নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি সেমিফাইনালে হেরে গেছেন। যে দল সেমিফাইনালে হেরে যায় তাদের সঙ্গে কোনো দল ফাইনাল খেলে না। আমরাও খেলব না।
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে শেখ রাসেল স্মরণে ও ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ফখরুল সাহেবদের বলছি, আমরা আপনাদের সঙ্গে আর খেলব না। কারণ আপনারা সেমিফাইনালে হেরে গেছেন। আপনারা ডিসেম্বরে কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে গেছেন। গত মাসে বলেছিলেন বেগম জিয়াকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দিতে হবে। বেগম জিয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি হয়নি। সুতরাং সেমিফাইনালেও হেরে গেছেন। যে দল সেমিফাইনালে হেরে যায় তাদের সঙ্গে কোনো দল ফাইনাল খেলে না।
তিনি বলেন, বিএনপি চাইলে আমরা যুবলীগ আর যুব মহিলা লীগকে পাঠাব। তাদের সঙ্গে খেলে দেখুক পারে কিনা। বিএনপির আন্দোলন গরুর মাঠেই মারা গেছে।
মন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেবের অতীত ইতিহাস বলতে চাই না। যে দলের নেতা ও মহাসচিব বলে পাকিস্তানই ভালো ছিল সেই দলের এ দেশে রাজনীতি করার অধিকার থাকাই উচিত নয়। বিএনপি বর্তমান সরকারকে টেনে নামাতে চায়। গত বছরের ডিসেম্বরে বিএনপি সরকারকে টেনে নামাতে গিয়ে তারা তাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে আন্দোলন- সংগ্রাম করেছিল। এরপর তারা গোলাপবাগের গরুর মাঠে গেল। সেই গরুর মাঠে গিয়েই তাদের আন্দোলন মাঠে মারা গেল। এখন বলছে, এবার নাকি ফাইনাল খেলা৷
আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি আশা করেছিলাম, এ মাসের প্রথম সপ্তাহে তাদের সঙ্গে ফাইনাল খেলা হবে। এরপর তারা বলল, পূজার পর ফাইনাল খেলা। কিন্তু এখন আবার তারা বলছে ২৮ তারিখ নাকি ফাইনাল খেলা। ২৮ তারিখ নাকি সরকারের পতন শুরু হবে। আমি বলতে চাই, ২৮ তারিখ প্রকৃতপক্ষে বিএনপির পতন যাত্রা শুরু হবে। বিএনপি গত ১৪ বছরের বেশি সময় ধরে আমাদের প্রতি মাসে বলছে, ঈদের পরে আন্দোলন, পূজার পরে আন্দোলন, শীতের পরে আন্দোলন, বর্ষার পরে আন্দোলন, ডিসেম্বরের পর আন্দোলন। এখন বিএনপি বলবে, নির্বাচনের পরে আন্দোলন হবে।
বিএনপির নির্যাতনের মধ্যে যুব মহিলা লীগের জন্ম উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, পুলিশের ছুঁড়ে দেওয়া টিয়ার গ্যাসের সেল তুলে নিয়ে ছুঁড়ে ফেরত দেওয়ার দলের নাম যুব মহিলা লীগ। তিনি বলেন, ‘আমরা রাজপথের দল, রাজপথে আমাদের জন্ম হয়েছে, সুতরাং আমরা জানি, রাজপথে কিভাবে কাকে মোকাবিলা করতে হয়। আমরা বিএনপিকে রাজপথ দখল করতে দেবো না। যুব মহিলা লীগকে বলবো রাজপথে অতন্দ্র প্রহরীর মতো থাকার জন্য।
শহীদ শেখ রাসেলের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী হাছান ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ইতিহাস স্মরণ করে বলেন, ‘১০ বছরের শিশু শেখ রাসেল এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের এই হত্যাকাণ্ডের প্রধান কুশীলব ছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। যে খুনের মাধ্যমে তাদের উত্থান, সেই খুনের রাজনীতি তারা এখনও অব্যাহত রেখেছে। সন্ত্রাস ও মানুষের রক্তের ওপর তাদের রাজনীতি।
তিনি বলেন, ‘২০০৪ সালে এইখানে, এই বঙ্গবন্ধু এভিনিউ অফিসের সামনে খালেদা জিয়ার সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় তারেক রহমানের পরিচালনায় বৃষ্টির মতো গ্রেনেড ছুঁড়ে তারা জননেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। আমাদের ২৪ জন নেতা-কর্মী নিহত, ৫০০ জন আহত হয়েছিল, আমার শরীরে এখনো ৪০টি স্প্রিন্টার।’
ফিলিস্তিন পরিস্থিতি নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ফিলিস্তিনে হাসপাতালে হামলায় ৮শ’ মানুষ এবং শতশত শিশু মৃত্যুবরণ করেছে। তাদেরকে কবর দেওয়ার জায়গা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে একদিনের শোক ঘোষণা করেছেন, শেখ রাসেল দিবসেও এই বর্বরতার প্রতিবাদ করেছেন। সমস্ত পৃথিবী প্রতিবাদ করেছে, ফ্রান্স থেকে শুরু করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও সেই হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে। শুধু বিএনপি এবং তার মিত্র ‘‘ইসলাম ইসলাম বলা’’ জামায়াত নিশ্চুপ। একটি বৃহৎ শক্তি নাখোশ হতে পারে বলে নিরব থেকে বিএনপি কার্যত এই বর্বরতা, এই শিশুহত্যার পক্ষ অবলম্বন করেছে, ইসরাইলের পক্ষ অবলম্বন করেছে। জনগণ এদের চিনে রাখছে।’
যুব মহিলা লীগ সভাপতি আলেয়া সারোয়ার ডেইজির সভাপতিত্বে সভায় আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদবিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি প্রমুখ। বক্তৃতাপর্ব শেষে মন্ত্রী শিক্ষার্থীদের হাতে মেধাবৃত্তি সনদ তুলে দেন এবং ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে যুব মহিলা লীগের মিছিলে অংশ নেন।