স্পোর্টস ডেস্ক :
চলমান বিশ্বকাপে ভারতকে হারাতে পারেনি কোনো দলই। গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচে অন্যান্য দলের তুলনায় কম শক্তির নেদারল্যান্ডস যে ভারতকে হারিয়ে দেবে সেটিও মাথায় আনেননি বেশিরভাগ ক্রিকেট ভক্ত-সমর্থক। তবুও ‘গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা’ ক্রিকেটে কোনো কিছুকেই চূড়ান্ত ধরা যায় না। তাই রোববার (১২ নভেম্বর) ভারত-নেদারল্যান্ডসের মধ্যকার গ্রুপপর্বের ম্যাচের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছিল বাংলাদেশও।
এই ম্যাচের ফলাফল ভারতের জন্য কোনো গুরুত্ব বয়ে না আনলেও বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলা নির্ভর করছিল। কারণ, এই ম্যাচে জিতে ২ পয়েন্ট পেলেই যে বাংলাদেশকে টপকে সেরা আটে পৌঁছে যেত ডাচরা!সেক্ষেত্রে গ্রুপপর্বের শেষ ২ দল হিসেবে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার সুযোগ পেত না টাইগররা।
যাক, সেসবের কিছুই হয়নি। নেদারল্যান্ডসকে ১৬০ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে রোহিত শর্মার দল। তাতে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলাও নিশ্চিত হলো।
ভারতের দেয়া ৪১১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় নেদারল্যান্ডস। দলীয় ৫ রানের মাথায় মোহাম্মদ সিরাজের বলে উইকেটের পেছনে রাহুলকে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ওয়েসলি বারেসি। এরপর ৬১ রানের জুটি গড়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন ম্যাক্স ও’ডাউড ও কলিন অ্যাকারম্যান। ৩২ বলে ৩৫ রান করা অ্যাকারম্যানকে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙ্গেন কুলদীপ যাদব।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে নেদারল্যান্ডস। ইনিংসের ২৩তম ওভারে বল হাতে আসেন ভিরাট কোহলি। নিজের দ্বিতীয় ওভারে ডাচ অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডসকে শিকার করেন কোহলি। উইকেটরক্ষক লোকেশ রাহুল ক্যাচটি নিতেই উল্লাসে ফেটে পড়েন তিনি। উদযাপনে সামিল ছিলেন কোহলির স্ত্রী আনুশকা শর্মাও। তিনি গ্যালারি থেকেই অভিনন্দন জানান কোহলিকে। এছাড়াও এদিন বল হাতে দেখা যায় সুরিয়া কুমার যাদব, শুভমান গিলকে।
ডাচদের হয়ে বারেসি ছাড়া পরের আট ব্যাটারই পেয়েছেন দুই অঙ্কের দেখা। কিন্তু নিদামানুরু ছাড়া ইনিংস বড় করতে পারেনি কেউ। ৩৯ বলে ৫৪ রান করে শেষ ব্যাটার হিসেবে রোহিত শর্মার বলে আউট হন তিনি। ভারতের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ সিরাজ, জাসপ্রিত বুমরাহ, কুলদীপ যাদব ও রবীন্দ্র জাদেজা। একটি করে উইকেট শিকার করেছেন ভিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা।
এর আগে টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় দুই ভারতীয় ওপেনার। ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারেই দলীয় অর্ধশতক পূরণ করেন রোহিত শর্মা ও শুভমান গিল। ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে কোন উইকেট না হারিয়ে ৯১ রান তুলে বড় সংগ্রহের ইঙ্গিত দেন ভারতীয় ব্যাটাররা।
১২তম ওভারে নিজের অর্ধশতক পূরণ করে ফন মিকেরেনের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেন গিল। দলীয় ১০০ রানের প্রথম উইকেটের পতন ঘটে ভারতের। গিলের পর বিরাট কোহলির সঙ্গে জুটি গড়েন রোহিত শর্মা। তবে ১৮তম ওভারে বাস ডি লিডের বলে পরাস্ত হন টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক। ব্যক্তিগত ৬১ রান করে সাজঘরে ফিরেন।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলের হাল ধরেন বিরাট কোহলি ও শ্রেয়াস আইয়ার। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা কোহলি ডাচদের বোলারদের উপর চড়াও হয়ে এবারের আসরের পঞ্চম অর্ধশতক তুলে নেন। তবে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৫০তম শতকের আশায় থাকা কোহলি ব্যাঙ্গালুরুতে তা করতে ব্যর্থ হন ইনিংসের ২৯তম ওভারে। ফন ডার মারওয়ের ঘূর্ণিতে ৫১ রান করে বোল্ড হয়ে ফিরেন তিনি।
দলীয় ২০০ রানে তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটলেও চতুর্থ উইকেট জুটিতে ডাচদের বোলারদের উপর চড়াও হয় লোকেশ রাহুল ও আইয়ার। এ দুজন মিলেই আজ ডাচ বোলারদের করেছেন তুলোধুনো। দুজনে জুটি গড়ে স্কোরবোর্ডে তুলেন ২০৮ রান। ফলে সহজেই আজ ৪১০ রানের সংগ্রহ পেয়ে যায় ভারত। শেষ পর্যন্ত রাহুল ৬৪ বলে ১০২ রান করে আউট হলেও ৯৪ বলে ১২৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন শ্রেয়াস। নেদারল্যান্ডসের হয়ে দুটি উইকেট নেন বাস ডি লিড। এছাড়াও মারউই নেন ১টি উইকেট।