Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সহিংস ঘটনা মূল্যায়নে বিশেষজ্ঞ দল পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সহিংস ঘটনা মূল্যায়নে পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা বাংলাদেশে ছয় থেকে আট সপ্তাহ অবস্থান করবেন বলে জানা গেছে।

বিশেষজ্ঞ দল পাঠানোর বিষয়টি উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের দুই গবেষণা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) এবং ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।

সোমবার (২০ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে আইআরআই এবং এনডিআই থেকে পাঠানো এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, এনডিআই এবং আইআরআই নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচন পরবর্তীতে সহিংসতার পরিস্থিতি মূল্যায়ন বাস্তবায়নের জন্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল পাঠাতে চায়। এ কারিগরি বিশেষজ্ঞ দলে প্রযুক্তিগত মূল্যায়নের মধ্যে থাকবেন চারজন দীর্ঘমেয়াদি বিশ্লেষক এবং একজন সমন্বয়কারী। যারা বাংলাদেশে ছয় থেকে আট সপ্তাহ থাকবেন। আইআরআই এবং এনডিআই-এর সাপোর্ট স্টাফরা নির্বাচনের দিনকে কেন্দ্র করে বিশ্লেষকদের সঙ্গে দুই সপ্তাহ যুক্ত থাকবেন।

কারিগরি মূল্যায়নে বাংলাদেশে সংঘটিত বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনী সহিংসতার বিষয়ভিত্তিক বিশ্লেষণ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। যার মধ্যে আন্তঃদলীয় সহিংসতা, নারী ও অন্যান্য প্রান্তিক গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে সহিংসতা এবং অনলাইন হয়রানি ও হুমকি। এ বিষয়গুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, এ ধরনের সহিংসতার সমাধান করা, মূল্যায়নের লক্ষ্য হবে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় নির্বাচনী সহিংসতার চালক ও প্রভাবের মূল্যায়ন করা এবং গঠনমূলক সুপারিশ প্রদান করা। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় নির্বাচনী সহিংসতা হ্রাস করা।

এনডিআইয়ের এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় কর্মসূচির পরিচালক জেমি স্পাইকারম্যান এবং আইআরআইয়ের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক স্টিফেন চিমারের যৌথ সই করা চিঠিতে বলা হয়, বিশেষজ্ঞ মিশনের কাজ হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহিংসতার জন্য কারা দায়ী এবং এর প্রভাব মূল্যায়ন করা।

বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহিংসতা, কোনো রাজনৈতিক দলের অন্তর্দলীয় কোন্দলের কারণে সহিংসতা, নারী ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে সহিংসতা, অনলাইনে হয়রানি ও হুমকি ইত্যাদি বিষয় তারা খতিয়ে দেখবেন। এসব পরিস্থিতিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকাও মূল্যায়ন করবেন তারা। ভবিষ্যতে নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা কমাতে প্রয়োজনীয় সুপারিশও করবে তারা। পাশাপাশি তাদের মূল্যায়ন জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে এবং ইসিতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

এর আগে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশসহ নির্বাচনপূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে গত ৭ অক্টোবর ঢাকায় এসেছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল। দলটি ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থানকালে সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক দল, নাগরিক সংগঠন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান এবং বাংলাদেশে কাজ করা বিদেশি দূতাবাস ও বিভিন্ন হাইকমিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে।

সফর শেষে আসন্ন নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য একটি চূড়ান্ত পরীক্ষা উল্লেখ করে আইআরই ও এনডিআই জানিয়েছিল, তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে পারে এমন বিশ্বাসযোগ্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক ও অহিংস নির্বাচনের দিকে অগ্রগতির জন্য একটি রোডম্যাপ হিসেবে পাঁচটি পরামর্শ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে- ১. সহনশীল বক্তব্য ও নির্বাচনী ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ করতে হবে। ২. নির্বাচনের সময় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। ৩. অহিংস কর্মকাণ্ডে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে এবং রাজনৈতিক সহিংসতার অপরাধীদের জবাবদিহি করতে হবে। ৪. সব দলকে অর্থবহ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ৫. নাগরিকদের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সহিংস ঘটনা মূল্যায়নে বিশেষজ্ঞ দল পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশের সময় : ১২:১০:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ নভেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সহিংস ঘটনা মূল্যায়নে পাঁচ সদস্যের বিশেষজ্ঞ দল পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তারা বাংলাদেশে ছয় থেকে আট সপ্তাহ অবস্থান করবেন বলে জানা গেছে।

বিশেষজ্ঞ দল পাঠানোর বিষয়টি উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রের দুই গবেষণা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) এবং ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউট (আইআরআই) সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।

সোমবার (২০ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে আইআরআই এবং এনডিআই থেকে পাঠানো এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, এনডিআই এবং আইআরআই নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচন পরবর্তীতে সহিংসতার পরিস্থিতি মূল্যায়ন বাস্তবায়নের জন্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল পাঠাতে চায়। এ কারিগরি বিশেষজ্ঞ দলে প্রযুক্তিগত মূল্যায়নের মধ্যে থাকবেন চারজন দীর্ঘমেয়াদি বিশ্লেষক এবং একজন সমন্বয়কারী। যারা বাংলাদেশে ছয় থেকে আট সপ্তাহ থাকবেন। আইআরআই এবং এনডিআই-এর সাপোর্ট স্টাফরা নির্বাচনের দিনকে কেন্দ্র করে বিশ্লেষকদের সঙ্গে দুই সপ্তাহ যুক্ত থাকবেন।

কারিগরি মূল্যায়নে বাংলাদেশে সংঘটিত বিভিন্ন ধরনের নির্বাচনী সহিংসতার বিষয়ভিত্তিক বিশ্লেষণ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। যার মধ্যে আন্তঃদলীয় সহিংসতা, নারী ও অন্যান্য প্রান্তিক গোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে সহিংসতা এবং অনলাইন হয়রানি ও হুমকি। এ বিষয়গুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, এ ধরনের সহিংসতার সমাধান করা, মূল্যায়নের লক্ষ্য হবে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় নির্বাচনী সহিংসতার চালক ও প্রভাবের মূল্যায়ন করা এবং গঠনমূলক সুপারিশ প্রদান করা। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় নির্বাচনী সহিংসতা হ্রাস করা।

এনডিআইয়ের এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় কর্মসূচির পরিচালক জেমি স্পাইকারম্যান এবং আইআরআইয়ের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক স্টিফেন চিমারের যৌথ সই করা চিঠিতে বলা হয়, বিশেষজ্ঞ মিশনের কাজ হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সহিংসতার জন্য কারা দায়ী এবং এর প্রভাব মূল্যায়ন করা।

বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহিংসতা, কোনো রাজনৈতিক দলের অন্তর্দলীয় কোন্দলের কারণে সহিংসতা, নারী ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে সহিংসতা, অনলাইনে হয়রানি ও হুমকি ইত্যাদি বিষয় তারা খতিয়ে দেখবেন। এসব পরিস্থিতিতে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকাও মূল্যায়ন করবেন তারা। ভবিষ্যতে নির্বাচন ঘিরে সহিংসতা কমাতে প্রয়োজনীয় সুপারিশও করবে তারা। পাশাপাশি তাদের মূল্যায়ন জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে এবং ইসিতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।

এর আগে বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশসহ নির্বাচনপূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে গত ৭ অক্টোবর ঢাকায় এসেছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল। দলটি ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থানকালে সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক দল, নাগরিক সংগঠন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান এবং বাংলাদেশে কাজ করা বিদেশি দূতাবাস ও বিভিন্ন হাইকমিশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে।

সফর শেষে আসন্ন নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য একটি চূড়ান্ত পরীক্ষা উল্লেখ করে আইআরই ও এনডিআই জানিয়েছিল, তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে পারে এমন বিশ্বাসযোগ্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক, অংশগ্রহণমূলক ও অহিংস নির্বাচনের দিকে অগ্রগতির জন্য একটি রোডম্যাপ হিসেবে পাঁচটি পরামর্শ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে- ১. সহনশীল বক্তব্য ও নির্বাচনী ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ করতে হবে। ২. নির্বাচনের সময় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে। ৩. অহিংস কর্মকাণ্ডে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে এবং রাজনৈতিক সহিংসতার অপরাধীদের জবাবদিহি করতে হবে। ৪. সব দলকে অর্থবহ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ৫. নাগরিকদের মধ্যে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে।