Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিবিসির ১০০ প্রভাবশালী নারীর তালিকায় বাংলাদেশি জান্নাতুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকা প্রকাশ করেছে বিবিসি। যেখানে স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখক এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার রক্ষা আন্দোলনের একজন কর্মী জান্নাতুল ফেরদৌস।

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

১৯৯৭ সালে একদিন রান্না করতে গিয়ে ওড়নায় আগুন লেগে যায় জান্নাতুলের। চিকিৎসকদের ভাষায় পোড়ার পরিমাণ ছিল ৬০ শতাংশ। মুখ, শরীরের ওপরের অংশ পুড়ে কুঁচকে বিকৃত হয়ে যায়। তারপরও বেঁচে যান জান্নাতুল। গলা লেগে গিয়েছিল ঘাড়ের সঙ্গে। এ পর্যন্ত চামড়া প্রতিস্থাপনসহ অস্ত্রোপচার লেগেছে প্রায় ৫০টি। এই মর্মান্তিক ঘটনা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে তিনি একজন চিত্রনির্মাতা, লেখক ও অধিকারকর্মীর ভূমিকায় অবতীর্ন হন।

বিবিসির প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় নাম ওঠার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। বিবিসি কর্তৃপক্ষ তিন সপ্তাহ আগে জানতে চেয়েছিল, এই তালিকায় আমার নাম উঠলে আপত্তি আছে কি না। এটা খুবই খুশির খবর।

বিবিসির এই স্বীকৃতির পেছনে মানবাধিকার বিষয়ে তাঁর কাজই প্রাধান্য পেয়েছে বলে জানান জান্নাতুল। তিনি বলেন, তাঁর সংগঠনের মূল কাজ আগুনে দগ্ধ নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। এই নারীদের সচেতন করতে উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন কাজ করেন তাঁরা। এর পাশাপাশি নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে এসব নারীর ইস্যু তুলে ধরেন। ২০১৫ সাল থেকে তিনি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে আছেন।

এ তালিকায় অন্যান্যদের মধ্যে আছেন সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা, মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী আমাল ক্লুনি, এআই বিশেষজ্ঞ তিমনিত গেবরু, নারীবাদের আইকন গ্লোরিয়া স্টেইনেম, হলিউড তারকা আমেরিকা ফেরেরা, ভারতীয় নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌর ও বলিউড অভিনেত্রী দিয়া মির্জা।

জান্নাতুল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার রক্ষা আন্দোলনের একজন কর্মী। তিনি ভয়েস অ্যান্ড ভিউজের প্রতিষ্ঠাতা। যেটি অগ্নিদগ্ধ নারীদের অধিকারের জন্য লড়াই করে। তবে তিনি বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়স্বজনের কাছে চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে বেশি পরিচিত। তিনি ৫টি শর্ট ফিল্ম তৈরি করেছেন। তার প্রকাশিত ৩টি উপন্যাসও রয়েছে। তিনি তার গল্প বলার সহজাত দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে চারপাশের মানুষের মাঝে শারিরীকভাবে বিকলাঙ্গ মানুষদের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করেন।

২০০৯ সালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন আইভি। এর আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৫ সালে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর ও ২০০১ সালে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।

পাশাপাশি ২০১০ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি ও ২০১২ সালে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট থেকে সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স বিষয়ে ডিপ্লোমা করেন তিনি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নৌকা তৈরিতেই ফিরছে আগৈলঝাড়ার অর্ধ শতাধিক পরিবারের সচ্ছলতা

বিবিসির ১০০ প্রভাবশালী নারীর তালিকায় বাংলাদেশি জান্নাতুল

প্রকাশের সময় : ০৮:১৭:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকা প্রকাশ করেছে বিবিসি। যেখানে স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখক এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার রক্ষা আন্দোলনের একজন কর্মী জান্নাতুল ফেরদৌস।

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

১৯৯৭ সালে একদিন রান্না করতে গিয়ে ওড়নায় আগুন লেগে যায় জান্নাতুলের। চিকিৎসকদের ভাষায় পোড়ার পরিমাণ ছিল ৬০ শতাংশ। মুখ, শরীরের ওপরের অংশ পুড়ে কুঁচকে বিকৃত হয়ে যায়। তারপরও বেঁচে যান জান্নাতুল। গলা লেগে গিয়েছিল ঘাড়ের সঙ্গে। এ পর্যন্ত চামড়া প্রতিস্থাপনসহ অস্ত্রোপচার লেগেছে প্রায় ৫০টি। এই মর্মান্তিক ঘটনা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে তিনি একজন চিত্রনির্মাতা, লেখক ও অধিকারকর্মীর ভূমিকায় অবতীর্ন হন।

বিবিসির প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় নাম ওঠার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। বিবিসি কর্তৃপক্ষ তিন সপ্তাহ আগে জানতে চেয়েছিল, এই তালিকায় আমার নাম উঠলে আপত্তি আছে কি না। এটা খুবই খুশির খবর।

বিবিসির এই স্বীকৃতির পেছনে মানবাধিকার বিষয়ে তাঁর কাজই প্রাধান্য পেয়েছে বলে জানান জান্নাতুল। তিনি বলেন, তাঁর সংগঠনের মূল কাজ আগুনে দগ্ধ নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। এই নারীদের সচেতন করতে উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন কাজ করেন তাঁরা। এর পাশাপাশি নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে এসব নারীর ইস্যু তুলে ধরেন। ২০১৫ সাল থেকে তিনি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে আছেন।

এ তালিকায় অন্যান্যদের মধ্যে আছেন সাবেক মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা, মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী আমাল ক্লুনি, এআই বিশেষজ্ঞ তিমনিত গেবরু, নারীবাদের আইকন গ্লোরিয়া স্টেইনেম, হলিউড তারকা আমেরিকা ফেরেরা, ভারতীয় নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌর ও বলিউড অভিনেত্রী দিয়া মির্জা।

জান্নাতুল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার রক্ষা আন্দোলনের একজন কর্মী। তিনি ভয়েস অ্যান্ড ভিউজের প্রতিষ্ঠাতা। যেটি অগ্নিদগ্ধ নারীদের অধিকারের জন্য লড়াই করে। তবে তিনি বন্ধু-বান্ধব এবং আত্মীয়স্বজনের কাছে চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে বেশি পরিচিত। তিনি ৫টি শর্ট ফিল্ম তৈরি করেছেন। তার প্রকাশিত ৩টি উপন্যাসও রয়েছে। তিনি তার গল্প বলার সহজাত দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে চারপাশের মানুষের মাঝে শারিরীকভাবে বিকলাঙ্গ মানুষদের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করেন।

২০০৯ সালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন আইভি। এর আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৫ সালে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর ও ২০০১ সালে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।

পাশাপাশি ২০১০ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি ও ২০১২ সালে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট থেকে সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স বিষয়ে ডিপ্লোমা করেন তিনি।