Dhaka শনিবার, ০৯ অগাস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাসায় ককটেল নিক্ষেপ নিয়ে যা বললেন আফরোজা আব্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের শাহজানপুরের বাসায় পুলিশের ছত্রছায়ায় ককটেল নিক্ষেপ করেছে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বলে অভিযোগ করেছেন তার সহধর্মিণী আফরোজা আব্বাস। তিনি বলেন, ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা সারাদিনই বাসার সামনে স্লোগান দিতে থাকে। ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। সোমবার (২০ নভেম্বর) সারাদিন বাসার সামনে টহল দিয়েছে। এই হামলার সাথে জড়িত সরকারদলীয় সন্ত্রাসী নেতাকর্মীরা। এদের সহায়তা করেছে পুলিশ। কিন্তু এদের কোনো বিচার হবে না। এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) শাহজানপুর বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

আফরোজা আব্বাস বলেন, সকালে একটি মোটরসাইকেলে করে হেলমেট পরিহিত দুজন আরোহী এসে বাসা লক্ষ্য করে পরপর দুটি ককটেল নিক্ষেপ করে। পরে নিরাপত্তাকর্মীরা দৌড়ে গেলে মোটরসাইকেলটি নিরাপদে চলে যায়। সেখানে পুলিশের মোটরসাইকেল ছিলও। নিরাপত্তাকর্মীরা ধরতে সহযোগিতার কথা বললেও পুলিশ এগিয়ে আসেনি। বরং মোটরসাইকেলটি পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে বলে মনে হয়েছে।

তিনি বলেন, এর আগেও র‌্যাব বাসায় অভিযান চালানোর সময়েও র‌্যাবের জাকেট পরে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মী পুরো বাড়িতে তাণ্ডব চালিয়েছে। সোমবার সাংবাদিকের জাকেট পরে বাসার চারপাশ ঘুরে ককটেল মারার পরিকল্পনা করেছে। তিন্তু এবার পরিকল্পনা করে পুলিশ বা র‌্যাবের জাকেট পরেনি।

মহিলা দলের সভাপতি বলেন, একটি ককটেল বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয় এবং অপর একটি ককটেল সম্পূর্ণ অবিস্ফোরিত থাকে। এ সময় পুরো বাড়ি ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এরপর পুলিশকে ইনফর্ম করলে তারাও এসে অবিস্ফোরিত ককটেল নিয়ে যায়। বালতিতে করে ককটেল নিয়ে যাওয়ার সময় ছবি তুলতে বাধা দেয়া হয়। যারা ছবি তুলে তাদের মোবাইল থেকে ডিলেট করে দিয়েছে। কারণ পুলিশ কোনো প্রমাণ রাখতে চায় না। হয়তো এই হামলার জন্য আমাদের ছেলেদের আসামি করতে পারে।

আফরোজা আব্বাস আরও বলেন, সরকারদলীয় লোকজন তাণ্ডব চালিয়ে বিরোধী দলীয় লোকজনের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। প্রতিটি হামলার আগে ও পরে পুলিশ থাকছে। মাঝখান দিয়ে হামলা করে ওরা (ছাত্রলীগ-যুবলীগ) চলে যাচ্ছে। এর থেকে নিস্তার চাই, সুষ্টু বিচার চাই। নিরাপদ দেশ গড়তে হলে সবাইকে একজোট হতে হবে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। সত্য কথা বললে হয়তো আমাকেও আটক করতে পারে পুলিশ।

তিনি আরও বলেন, এদেশের মালিকানা এখন একটা গোষ্ঠীর কাছে জিম্মি। আমরা একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। দেশের জনগন গণতান্ত্রিক অধিকার চায়। মির্জা আব্বাস কারাগারে আছেন। সারাক্ষণ নিরাপত্তাহীনতায় থাকি। এসময় পরিবারের নিরাপত্তার দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন মহিলা দলের এই সভাপতি।

এক প্রশ্নের জবাবে আফরোজা আব্বাস বলেন, মুলত মির্জা আব্বাসকে রুখে দিতে চায় সরকার। কারণ তারা মনে করে মির্জা আব্বাস সাহসের বাতিঘর। তার হাজার হাজার নেতাকর্মী রয়েছে। যারা প্রত্যেকে জিয়াউর রহমানের আর্দশের সৈনিক, খালেদা জিয়ার সৈনিক ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সৈনিক। তবে মির্জা আব্বাস কারো কাছে মাথানত করবে না।

এ ঘটনায় কোনো আইনি পদক্ষেপ নেবেন কি না, জানতে চাইলে আফরোজা আব্বাস বলেন, হামলাকারীদের ধরতে না পারলে, নিরাপত্তা দিতে না পারলে তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করবেন। এ কথা বলার পরেই তিনি বলেন, আর ভাই মামলা তো নেয় না। এর আগেও হামলার ঘটনায় মামলা নেয়নি। আদালতও মামলা নেয়নি। এ সরকার থাকলে কোনো দিন ন্যায়বিচার পাব না।

আরেক প্রশ্নের জবাবে আফরোজা আব্বাস বলেন, বর্তমানে বিরোধী দলের ওপর হামলার সাথে হেলমেট বাহিনী জড়িত। এরা পুলিশের ছত্রছায়ায় মাঝখানে থেকে হামলা চালায়। নেতাকর্মীদের মারধর করে গুরুত্বর আহত করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

প্রসঙ্গ, মঙ্গলবার সকালে ৮টার দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাসের শাহজাহানপুরের বাসায় পরপর দুইটি ককটেল নিক্ষেপ করার অভিযোগ উঠেছে। গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় শাহজাহানপুর থানায় করা মামলায় ৩১ অক্টোবর গ্রেফতার হন মির্জা আব্বাস। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

বৈরী আবহাওয়ার কারণে আগৈলঝাড়ায় ছাতার কারিগরদের ব্যাপক কদর

বাসায় ককটেল নিক্ষেপ নিয়ে যা বললেন আফরোজা আব্বাস

প্রকাশের সময় : ০৩:৩০:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের শাহজানপুরের বাসায় পুলিশের ছত্রছায়ায় ককটেল নিক্ষেপ করেছে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বলে অভিযোগ করেছেন তার সহধর্মিণী আফরোজা আব্বাস। তিনি বলেন, ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা সারাদিনই বাসার সামনে স্লোগান দিতে থাকে। ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। সোমবার (২০ নভেম্বর) সারাদিন বাসার সামনে টহল দিয়েছে। এই হামলার সাথে জড়িত সরকারদলীয় সন্ত্রাসী নেতাকর্মীরা। এদের সহায়তা করেছে পুলিশ। কিন্তু এদের কোনো বিচার হবে না। এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) শাহজানপুর বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

আফরোজা আব্বাস বলেন, সকালে একটি মোটরসাইকেলে করে হেলমেট পরিহিত দুজন আরোহী এসে বাসা লক্ষ্য করে পরপর দুটি ককটেল নিক্ষেপ করে। পরে নিরাপত্তাকর্মীরা দৌড়ে গেলে মোটরসাইকেলটি নিরাপদে চলে যায়। সেখানে পুলিশের মোটরসাইকেল ছিলও। নিরাপত্তাকর্মীরা ধরতে সহযোগিতার কথা বললেও পুলিশ এগিয়ে আসেনি। বরং মোটরসাইকেলটি পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে বলে মনে হয়েছে।

তিনি বলেন, এর আগেও র‌্যাব বাসায় অভিযান চালানোর সময়েও র‌্যাবের জাকেট পরে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মী পুরো বাড়িতে তাণ্ডব চালিয়েছে। সোমবার সাংবাদিকের জাকেট পরে বাসার চারপাশ ঘুরে ককটেল মারার পরিকল্পনা করেছে। তিন্তু এবার পরিকল্পনা করে পুলিশ বা র‌্যাবের জাকেট পরেনি।

মহিলা দলের সভাপতি বলেন, একটি ককটেল বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয় এবং অপর একটি ককটেল সম্পূর্ণ অবিস্ফোরিত থাকে। এ সময় পুরো বাড়ি ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এরপর পুলিশকে ইনফর্ম করলে তারাও এসে অবিস্ফোরিত ককটেল নিয়ে যায়। বালতিতে করে ককটেল নিয়ে যাওয়ার সময় ছবি তুলতে বাধা দেয়া হয়। যারা ছবি তুলে তাদের মোবাইল থেকে ডিলেট করে দিয়েছে। কারণ পুলিশ কোনো প্রমাণ রাখতে চায় না। হয়তো এই হামলার জন্য আমাদের ছেলেদের আসামি করতে পারে।

আফরোজা আব্বাস আরও বলেন, সরকারদলীয় লোকজন তাণ্ডব চালিয়ে বিরোধী দলীয় লোকজনের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। প্রতিটি হামলার আগে ও পরে পুলিশ থাকছে। মাঝখান দিয়ে হামলা করে ওরা (ছাত্রলীগ-যুবলীগ) চলে যাচ্ছে। এর থেকে নিস্তার চাই, সুষ্টু বিচার চাই। নিরাপদ দেশ গড়তে হলে সবাইকে একজোট হতে হবে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। সত্য কথা বললে হয়তো আমাকেও আটক করতে পারে পুলিশ।

তিনি আরও বলেন, এদেশের মালিকানা এখন একটা গোষ্ঠীর কাছে জিম্মি। আমরা একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। দেশের জনগন গণতান্ত্রিক অধিকার চায়। মির্জা আব্বাস কারাগারে আছেন। সারাক্ষণ নিরাপত্তাহীনতায় থাকি। এসময় পরিবারের নিরাপত্তার দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহবান জানিয়েছেন মহিলা দলের এই সভাপতি।

এক প্রশ্নের জবাবে আফরোজা আব্বাস বলেন, মুলত মির্জা আব্বাসকে রুখে দিতে চায় সরকার। কারণ তারা মনে করে মির্জা আব্বাস সাহসের বাতিঘর। তার হাজার হাজার নেতাকর্মী রয়েছে। যারা প্রত্যেকে জিয়াউর রহমানের আর্দশের সৈনিক, খালেদা জিয়ার সৈনিক ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সৈনিক। তবে মির্জা আব্বাস কারো কাছে মাথানত করবে না।

এ ঘটনায় কোনো আইনি পদক্ষেপ নেবেন কি না, জানতে চাইলে আফরোজা আব্বাস বলেন, হামলাকারীদের ধরতে না পারলে, নিরাপত্তা দিতে না পারলে তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করবেন। এ কথা বলার পরেই তিনি বলেন, আর ভাই মামলা তো নেয় না। এর আগেও হামলার ঘটনায় মামলা নেয়নি। আদালতও মামলা নেয়নি। এ সরকার থাকলে কোনো দিন ন্যায়বিচার পাব না।

আরেক প্রশ্নের জবাবে আফরোজা আব্বাস বলেন, বর্তমানে বিরোধী দলের ওপর হামলার সাথে হেলমেট বাহিনী জড়িত। এরা পুলিশের ছত্রছায়ায় মাঝখানে থেকে হামলা চালায়। নেতাকর্মীদের মারধর করে গুরুত্বর আহত করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

প্রসঙ্গ, মঙ্গলবার সকালে ৮টার দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাসের শাহজাহানপুরের বাসায় পরপর দুইটি ককটেল নিক্ষেপ করার অভিযোগ উঠেছে। গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় শাহজাহানপুর থানায় করা মামলায় ৩১ অক্টোবর গ্রেফতার হন মির্জা আব্বাস। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।