Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইলিশের দাম নির্ধারণ মৎস্য মন্ত্রণালয়ের কাজ নয় : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ইলিশের উৎপাদনের কাজে মৎস্য মন্ত্রণালয় জড়িত কিন্তু দামের ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এজন্য (ইলিশের) উচ্চ দামের জন্য আমরা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারি না।

বুধবার (১১ অক্টোবর) প্রধান প্রজনন মৌসুমে ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৩’ বাস্তবায়ন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ইলিশ উৎপাদনে খরচ নেই কিন্তু দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে কেন? সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, উৎপাদন আমাদের কাজ, আর এর বাজার ব্যবস্থাপনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের। আমরা শুধু উৎপাদনের কাজ করে থাকি। বিক্রির বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দায়িত্বশীল।

তিনি আরও বলেন, ইলিশ আহরণে সরকার অর্থায়ন করে থাকে। গবেষণা কার্যক্রম ও বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। বাজার ব্যবস্থাপনায় যারা জড়িত তারা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে।

ইলিশ উৎপাদনে কোনো ঘাটতি নেই, তারপরও ইলিশের দাম এতো বেশি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইলিশ উৎপাদনে আলাদা কোনো ব্যয় নেই। কিন্ত ইলিশ আহরণ ও সংরক্ষণ করার জন্য ব্যয়ের পরিমাণটা কম না। সরকার কিন্তু এক্ষেত্রে প্রণোদনা দিচ্ছে, যারা ইলিশ আহরণে আমাদের সহায়তা করে তাদের ভিজিএফ থেকে সাহায্য করা হচ্ছে। যারা ইলিশ আহরণ করে তাদের নৌ-যান ব্যবহার করতে হয়, জাল ব্যবহার করতে হয়, শ্রমিক নিয়োগ করতে হয়। মাছ আহরণের পর তারা যেখানে মজুত করে অবতরণকেন্দ্রে মাছ নিয়ে আসার পর সেখান থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়া করে বরফ দেওয়া থেকে শুরু করে কয়েক দফা স্থান পরিবর্তন হওয়ায় যারা মুনাফা লাভ করেন তারা বিভিন্ন স্তরে স্তরে লাভবান হন।

রেজাউল করিম বলেন, আমার মনে হয়, তারা অধিক লাভবান হওয়ার কারণে ইলিশের দাম যে সহনীয় থাকা উচিত, তার চেয়ে বেশি দেখা যায়।

ইলিশের অস্বাভাবিক দাম নিয়ে প্রশ্ন উঠলে মন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার কারণে ইলিশের দাম বেশি। এ ক্ষেত্রে বাজার ব্যবস্থার সমস্যা রয়েছে। ভোক্তা অধিকার, প্রতিযোগিতা কমিশন ব্যবস্থা এ বিষয়ে নেবে। তবে দায় নিতে চায় না মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ব্যবসায়ীদের ইলিশ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ, বাজারজাতে খরচ আছে। কয়েক স্তরে মুনাফার কারণে দাম বেড়েছে।

প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, এ ক্ষেত্রে বাজার ব্যববস্থাপনার সঙ্গে যারা জড়িত, প্রতিযোগিতা কমিশন, ভোক্তা অধিকারের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত আছেন আমরা বিভিন্ন সময় তাদের তাগিদও দিয়েছি। ইতোমধ্যে তারা কিছু কাজও করছেন।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আরও বেশি তৎপরতার সঙ্গে করে বাজার ব্যবস্থাপনাকে একেবারে মাছ আহরণের কেন্দ্র থেকে শুরু করে বিপণন পর্যন্ত আরও কঠোর নজরদারি, দেখভাল করা হলে আমার বিশ্বাস ইলিশের দামকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা সম্ভব।

মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয়ের কাজ যারা মৎস্য আহরণ করে, তারা আহরণ বন্ধ থাকাকালীন সময় তাদের খাবারের ব্যবস্থা আমরা করে দেই। যারা নৌকা নিয়ে মাছ ধরেন অনেক সময় তাদের নৌকা সরবরাহ করা হয়। অনেক সময় তাদের জাল সরবরাহ করছি। অনেক সময় বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য আমরা গরু, ভেড়া, ছাগল, মুরগি, হাঁস দিচ্ছি। যাতে ওই সময় তাদের বিকল্প কর্মসংস্থান হয়। আমরা গবেষণা করে ইলিশের অভয়াশ্রম কীভাবে করা যায় সেটি করছি। বাজার ব্যবস্থাপানাটা কোনোভাবেই মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জব ডিস্ক্রিপশনের মধ্যে আসে না। আমরা উৎপাদন ও আহরণের সঙ্গে জড়িতদের সহায়তা করা, ভর্তুকি দেওয়ার বিষয়ে কার্পণ্য করি না।

তিনি বলেন, চলতি বছর বিগত বছরের চেয়ে ইলিশের আকারও বৃদ্ধি পেয়েছে, ইলিশের প্রাচুর্যতায় জেলেদের মুখে হাসি ফুটেছে। জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষার চলমান কার্যক্রমসমূহ এভাবেই বাস্তবায়ন করা হলে সারাবছর ইলিশের প্রাপ্যতা নিশ্চিত হবে। এ কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়নে সরকারি প্রচেষ্টার পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং আপামর জনগণ বিশেষ করে মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের আন্তরিক সহযোগিতা অপরিহার্য।

তিনি আরো বলেন, ইলিশ এখন শুধু আমাদের জাতীয় সম্পদই নয়, ইলিশ এখন কূটনীতির অংশে পরিণত হয়েছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে দুর্গাপূজায় সীমিত পরিসরে ইলিশ রপ্তানি হয়ে থাকে, যা প্রতিবেশি দেশের কাছে আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে এবং দুই দেশের বাণিজ্যিকসহ কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

মন্ত্রী বলেন, ২০১৯-২০ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত ৫ হাজার ৫৪১ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি করা হয়েছে, যা মোট ইলিশ উৎপাদনের মাত্র দশমিক ৫ ভাগেরও কম, যা থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৩৯ হাজার কোটি টাকা। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৩ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির জন্য অনুমোদন দিয়েছে, এর মধ্যে গত ১০ অক্টোবর পর্যন্ত ৬০৯ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি হয়েছে, যা থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৬২ লাখ মার্কিন ডলার (প্রায় ৬৮ কোটি ২০ লাখ টাকা)।

শ ম রেজাউল বলেন, সর্বশেষ ২০২২ সালে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের আওতায় ২ হাজার ৬২টি মোবাইল কোর্ট, ১০ হাজার ৮২১টি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ৩১.৪১ মেট্রিক টন ইলিশ, ৯১৯.৮৫ লাখ মিটার নিষিদ্ধ জাল জব্দ এবং ২ হাজার ৯০৮টি মামলা দায়েরের মাধ্যমে ২ হাজার ১০৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও ৪৭.৩২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এছাড়া জব্দকৃত মালামাল নিলামে বিক্রয় করে ২২ লাখ ১১ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়েছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সফলভাবে বাস্তবায়নের হওয়ায় গত বছর ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকরণের ২২ দিনে প্রায় ৫২ শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছাড়তে সক্ষম হয়েছে। ফলে গত বছর প্রায় চার লাখ ৫ হাজার ৫১৫ কেজি ডিম উৎপাদিত হয়েছে, যা থেকে প্রায় ৪০ হাজার ২৭৬ কোটি জাটকা ইলিশ যুক্ত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

ইলিশের দাম নির্ধারণ মৎস্য মন্ত্রণালয়ের কাজ নয় : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০২:১৩:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ইলিশের উৎপাদনের কাজে মৎস্য মন্ত্রণালয় জড়িত কিন্তু দামের ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এজন্য (ইলিশের) উচ্চ দামের জন্য আমরা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারি না।

বুধবার (১১ অক্টোবর) প্রধান প্রজনন মৌসুমে ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৩’ বাস্তবায়ন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ইলিশ উৎপাদনে খরচ নেই কিন্তু দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে কেন? সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, উৎপাদন আমাদের কাজ, আর এর বাজার ব্যবস্থাপনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের। আমরা শুধু উৎপাদনের কাজ করে থাকি। বিক্রির বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দায়িত্বশীল।

তিনি আরও বলেন, ইলিশ আহরণে সরকার অর্থায়ন করে থাকে। গবেষণা কার্যক্রম ও বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। বাজার ব্যবস্থাপনায় যারা জড়িত তারা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে।

ইলিশ উৎপাদনে কোনো ঘাটতি নেই, তারপরও ইলিশের দাম এতো বেশি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইলিশ উৎপাদনে আলাদা কোনো ব্যয় নেই। কিন্ত ইলিশ আহরণ ও সংরক্ষণ করার জন্য ব্যয়ের পরিমাণটা কম না। সরকার কিন্তু এক্ষেত্রে প্রণোদনা দিচ্ছে, যারা ইলিশ আহরণে আমাদের সহায়তা করে তাদের ভিজিএফ থেকে সাহায্য করা হচ্ছে। যারা ইলিশ আহরণ করে তাদের নৌ-যান ব্যবহার করতে হয়, জাল ব্যবহার করতে হয়, শ্রমিক নিয়োগ করতে হয়। মাছ আহরণের পর তারা যেখানে মজুত করে অবতরণকেন্দ্রে মাছ নিয়ে আসার পর সেখান থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়া করে বরফ দেওয়া থেকে শুরু করে কয়েক দফা স্থান পরিবর্তন হওয়ায় যারা মুনাফা লাভ করেন তারা বিভিন্ন স্তরে স্তরে লাভবান হন।

রেজাউল করিম বলেন, আমার মনে হয়, তারা অধিক লাভবান হওয়ার কারণে ইলিশের দাম যে সহনীয় থাকা উচিত, তার চেয়ে বেশি দেখা যায়।

ইলিশের অস্বাভাবিক দাম নিয়ে প্রশ্ন উঠলে মন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার কারণে ইলিশের দাম বেশি। এ ক্ষেত্রে বাজার ব্যবস্থার সমস্যা রয়েছে। ভোক্তা অধিকার, প্রতিযোগিতা কমিশন ব্যবস্থা এ বিষয়ে নেবে। তবে দায় নিতে চায় না মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ব্যবসায়ীদের ইলিশ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ, বাজারজাতে খরচ আছে। কয়েক স্তরে মুনাফার কারণে দাম বেড়েছে।

প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, এ ক্ষেত্রে বাজার ব্যববস্থাপনার সঙ্গে যারা জড়িত, প্রতিযোগিতা কমিশন, ভোক্তা অধিকারের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত আছেন আমরা বিভিন্ন সময় তাদের তাগিদও দিয়েছি। ইতোমধ্যে তারা কিছু কাজও করছেন।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আরও বেশি তৎপরতার সঙ্গে করে বাজার ব্যবস্থাপনাকে একেবারে মাছ আহরণের কেন্দ্র থেকে শুরু করে বিপণন পর্যন্ত আরও কঠোর নজরদারি, দেখভাল করা হলে আমার বিশ্বাস ইলিশের দামকে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসা সম্ভব।

মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয়ের কাজ যারা মৎস্য আহরণ করে, তারা আহরণ বন্ধ থাকাকালীন সময় তাদের খাবারের ব্যবস্থা আমরা করে দেই। যারা নৌকা নিয়ে মাছ ধরেন অনেক সময় তাদের নৌকা সরবরাহ করা হয়। অনেক সময় তাদের জাল সরবরাহ করছি। অনেক সময় বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য আমরা গরু, ভেড়া, ছাগল, মুরগি, হাঁস দিচ্ছি। যাতে ওই সময় তাদের বিকল্প কর্মসংস্থান হয়। আমরা গবেষণা করে ইলিশের অভয়াশ্রম কীভাবে করা যায় সেটি করছি। বাজার ব্যবস্থাপানাটা কোনোভাবেই মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জব ডিস্ক্রিপশনের মধ্যে আসে না। আমরা উৎপাদন ও আহরণের সঙ্গে জড়িতদের সহায়তা করা, ভর্তুকি দেওয়ার বিষয়ে কার্পণ্য করি না।

তিনি বলেন, চলতি বছর বিগত বছরের চেয়ে ইলিশের আকারও বৃদ্ধি পেয়েছে, ইলিশের প্রাচুর্যতায় জেলেদের মুখে হাসি ফুটেছে। জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষার চলমান কার্যক্রমসমূহ এভাবেই বাস্তবায়ন করা হলে সারাবছর ইলিশের প্রাপ্যতা নিশ্চিত হবে। এ কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়নে সরকারি প্রচেষ্টার পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং আপামর জনগণ বিশেষ করে মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের আন্তরিক সহযোগিতা অপরিহার্য।

তিনি আরো বলেন, ইলিশ এখন শুধু আমাদের জাতীয় সম্পদই নয়, ইলিশ এখন কূটনীতির অংশে পরিণত হয়েছে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে দুর্গাপূজায় সীমিত পরিসরে ইলিশ রপ্তানি হয়ে থাকে, যা প্রতিবেশি দেশের কাছে আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে এবং দুই দেশের বাণিজ্যিকসহ কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

মন্ত্রী বলেন, ২০১৯-২০ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত ৫ হাজার ৫৪১ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি করা হয়েছে, যা মোট ইলিশ উৎপাদনের মাত্র দশমিক ৫ ভাগেরও কম, যা থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৩৯ হাজার কোটি টাকা। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৩ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির জন্য অনুমোদন দিয়েছে, এর মধ্যে গত ১০ অক্টোবর পর্যন্ত ৬০৯ মেট্রিক টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি হয়েছে, যা থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৬২ লাখ মার্কিন ডলার (প্রায় ৬৮ কোটি ২০ লাখ টাকা)।

শ ম রেজাউল বলেন, সর্বশেষ ২০২২ সালে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের আওতায় ২ হাজার ৬২টি মোবাইল কোর্ট, ১০ হাজার ৮২১টি অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে ৩১.৪১ মেট্রিক টন ইলিশ, ৯১৯.৮৫ লাখ মিটার নিষিদ্ধ জাল জব্দ এবং ২ হাজার ৯০৮টি মামলা দায়েরের মাধ্যমে ২ হাজার ১০৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও ৪৭.৩২ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। এছাড়া জব্দকৃত মালামাল নিলামে বিক্রয় করে ২২ লাখ ১১ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করা হয়েছে।

মন্ত্রী আরও বলেন, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান সফলভাবে বাস্তবায়নের হওয়ায় গত বছর ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকরণের ২২ দিনে প্রায় ৫২ শতাংশ মা ইলিশ ডিম ছাড়তে সক্ষম হয়েছে। ফলে গত বছর প্রায় চার লাখ ৫ হাজার ৫১৫ কেজি ডিম উৎপাদিত হয়েছে, যা থেকে প্রায় ৪০ হাজার ২৭৬ কোটি জাটকা ইলিশ যুক্ত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নাহিদ রশীদ, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খন্দকার মাহবুবুল হকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।