, তিনবার ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ও একবার অলিম্পিক ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হওয়া জার্মানির একটা আক্ষেপ ছিল অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ নিয়ে। এই ট্রফিটা এতদিন অধরাই ছিল বিশ্বফুটবলের অন্যতম এই পরাশক্তি দলটির কাছে। যদিও ১৯৮৫ সালে প্রথম আসরেই তারা ফাইালে উঠেছিল। চীনে হওয়া প্রথম আসরে তাদের স্বপ্ন ভেঙ্গেছিল নাইজেরিয়ার কাছে ফাইনালে ২-০ গোলে হেরে।

তারপর অপেক্ষা দীর্ঘদিন। ফাইনালেই উঠতে পারছিল না তারা। অবশেষে ৩৮ বছর পর ফাইনালে উঠে সেই স্বপ্ন পূরণ করলো জার্ড মুলার ও ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারের উত্তরসূরীরা।

শনিবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ইন্দোনেশিয়ার মানাহান স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে জার্মানি টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে ফ্রান্সকে পরাজিত করে নতুন চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয়েছিল ২-২ গোলে।

সুরাকার্তায় অনুষ্ঠিত এই ফাইনালে আরও একবার জার্মানির নায়ক হলেন গোলরক্ষক কনস্ট্যান্টিন হেইডি। দীর্ঘদেহী এই গোলরক্ষক আর্জেন্টিনার বিপক্ষেও শ্যুটআউটে নায়ক হয়েছিলেন। ফাইনালেও দুই পেনাল্টি ঠেকিয়ে নায়ক বনে গিয়েছেন তিনিই। ফ্রেঞ্চ গোলরক্ষক অ্যাগনিও এদিন নায়ক হতে পারতেন। তবে সেটা হয়নি হেইডির কল্যাণেই।

ফাইনালের শুরুটা অবশ্য খুব বেশি জমজমাট ছিল না। কিছুটা ধীরগতির ফুটবলই দেখা গিয়েছে অল-ইউরোপিয়ান ফাইনালে। শুরুতেই নায়ক হয়েছিলেন হেইডি। ফ্রেঞ্চ মিডফিল্ডার বাউব্রির দুর্দান্ত এক শট ফিরিয়ে দিয়েছিলেন এই গোলরক্ষক। গোল না পেলেও ফ্রান্সই ছিল বল দখলে এগিয়ে। অন্যদিকে নোয়াহ দারউইচ-প্যারিস ব্রুনাররা খেলেছেন চিরায়ত জার্মান কাউন্টার অ্যাটাক।

২৯ মিনিটে জার্মানির গোলটাও এসেছে সেই সূত্র ধরেই। জার্মানির আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে ফাউল হয় বক্সে। ভিএআর চেকের পর আসে পেনাল্টি। স্পটকিকে দলকে এগিয়ে নেন ব্রুনার। প্রথমার্ধে আরও কিছু সুযোগ পেলেও তা কাজে লাগানো হয়নি জার্মানির। পেনাল্টির সম্ভাবনাও এসেছিল, তাতে এ দফায় সাড়া মেলেনি।

বিরতির পর ৫১ মিনিটে গোল করে বসেন জার্মান অধিনায়ক দারউইচ। বার্সেলোনার এই তরুণের গোলের সুবাদে ২-০ গোলের লিড পেয়ে যায় ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। সুরাকার্তার হাজারখানেক দর্শক তখন অপেক্ষায় একপেশে ফাইনালের।

এর দুই মিনিট পর একটি গোল শোধ দিয়ে ম্যাচে ফেরার আশা জাগায় ফরাসিরা। ৬৯ মিনিটে লাল কার্ড দেখে ১০ জনের দল হয়ে পড়া জার্মানদের বিপক্ষে সুযোগ কাজে লাগিয়ে ৮৫ মিনিটে সমতায়ও ফেরে ফ্রান্স। নির্ধারিত সময় শেষে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। টাইব্রেকারের প্রথম ৫ শটে তিনটি করে গোল করে উভয় দল। তারপর সানেডডেথে জয় নিয়ে জয় উদযাপন করে জার্মানি।

টাইব্রেকারে প্রথম শট নেয় ফ্রান্স। প্রথম শট থেকেই গোল পায় তারা। কিন্তু জার্মানির নেওয়া প্রথম শটটি ফিরিয়ে দেন ফ্রান্সের গোলকিপার। দ্বিতীয় শটে গোল পেয়েছে দুই দলই। ফ্রান্স তিন ও চার নম্বর শটে গোল পায়নি। কিন্তু ওই দুই শটে গোল পেয়েছে জার্মানি। পাঁচ নম্বর শট থেকে গোল পায় ফ্রান্স। আর জার্মানির শট ঠেকিয়ে দেন ফ্রান্সের গোলকিপার। সেই সঙ্গে দ্বিতীয়বার বিশ্বজয়ের স্বপ্নভঙ্গ হয় ফ্রান্সের। তারা ২০০১ সালে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে ফ্রান্স চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল নাইজেরিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়ে।

প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে উঠেছিল আর্জেন্টিনা। মেসিদের দেশকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল জার্মানি। ফাইনালেও তারা ভাগ্যনামক টাইব্রেকারে জিতে ঘরে তুললো যুব বিশ্বকাপের প্রথম শিরোপা।

আর্জেন্টিনা সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিলেও দলের স্ট্রাইকার আগুস্তিন রুবের্তো জিতেছেন গোল্ডেনবুট। তিনি ৮ গোল করেছেন।

টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন জার্মানির প্যারিস ব্রুনার। ৮ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার গোল্ডেন বুট পেয়েছেন আর্জেন্টিনার আগুস্তিন রুবের্তো। সেরা গোলকিপার হয়েছেন ফ্রান্সের পল আর্নি। কাতার বিশ্বকাপের মতো এখানেও ফেয়ার প্লের ট্রফি জিতেছে ইংল্যান্ড।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ফ্রান্সের স্বপ্নভঙ্গ করে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি

প্রকাশের সময় : ১০:৩০:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : 

চারবার বিশ্বকাপ, তিনবার ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ ও একবার অলিম্পিক ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হওয়া জার্মানির একটা আক্ষেপ ছিল অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ নিয়ে। এই ট্রফিটা এতদিন অধরাই ছিল বিশ্বফুটবলের অন্যতম এই পরাশক্তি দলটির কাছে। যদিও ১৯৮৫ সালে প্রথম আসরেই তারা ফাইালে উঠেছিল। চীনে হওয়া প্রথম আসরে তাদের স্বপ্ন ভেঙ্গেছিল নাইজেরিয়ার কাছে ফাইনালে ২-০ গোলে হেরে।

তারপর অপেক্ষা দীর্ঘদিন। ফাইনালেই উঠতে পারছিল না তারা। অবশেষে ৩৮ বছর পর ফাইনালে উঠে সেই স্বপ্ন পূরণ করলো জার্ড মুলার ও ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারের উত্তরসূরীরা।

শনিবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ইন্দোনেশিয়ার মানাহান স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে জার্মানি টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে ফ্রান্সকে পরাজিত করে নতুন চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয়েছিল ২-২ গোলে।

সুরাকার্তায় অনুষ্ঠিত এই ফাইনালে আরও একবার জার্মানির নায়ক হলেন গোলরক্ষক কনস্ট্যান্টিন হেইডি। দীর্ঘদেহী এই গোলরক্ষক আর্জেন্টিনার বিপক্ষেও শ্যুটআউটে নায়ক হয়েছিলেন। ফাইনালেও দুই পেনাল্টি ঠেকিয়ে নায়ক বনে গিয়েছেন তিনিই। ফ্রেঞ্চ গোলরক্ষক অ্যাগনিও এদিন নায়ক হতে পারতেন। তবে সেটা হয়নি হেইডির কল্যাণেই।

ফাইনালের শুরুটা অবশ্য খুব বেশি জমজমাট ছিল না। কিছুটা ধীরগতির ফুটবলই দেখা গিয়েছে অল-ইউরোপিয়ান ফাইনালে। শুরুতেই নায়ক হয়েছিলেন হেইডি। ফ্রেঞ্চ মিডফিল্ডার বাউব্রির দুর্দান্ত এক শট ফিরিয়ে দিয়েছিলেন এই গোলরক্ষক। গোল না পেলেও ফ্রান্সই ছিল বল দখলে এগিয়ে। অন্যদিকে নোয়াহ দারউইচ-প্যারিস ব্রুনাররা খেলেছেন চিরায়ত জার্মান কাউন্টার অ্যাটাক।

২৯ মিনিটে জার্মানির গোলটাও এসেছে সেই সূত্র ধরেই। জার্মানির আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে ফাউল হয় বক্সে। ভিএআর চেকের পর আসে পেনাল্টি। স্পটকিকে দলকে এগিয়ে নেন ব্রুনার। প্রথমার্ধে আরও কিছু সুযোগ পেলেও তা কাজে লাগানো হয়নি জার্মানির। পেনাল্টির সম্ভাবনাও এসেছিল, তাতে এ দফায় সাড়া মেলেনি।

বিরতির পর ৫১ মিনিটে গোল করে বসেন জার্মান অধিনায়ক দারউইচ। বার্সেলোনার এই তরুণের গোলের সুবাদে ২-০ গোলের লিড পেয়ে যায় ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। সুরাকার্তার হাজারখানেক দর্শক তখন অপেক্ষায় একপেশে ফাইনালের।

এর দুই মিনিট পর একটি গোল শোধ দিয়ে ম্যাচে ফেরার আশা জাগায় ফরাসিরা। ৬৯ মিনিটে লাল কার্ড দেখে ১০ জনের দল হয়ে পড়া জার্মানদের বিপক্ষে সুযোগ কাজে লাগিয়ে ৮৫ মিনিটে সমতায়ও ফেরে ফ্রান্স। নির্ধারিত সময় শেষে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। টাইব্রেকারের প্রথম ৫ শটে তিনটি করে গোল করে উভয় দল। তারপর সানেডডেথে জয় নিয়ে জয় উদযাপন করে জার্মানি।

টাইব্রেকারে প্রথম শট নেয় ফ্রান্স। প্রথম শট থেকেই গোল পায় তারা। কিন্তু জার্মানির নেওয়া প্রথম শটটি ফিরিয়ে দেন ফ্রান্সের গোলকিপার। দ্বিতীয় শটে গোল পেয়েছে দুই দলই। ফ্রান্স তিন ও চার নম্বর শটে গোল পায়নি। কিন্তু ওই দুই শটে গোল পেয়েছে জার্মানি। পাঁচ নম্বর শট থেকে গোল পায় ফ্রান্স। আর জার্মানির শট ঠেকিয়ে দেন ফ্রান্সের গোলকিপার। সেই সঙ্গে দ্বিতীয়বার বিশ্বজয়ের স্বপ্নভঙ্গ হয় ফ্রান্সের। তারা ২০০১ সালে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে ফ্রান্স চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল নাইজেরিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়ে।

প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালে উঠেছিল আর্জেন্টিনা। মেসিদের দেশকে টাইব্রেকারে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছিল জার্মানি। ফাইনালেও তারা ভাগ্যনামক টাইব্রেকারে জিতে ঘরে তুললো যুব বিশ্বকাপের প্রথম শিরোপা।

আর্জেন্টিনা সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিলেও দলের স্ট্রাইকার আগুস্তিন রুবের্তো জিতেছেন গোল্ডেনবুট। তিনি ৮ গোল করেছেন।

টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন জার্মানির প্যারিস ব্রুনার। ৮ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার গোল্ডেন বুট পেয়েছেন আর্জেন্টিনার আগুস্তিন রুবের্তো। সেরা গোলকিপার হয়েছেন ফ্রান্সের পল আর্নি। কাতার বিশ্বকাপের মতো এখানেও ফেয়ার প্লের ট্রফি জিতেছে ইংল্যান্ড।