নিজস্ব প্রতিবেদক :
১৮ অক্টোবরের সমাবেশ থেকে বিএনপি ঢাকা অবরোধের কর্মসূচি দিতে পারে বলে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অবরোধ করলে বিএনপি পালাবার পথ পাবে না। শাপলা চত্বর থেকেও করুণ পরিণতি হবে বিএনপির।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে যুবলীগের যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিতে শাপলা চত্বরের কথা স্মরণ করিয়ে তিনি বলেন, শাপলা চত্বরে থেকে কী হলো শেষ রাতে? পালিয়ে গেলো না? আমি বলতে চাই না, আরও করুণ পরিণতি হবে বিএনপির। শেখ হাসিনা মাথা নত করেন না, আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করেন না। বিএনপির পরিণতি শাপলা চত্বরের চেয়েও খারাপ হবে।
ঢাকা অবরোধ করতে বিএনপি সারাদেশ থেকে নেতাকর্মী জড়ো করেছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, সারাদেশ থেকে লোক এনে শহরে জড়ো করছে বিএনপি। তারা ঢাকা অবরোধ করতে চায়। আমরাও প্রস্তুত আছি। অবরোধ করলে বিএনপি অবরুদ্ধ হয়ে যাবে, বিএনপিকে অবরোধ করা হবে।
বিএনপি নেতাকর্মীদের তিনি বলেন, (ঢাকায়) লুকিয়ে ঢুকছো, চুরি করে ঢুকছো? এরপর পালানোর পথ পাবে না। শাপলা চত্বরে কী হয়েছিল শেষ রাতে? পালিয়ে গেলো না? আমি বলতে চাই না। আরও করুণ পরিণতি হবে বিএনপির।
বিএনপিকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, চুরি করে এসে ঢাকায় আত্মীয়-স্বজনের বাসায় জড়ো হচ্ছে, অতিরিক্ত কাপড় আনতে বলেছেন ফখরুল। তখন আমরা কি ললিপপ খাবো? আমরাও বসে থাকবো না। ১৮ অক্টোবর আমরাও বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে জমায়েত করবো। আজ যা এসেছে, ওইদিন আরও বেশি আসবে।
তিনি বলেন, খেলা হবে, ছাড় দেবো না, ফখরুল। ডিসেম্বরের চেয়েও কড়া খেলা হবে। আওয়ামী লীগের অ্যাকশন, যুবলীগের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘হাওয়া থেকে পাওয়া, ফখরুল বলে পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন আন্দোলনে নাকি বিএনপিকে সাহস যোগাচ্ছে? আমরা এটা জানি না, এ খবর হাছা নাকি মিছা? মিথ্যা কথা আর কত বলবা, ফখরুল?
তিনি বলেন, পশ্চিমা বিশ্বের যারা বাংলাদেশে এসেছে, যারা আমাদের সঙ্গে কথা বলেছে, যারা বিদেশে কথা বলেছে, তারা বলেছে বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন তারা করে না। এ কথা আমেরিকাও বলেছে, এ কথা ইউরোপও বলেছে। ফখরুল কোথা থেকে মিছা, আজগুবি খবর নিয়ে এলো।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল সাহস পাচ্ছে বিদেশ থেকে। আমরা সাহস পাচ্ছি দেশের জনগণের কাছ থেকে। বিদেশি সমীক্ষা বলছে, বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ লোক আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে। আমরা সাহস পাচ্ছি, বাংলাদেশের জনগণের সমর্থনে আমরা সাহস পাচ্ছি। আমরা কাউকে ভয় পাই না। যতক্ষণ জনগণ সঙ্গে আছে ততক্ষণ ভয় নেই।
যুবলীগের নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা সিটির খবর রাখেন? ১৮ (অক্টোবর) তারিখ সামনে রেখে মির্জা ফখরুল…বিএনপি ডিসেম্বর মাসের (২০২২) মতো তাদের নেতা-কর্মীদের সারা বাংলাদেশ থেকে ঢাকায় আনতে শুরু করেছে। হোটেলগুলোতে সিট খালি নাই। সব সিট তারা বুক করে ফেলেছে। ঢাকা শহরে নতুন বাড়ি হচ্ছে, খালি ফ্ল্যাট আছে, সব তারা বুক করে ফেলেছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আবার গত বছরের ডিসেম্বর মাসের মতো সরকার পতনের স্বপ্ন দেখছেন বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘ফখরুলের আন্দোলন, বিএনপির আন্দোলন ভুয়া। বিএনপিই হচ্ছে ভুয়া।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল হাওয়া থেকে পাওয়া আজগুবি খবর ছড়াচ্ছেন; তাদের প্রতি নাকি পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন আছে, তাদের নাকি সাহস যোগাচ্ছে। অথচ সত্য-মিথ্যা আমরা কেউ জানি না। পশ্চিমারা বলেছে, নির্বাচনে তারা কোনো দলকে সমর্থন করে না। মির্জা ফখরুল আর কত মিথ্যা বলবেন। গতবার টাকার বস্তা নিয়ে আন্দোলন করেছিলেন, সেই আন্দোলন সফল হয়নি। আন্দোলন গোলাপবাগ মাঠের গর্তে চলে গেছে।
বিএনপি চুরি করে ঢাকা শহরে প্রবেশ করছে অভিযোগ করে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, চুরি করে এসে ঢাকায় আত্মীয়-স্বজনের বাসায় জড়ো হচ্ছে। ফখরুল বলেছেন, অতিরিক্ত কাপড় আনতে। ক্ষমতা দখল করার জন্য। তো আমরা কী দাঁড়িয়ে ললিপপ খাবো? আমরাও প্রস্তুত আছি। অবরোধ করলে বিএনপি অবরোধ হয়ে যাবে। বিএনপিকে অবরোধ করা হবে। এখন চুরি করে ঢুকছো। এরপর পালাবার পথ পাবা না। ১৮ অক্টোবর আমরাও বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে জমায়েত করব। আজ যা এসেছে, ওইদিন আরও বেশি আসবে।
তিনি বলেন, ফখরুল সাহস পাচ্ছে বিদেশ থেকে। আমরা বাংলাদেশের জনগণের সমর্থন থেকে সাহস পাচ্ছি না। শেখ হাসিনার মতো সহসী নেতার নেতৃত্বের জন্য সাহস পাচ্ছি। আমরা কাউকে ভয় পাই না। যতক্ষণ জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে, ততক্ষণ কোনও ভয় নেই। বাংলাদেশের মানুষ আমাদের সঙ্গে আছে। থাকবে।
কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিএনপি চুরি করে প্রবেশ করছে। আমরা কি বসে বসে ললিপপ খাব? যুবলীগ, ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ সবাই প্রস্তুত আছি। এবার অবরোধ করলে বিএনপিই অবরোধ হয়ে যাবে। পালাবার পথ পাবে না। শেখ হাসিনা কারো কাছে মাথা নত করেন না। আল্লাহ ছাড়া তিনি কাউকে ভয় পান না।
বিএনপিকে মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ প্রস্তুত আছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরাও প্রস্তুত আছি। অবরোধ করলে বিএনপি অবরোধ হয়ে যাবে। এখন চুরি করে ঢুকছ। পরে পালাবার সময় পাবা না।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আমরা সাহস পাচ্ছি শেখ হাসিনার মতো সাহসী নেতার নেতৃত্বে। আমরা কাউকে ভয় পাই না। যতক্ষণ জনগণ আমাদের পক্ষে আছে, আল্লাহও আমাদের পক্ষে আছেন। কারণ আমরা সত্যের পক্ষে আছি।
সমাবেশ মঞ্চে নেতাদের উপস্থিতি বেশি দেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, কর্মীরা শৃঙ্খলা মানে না। নেতারা মানে না। নেতারা সব এলোমেলো। কিছু দেখতে পাচ্ছি, এরা কবে যুবলীগ করছে আমি জানি না। ১৮ তারিখ যেন শৃঙ্খলা থাকে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা জনগণের সমর্থন থেকে সাহস পাচ্ছি। জনগণ যতক্ষণ সঙ্গে আছে, ততক্ষণ ভয় নেই। আমরা ন্যায় ও নীতির পক্ষে আছি।
তিনি বলেন, পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন নাকি বিএনপির আন্দোলনে সাহস যোগাচ্ছে। মিথ্যা কথা আর কত বলবে। পশ্চিমা বিশ্বের যারা বাংলাদেশে এসেছে, যারা আমাদের সঙ্গে কথা বলেছে বিদেশে বলেছে, দেশে বলেছে, তারা বলেছে, বাংলাদেশের নির্বাচনে তারা কোনও রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না। এ কথা আমেরিকা বলেছে। এ কথা ইউরোপও বলেছে। ফখরুল হাওয়া থেকে মিছা আজগুবি খবর। খেলা হবে। ছাড় দেবো না। ডিসেম্বরে এর চেয়ে কড়া খেলা হবে। এখন চলছে কোয়ার্টার ফাইনাল। আগামী মাসে হবে সেমি ফাইনাল। জানুয়ারিতে গিয়ে হবে ফাইনাল খেলা। খেলা হবে। ভোট চোরাদের বিরুদ্ধে। অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে। লুটপাটের বিরুদ্ধে। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। ফাউল করলে লালকার্ড। রেডি হয়ে আছে।
যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দীর সঞ্চালনায় যুব সমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান নিখিল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।