টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি :
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করে বিএনপি দেশকে বিদেশের উপর নির্ভরশীল করতে চায়। কারণ বিএনপির প্রভু হলো পাকিস্তান। এখনও পাকিস্তানের মায়া তাদের কাটেনি। তারা এখনও পাকিস্তানের ধারায়, পাকিস্তানের পথে ফিরে যেতে চায়। সে জন্য তাদের লক্ষ্য নির্বাচন বানচাল করা।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা অডিটরিয়ামে এক কর্মশালায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ২৮ অক্টোবর আন্দোলনের নামে বিএনপি যদি সন্ত্রাসের পথে যায় ও আক্রমণাত্মক হয়, তাহলে আওয়ামী লীগ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করবে না। বিএনপি হুমকি দিচ্ছে ২৮ অক্টোবর দেশকে অচল করে দিবে, ঢাকাকে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিবে, দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। বিএনপি যতোই হুমকি দিক, আমি মনে করি, ২৮ তারিখ তারা কিছুই করতে পারবে না।
তিনি বলেন, আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনেক সক্ষমতা অর্জন করেছে, তারাই বিএনপিকে কঠোরভাবে মোকাবেলা করবে। এরপরও বিএনপি যদি আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসের পথে যায়, আক্রমণাত্মক হয়, গাড়িতে আগুন দেয়, বিদ্যুতের লাইন কাটে, রেললাইন তুলে- তাহলে আওয়ামী লীগ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপিকে সমুচিত জবাব দেয়া হবে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন যথাসময়ে হবে এবং তা সুষ্ঠু, সুন্দর ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। নির্বাচনে কারা এলো কারা এলো না, সেটি কোনো বিষয় না। তবে আমি আশা করি, বিএনপির শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং নির্বাচনে আসবে।
তিনি বলেন, বিএনপির পায়ের নিচে মাটি নেই। তারা ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থেকে দেশটাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল অর্থনৈতিকভাবে। গণতন্ত্র ছিল না, গণতন্ত্র ছিল বিপন্ন।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি যদি সন্ত্রাসের দিকে যায়, তারা যদি আক্রমণাত্মক হয়, তারা দেশকে যদি অস্থিতিশীল করার জন্য গাড়িতে আগুন দেয়, তারা যদি বিদ্যুতের লাইন কাটে, এ দেশের মানুষ তার জবাব দেবে। বিএনপি দেশকে সন্ত্রাসের দিকে নেবে, আবার ৬০০ জায়গায় বোমা ফাটাবে।
বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতেও দেশ এগিয়ে যাবে। এটি মানবতার দেশ। এ দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো জায়গা নেই। ধর্ম নিরপেক্ষতাই আমাদের আদর্শ।
বিএনপির শাসনামলে দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তারা সার দিতে পারেনি। সার চাইতে গিয়ে ১৮ জনকে জীবন দিতে হয়েছে। ১৮ জন কৃষককে তারা গুলি করে হত্যা করেছে। দেশে বর্তমানে দুর্ভিক্ষ নেই।
উচ্চ ফলনশীল স্বল্প জীবনকালীন ধানের ও সরিষার জাতগুলোকে দ্রুত সম্প্রসারণের জন্য কর্মশালায় উপস্থিত কৃষির মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের তাগিদ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, দেশে ক্রমশ কৃষি জমি কমছে, মানুষ বাড়ছে। এ অবস্থায় ১৭ কোটি মানুষের খাদ্যের যোগান দেয়া খুবই কঠিন। সেজন্য, কম সময়ে অধিক ফলন ও একই জমি থেকে বার বার ফসল ফলানোর উপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আমাদের বিজ্ঞানীরা স্বল্পজীবনকালীন উন্নত জাতের ধানের ও অন্যান্য অনেক ফসলের জাত উদ্ভাবন করেছে। যা চাষের মাধ্যমে বছরে ০১ টি অতিরিক্ত ফসল ফলানো সম্ভব হচ্ছে। একইসঙ্গে, ফলনও অনেক বেশি। এই জাতগুলোকে কৃষকের নিকট দ্রুত জনপ্রিয় করতে হবে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাহবুবুল আলম পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহের, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিনা) মহাপরিচালক মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক দেবাশীষ সরকার, বিএডিসির সদস্য পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা ইয়াসমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।