স্পোর্টস ডেস্ক :
অবশেষে বড় শাস্তিই হলো আলোচিত লুইস রুবিয়ালেসের। চুমুকাণ্ডের জেরে স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতির পদ ছাড়া রুবিয়ালেসকে তিন বছর সব ধরনের ফুটবলীয় কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ফিফা।
গত আগস্ট মাসের ঘটনা। নারী বিশ্বকাপজয়ী স্পেনের তারকা ফুটবলার জেনিফার হারমোসোকে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে মেডেল পরিয়ে দেওয়ার সময় জড়িয়ে ধরে ঠোঁটে চুমু দিয়েছিলেন রুবিয়েলেস। তার সেই কাণ্ড নিয়ে তখন সমালোচনার ঝড় উঠে। যার জেরে পদত্যাগও করতে হয় রুবিয়েলেসকে।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে ফিফা জানিয়েছে, শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধে আগামী তিন বছর ফুটবলের সঙ্গে সম্পৃক্ত কোনো বিষয়ের সঙ্গেই আর জড়াতে পারবেন না রুবিয়ালেস। তার বিরুদ্ধে ফিফার ডিসিপ্লিনারি কোডের ১৩ নম্বর ধারা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ১০ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারলেন রুবিয়ালেস।
‘আক্রমণাত্মক আচরণ এবং সুষ্ঠু খেলার নীতি লঙ্ঘন’ শিরোনামে করা এই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি এমন কোনো কাজ করে যার মাধ্যমে ফিফার মৌলিক শালীনতার নীতিমালাসমূহের অবাধ্যতা প্রকাশ পায় এবং ফুটবল অথবা ফিফার বিতর্কিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে ওই ব্যক্তির উপর ফিফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে।
স্পেনের বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য জেনিফার এরমোসোর ঠোঁটে চুমু দিয়ে বিতর্কের জন্ম দেন রুবিয়ালেস। পরবর্তীতে বিষয়টির জন্য ক্ষমাও চান তিনি। তার দাবি, ঘটনাটি আকস্মিকভাবে ঘটে গেছে। তবে এতে খুব বেশি লাভ হয়নি। এরমোসোও পরে জানান, ওই চুমু অনিচ্ছাকৃত বা মুহূর্তের উত্তেজনায় ছিল না; ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে’ এই কাজ করেছেন রুবিয়ালেস।
চুমু-কাণ্ডের জন্য রুবিয়ালেসকে তিন মাসের সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেয় ফিফা। তদন্ত শেষে এবার আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত এলো। এরমোসোও আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দেয় উয়েফাও। এমনকি জাতীয় দলের নারী ফুটবলাররা তিনি দায়িত্বে থাকলে খেলবেন না বলেও জানিয়ে দেন। এই ঘটনা এমনকি স্পেনের বিশ্বকাপ জয়কেও ছাপিয়ে যাচ্ছিল।
নিজ দেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে গত সেপ্টেম্বরে সরেই দাঁড়ান রুবিয়ালেস। শুধু স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন নয়, তিনি পদত্যাগ করেছেন উয়েফার নির্বাহী কমিটি থেকেও।
এদিকে যৌন হেনস্থা ও বলপ্রয়োগের দায়ে স্পেনের উচ্চ আদালতে রুবিয়ালেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। তার জবানবন্দিও নিয়েছেন প্রসিকিউটররা। যদিও রুবিয়ালেস নিজে দাবি করেছিলেন, চুমুর ঘটনাটি পারস্পরিক সম্মতিতেই হয়েছে। কিন্তু তাতে খুব একটা কাজ হয়নি। উচ্চ আদালত থেকেও কঠিন শাস্তির সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।