Dhaka বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রান তাড়ার রেকর্ড গড়ে শ্রীলঙ্কাকে হারালো পাকিস্তান

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ১১:৪১:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর ২০২৩
  • ১৯৮ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

ওয়ানডে বিশ্বকাপে এতদিন সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ডটি ছিল আয়ারল্যান্ডের। ২০১১ বিশ্বকাপে ৩২৯ রান তাড়া করে তারা ইংল্যান্ড বধের ইতিহাস গড়েছিল। ভারতের বিশ্বকাপে এবার সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস গড়লো পাকিস্তান।

কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাবিক্রমার সেঞ্চুরিতে ৩৪৪ রানের শক্ত সংগ্রহ দাঁড় করায় শ্রীলঙ্কা। বিশ্বকাপ ইতিহাসে এতো রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড ছিল না, তাই লক্ষ্যটা পাকিস্তানের কঠিনই ছিল বটে।

তবে আব্দুল্লাহ শফিক ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের সেঞ্চুরিতে বেশ দারুণ এক জবাব দেয় তারা। একইসঙ্গে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডটাও নিজের করে নিল বাবর আজম দল।

হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) শ্রীলঙ্কাকে ৬ উইকেটে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় পেল পাকিস্তান।

লঙ্কানদের দেওয়া ৩৪৫ রানের লক্ষের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে ধাক্কা খায় পাকিস্তান। ওপেনিংয়ে ফখর জামানের বদলি এদিন খেলতে নামে আবদুল্লাহ শফিক। কিন্তু অন্য প্রান্তের নিয়মি ওপেনার ইমাম উল হক ছিলেন এদিন পুরোপুরি ব্যর্থ। ম্যাচের ৪র্থ ওভারেই মাত্র ১২ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় তাকে মাধুশাঙ্কার বলে আউট হয়ে।

দলের অধিনায়কের উপর ছিল অনেক বড় প্রত্যাশা। সেটি মেটাতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন বাবর আজম। ৮ম ওভারে ১৫ বলে ১০ রান করে তিনিও মাধুশাঙ্কার শিকার হন। এরপরেই দলের হাল ধরেন আবদুল্লাহ শফিক ও উইকেটকিপার মোহাম্মদ রিজওয়ান।

শুরুর ধাক্কা সামলে দুইজনই আস্তে আস্তে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন জয়ের বন্দরে। ২০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১১০ রান করে তোলে পাকিস্তান প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দিয়ে। এরপরেই দুই ব্যাটসম্যান মারমুখী ভূমিকায় আবির্ভূত হন। এরপরের দশ ওভারে এই দুই ব্যাটার মিলে করেন ৭২ রান।

৩২তম ওভারে মাধুশাঙ্কার বলে চার মেরে নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিটি পেয়ে যান আবদুল্লাহ শফিক। ১০৩ বলে ১০ চার ও ৩ ছক্কায় ১১৩ রান করে পাথিরানার বলে হেমন্তর দুর্দান্ত এক ক্যাচে আউট হন শফিক। ভেঙে যায় ১৭৬ রানের দুর্দান্ত জুটিটি।

শফিকের আউটের পর সৌদ শাকিলকে নিয়ে দলকে জয়ের দিকে আগাতে থাকেন রিজওয়ান। শফিকের পর তিনিও তুলে নেন বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ও ওয়ানডেতে নিজের ৩য় সেঞ্চুরি। ৩০ বলে ৩১ রান করে থিকশানার বলে আউট হন সৌদ শাকিল।

তবে ইফতিখারকে সঙ্গে নিয়ে দলকে ঠিকই জয়ের বন্দরে পুঁছান রিজওয়ান। পাকিস্তান পায় ৬ উইকেটের স্বস্তির জয়। রিজওয়ান ১২১ বলে ১৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন। লঙ্কানদের হয়ে ৬০ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন দিলশান মাদুশাঙ্কা। একটি করে নিয়েছেন মাহিশ থিকশানা ও মাথিশা পাথিরানা।

এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কার হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে আসেন পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশাল পেরেরা। তবে শুরুটা ভালো হয়নি লঙ্কানদের। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১.৪ ওভারে রানের খাতা খোলার আগে ফিরেন কুশল পেরেরা। হাসান আলীর বলে মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নিয়েছেন তিনি।

দ্বিতীয় উইকেটে মাঠে নামেন কুশল মেন্ডিস। পাথুম নিশাঙ্কা নিয়ে পাকিস্তান বোলারদের ওপর তান্ডব চালাতে থাকেন কুশাল। একই সঙ্গে রানের চাকা সচল রেখে অর্ধশতকের দেখা পান নিশাঙ্কা। ফিফটির পরে অবশ্য আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ৬১ বলে ৫১ করেন তিনি। নিশাঙ্কা আউট হলে উইকেটে আসা সাদিরা সামারাবিক্রমাকে নিয়ে ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে থাকেন মেন্ডিস।

দেখেশুনে খেলে চাপ কাটিয়ে ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতরান পূর্ণ করেন তিনি। সেঞ্চুরি করার কিছুক্ষণ পরই আউট হয়েছেন তিনি। যাওয়া আগে ৭৭ বলে ১২২ রানের ইনিংস খেলেছেন এই ডানহাতি ব্যাটার। এরপর মাঠে নামেন চারিথ আসালঙ্কা। তিনিও অবশ্য উইকেটে এসে থিতু পারেননি। দলীয় ২২৯ রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। পরে পাঁচে ব্যাট করতে নামা ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে সঙ্গে নিয়ে লঙ্কানদের রানের চাকা সচল রাখেন সাদিরা।

তবে ৬৫ রানের জুটি গড়ে দলীয় ২৯৪ রানে ধনাঞ্জয়া আউট হলে ভাঙে এই জুটি। এরপর ২২ গজে ব্যাট করতে আসেন লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকা। তবে বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি তিনিও। দলীয় ৩২৪ রানে ১২ করে আউট হন তিনি। তবে একপাশ আগলে রেখে রানের চাক সচল রেখে নিজের শতক তুলে নেন সাদিরা।

তবে সেঞ্চুরি করে উইকেটে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। দলীয় ৩৩৫ রানে আউট হন তিন, যাওয়া আগে ৮৯ বলে ১০৮ রানের ইনিংস খেলেন। শেষ পর্যন্ত সাদিরার শতকে নির্ধারিত ৫০ ওভারের ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৪৪ রানের সংগ্রহ পায় দাসুন শানকার দল।

পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন হাসান। ১০ ওভারে ৭১ রান দিয়ে এই উইকেটগুলো নেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাত্র ৭ ইনিংসে এই পেসার এখন পর্যন্ত নেনে ২১ উইকেট! হারিস রউফ ১০ ওভারে ৭৪ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। শাহীন আফ্রিদি ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। ৯ ওভারে ৬৬ রান দিয়ে ১টি উইকেট নেন তিনি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নেপালে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা নিরাপদে আছেন : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রান তাড়ার রেকর্ড গড়ে শ্রীলঙ্কাকে হারালো পাকিস্তান

প্রকাশের সময় : ১১:৪১:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ অক্টোবর ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : 

ওয়ানডে বিশ্বকাপে এতদিন সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ডটি ছিল আয়ারল্যান্ডের। ২০১১ বিশ্বকাপে ৩২৯ রান তাড়া করে তারা ইংল্যান্ড বধের ইতিহাস গড়েছিল। ভারতের বিশ্বকাপে এবার সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস গড়লো পাকিস্তান।

কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামারাবিক্রমার সেঞ্চুরিতে ৩৪৪ রানের শক্ত সংগ্রহ দাঁড় করায় শ্রীলঙ্কা। বিশ্বকাপ ইতিহাসে এতো রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড ছিল না, তাই লক্ষ্যটা পাকিস্তানের কঠিনই ছিল বটে।

তবে আব্দুল্লাহ শফিক ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের সেঞ্চুরিতে বেশ দারুণ এক জবাব দেয় তারা। একইসঙ্গে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ডটাও নিজের করে নিল বাবর আজম দল।

হায়দরাবাদের রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) শ্রীলঙ্কাকে ৬ উইকেটে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় পেল পাকিস্তান।

লঙ্কানদের দেওয়া ৩৪৫ রানের লক্ষের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে ধাক্কা খায় পাকিস্তান। ওপেনিংয়ে ফখর জামানের বদলি এদিন খেলতে নামে আবদুল্লাহ শফিক। কিন্তু অন্য প্রান্তের নিয়মি ওপেনার ইমাম উল হক ছিলেন এদিন পুরোপুরি ব্যর্থ। ম্যাচের ৪র্থ ওভারেই মাত্র ১২ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় তাকে মাধুশাঙ্কার বলে আউট হয়ে।

দলের অধিনায়কের উপর ছিল অনেক বড় প্রত্যাশা। সেটি মেটাতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন বাবর আজম। ৮ম ওভারে ১৫ বলে ১০ রান করে তিনিও মাধুশাঙ্কার শিকার হন। এরপরেই দলের হাল ধরেন আবদুল্লাহ শফিক ও উইকেটকিপার মোহাম্মদ রিজওয়ান।

শুরুর ধাক্কা সামলে দুইজনই আস্তে আস্তে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন জয়ের বন্দরে। ২০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১১০ রান করে তোলে পাকিস্তান প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দিয়ে। এরপরেই দুই ব্যাটসম্যান মারমুখী ভূমিকায় আবির্ভূত হন। এরপরের দশ ওভারে এই দুই ব্যাটার মিলে করেন ৭২ রান।

৩২তম ওভারে মাধুশাঙ্কার বলে চার মেরে নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিটি পেয়ে যান আবদুল্লাহ শফিক। ১০৩ বলে ১০ চার ও ৩ ছক্কায় ১১৩ রান করে পাথিরানার বলে হেমন্তর দুর্দান্ত এক ক্যাচে আউট হন শফিক। ভেঙে যায় ১৭৬ রানের দুর্দান্ত জুটিটি।

শফিকের আউটের পর সৌদ শাকিলকে নিয়ে দলকে জয়ের দিকে আগাতে থাকেন রিজওয়ান। শফিকের পর তিনিও তুলে নেন বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ও ওয়ানডেতে নিজের ৩য় সেঞ্চুরি। ৩০ বলে ৩১ রান করে থিকশানার বলে আউট হন সৌদ শাকিল।

তবে ইফতিখারকে সঙ্গে নিয়ে দলকে ঠিকই জয়ের বন্দরে পুঁছান রিজওয়ান। পাকিস্তান পায় ৬ উইকেটের স্বস্তির জয়। রিজওয়ান ১২১ বলে ১৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন। লঙ্কানদের হয়ে ৬০ রানে দুটি উইকেট নিয়েছেন দিলশান মাদুশাঙ্কা। একটি করে নিয়েছেন মাহিশ থিকশানা ও মাথিশা পাথিরানা।

এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কার হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে আসেন পাথুম নিশাঙ্কা ও কুশাল পেরেরা। তবে শুরুটা ভালো হয়নি লঙ্কানদের। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১.৪ ওভারে রানের খাতা খোলার আগে ফিরেন কুশল পেরেরা। হাসান আলীর বলে মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ তুলে বিদায় নিয়েছেন তিনি।

দ্বিতীয় উইকেটে মাঠে নামেন কুশল মেন্ডিস। পাথুম নিশাঙ্কা নিয়ে পাকিস্তান বোলারদের ওপর তান্ডব চালাতে থাকেন কুশাল। একই সঙ্গে রানের চাকা সচল রেখে অর্ধশতকের দেখা পান নিশাঙ্কা। ফিফটির পরে অবশ্য আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ৬১ বলে ৫১ করেন তিনি। নিশাঙ্কা আউট হলে উইকেটে আসা সাদিরা সামারাবিক্রমাকে নিয়ে ব্যাট হাতে ঝড় তুলতে থাকেন মেন্ডিস।

দেখেশুনে খেলে চাপ কাটিয়ে ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতরান পূর্ণ করেন তিনি। সেঞ্চুরি করার কিছুক্ষণ পরই আউট হয়েছেন তিনি। যাওয়া আগে ৭৭ বলে ১২২ রানের ইনিংস খেলেছেন এই ডানহাতি ব্যাটার। এরপর মাঠে নামেন চারিথ আসালঙ্কা। তিনিও অবশ্য উইকেটে এসে থিতু পারেননি। দলীয় ২২৯ রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। পরে পাঁচে ব্যাট করতে নামা ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে সঙ্গে নিয়ে লঙ্কানদের রানের চাকা সচল রাখেন সাদিরা।

তবে ৬৫ রানের জুটি গড়ে দলীয় ২৯৪ রানে ধনাঞ্জয়া আউট হলে ভাঙে এই জুটি। এরপর ২২ গজে ব্যাট করতে আসেন লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকা। তবে বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি তিনিও। দলীয় ৩২৪ রানে ১২ করে আউট হন তিনি। তবে একপাশ আগলে রেখে রানের চাক সচল রেখে নিজের শতক তুলে নেন সাদিরা।

তবে সেঞ্চুরি করে উইকেটে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। দলীয় ৩৩৫ রানে আউট হন তিন, যাওয়া আগে ৮৯ বলে ১০৮ রানের ইনিংস খেলেন। শেষ পর্যন্ত সাদিরার শতকে নির্ধারিত ৫০ ওভারের ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৪৪ রানের সংগ্রহ পায় দাসুন শানকার দল।

পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন হাসান। ১০ ওভারে ৭১ রান দিয়ে এই উইকেটগুলো নেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাত্র ৭ ইনিংসে এই পেসার এখন পর্যন্ত নেনে ২১ উইকেট! হারিস রউফ ১০ ওভারে ৭৪ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। শাহীন আফ্রিদি ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। ৯ ওভারে ৬৬ রান দিয়ে ১টি উইকেট নেন তিনি।