নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ফের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তাকে সপ্তম তলার কেবিন ৭২০১ থেকে চতুর্থ তলার সিসিইউ ৪২১৯ নম্বর কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে আরও তিনদফা তাকে কেবিন থেকে সিসিইউতে নেয়া হয়। কয়েক ঘণ্টা পর ফের তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়।
হাসপাতালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং পুত্রবধূ শর্মিলা রহমান সিঁথি উপস্থিত আছেন।
মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, লিভার সিরোসিসের কারণে ৭৮ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর পেটে পানি চলে আসছে অনবরত। পেটের পানি অপসারণের জন্য তাকে কেবিন থেকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। পানি অপসারণের পর ফের তাকে কেবিনে নেয়া হয়।
বিএনপি প্রধানকে এর আগেও কয়েকবার সিসিইউতে নেওয়া হয়েছিল। সর্বশেষ গত ২৯ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ২টার দিকে তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। কয়েক ঘণ্টা সিসিইউতে রাখার পর তাকে আবার কেবিনে নেওয়া হয়।
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার ও হৃদ্রোগে ভুগছেন। গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়।
গত ১৩ জুন রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সে সময় পাঁচ দিন পর তিনি বাসায় ফেরেন।
গত ৯ আগস্ট রাতে আবারও অসুস্থ হলে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোট তিন দফায় তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়।
খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানাতে গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড। সেখানে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ৭৮ বছর বয়সী গুরুতর অসুস্থ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার লিভার দেশে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব নয়। ফলে তাকে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু তার লিভার সিরোসিসের কারণে খালেদা জিয়ার কিডনি, হৃদ্যন্ত্র, ফুসফুসের জটিলতা বেড়েই চলেছে। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।
খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে কারাগারে গিয়েছিলেন। দেশে করোনা মহামারি শুরুর পর পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তাকে নির্বাহী আদেশে ‘সাময়িক মুক্তি’ দেয় সরকার। এরপর কয়েক দফা তার দণ্ডাদেশ স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়।
অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে একাধিকবার চেষ্টা করা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি।