নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিভিন্ন দল থেকে নেতা কিনতে সরকার গরুর হাটের মতো দরদাম করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ষষ্ঠ দফা অবরোধের সার্বিক চিত্র তুলে ধরতে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন করেন রিজভী। এসময় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশের জনগণ তফসিল প্রত্যাখ্যান করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন ফখরুদ্দীন-মঈনউদ্দিনের মতো তথাকথিত কিংস পার্টি, ভুঁইফোড় পার্টি, ড্রিংকস পার্টি, ছিন্নমূল পার্টি তৈরি করে তাদের দিয়েই তামাশার নির্বাচন মঞ্চস্থ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
গণতন্ত্রকামী কোটি কোটি মানুষকে মাফিয়া চক্রের নিপীড়নের মুখে ঠেলে দিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের তফসিল নাটক স্রেফ ভাগ বাটোয়ারার নির্বাচনকে বৈধতার সীলমোহর দেওয়ারই কারসাজি মাত্র বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, কাজী রকিব আর নুরুল হুদার দেখানো ভাওতাবাজির নির্বাচনের পথেই হাঁটছেন কাজী আউয়াল গং।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা তার এজেন্সিগুলো মাঠে নামিয়ে দিয়েছেন তথাকথিত কিংস পার্টি গঠনের জন্য। বিভিন্ন দল থেকে নেতা কিনতে গরুর হাটের মতো দরদাম চলছে। আওয়ামী সরকারের কিংস পার্টিতে যোগ দিতে দেশপ্রেমিক বহু নেতাকে চাপ-প্রলোভন-ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। ছলে বলে কৌশলে, টোপ দিয়ে কাউকে কাউকে বাগানো হচ্ছে। আবার কেউ কেউ জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে না গিয়ে বিরোধীদলের লেবাসে ফ্যাসিবাদের দোসর হয়ে তথাকথিত এসব কিংস পার্টি, ভুঁইফোড় পার্টি, ছিন্নমূল পার্টি হালুয়া-রুটির ভাগ পাওয়ার লালসায় ফ্যাসিস্টদের বর্তমান আস্তানা গণভবন-বঙ্গভবনে ছুটোছুটি করছেন।
রিজভী বলেন, দেশের কৃষক-শ্রমিক, দিনমজুর, স্বল্প আয়ের মানুষ, শ্রমজীবী-কৃষিজীবী, পেশাজীবী, আলেম-ওলামাসহ সব শেণি-পেশার মানুষ এখন মাফিয়া চক্রের শৃঙ্খলে বন্দি। দেশের সব নাগরিক বর্তমানে মানবিক মর্যাদা হারিয়ে, রাজনৈতিক অধিকার হারিয়ে, ভোট প্রয়োগের অধিকার হারিয়ে নিজ দেশেই যখন মাফিয়া চক্রের শৃঙ্খলে বন্দি, তখন কিছু লোক সামান্য খুদ-কুড়ার লোভে তারা বিবেক বিবেচনাহীনভাবে তামাশার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। এসব বেইমান দলছুটরা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন। কিন্তু এসব রং বদলানো পরজীবী রাজনীতিবিদরা জনগণের সংকেতবার্তা টের পাচ্ছেন না। জনগণ খুব দ্রুতগতিতে ধেয়ে যাচ্ছে সরকারের সিংহাসন ধুলোয় লুটিয়ে দিতে। জনগণের সেই পদচিহ্ন লক্ষ্য করতে পারছে না এই নব্য রাজাকাররা।
রিজভী আরও বলেন, জয়বাংলা বলে আগে বাড়ো- স্লোগান দিয়ে আমলা ও পুলিশের মতো দেশের বিচারকরাও দুর্বার গতিতে অন্ধ-অবিচারের কাজ করে যাচ্ছে। আমলা, পুলিশ ও বিচারকগণ সবাই একত্রে দ্রুত ও দর্পিত পদক্ষেপে কাজ করে যাচ্ছে। সরকারের নির্দেশে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মিথ্যা ও গায়েবি মামলায় সাজা দেওয়া হচ্ছে।
গত ৪০ দিনে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় করা ২৬টি মিথ্যা মামলায় কথিত বিচার কার্যক্রমের নামে বিএনপির ৪১৫ নেতাকর্মীকে সাজা দিয়েছেন ঢাকার আদালত বলেও উল্লেখ করেন রিজভী। বলেন, এখন গায়েবি মামলার মতো গায়েবি সাজা দেওয়া হচ্ছে। আগে মৃত ব্যক্তি কবর থেকে উঠে ভোট দিতো আর এখন মৃত ব্যক্তিকে সাজা দেওয়া হচ্ছে। বিরোধীদল করলে মরেও শান্তি নাই।
গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ৫১৫ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও দাবি করেন রিজভী।