স্পোর্টস ডেস্ক :
বিশ্বকাপ শুরুর আগে মাঠের বাইরের খবরে উত্তপ্ত ছিল দেশের ক্রিকেট অঙ্গন। সেই প্রভাব বিশ্বকাপ দলেও পড়বে বলে ধারণা করেছিল অনেকে। তবে বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে তা কিছুই চোখে পড়েনি। দাপুটে জয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করলো টাইগাররা।
বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে সাকিব আল হাসানের দল। এই দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সামনে থেকে। বল হাতে নিয়েছে মূল্যবান তিনটি উইকেট। শনিবার (৭ অক্টোবর) ধর্মশালায় জিতে আফগানদের ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ।
ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু করলেও টাইগারদের দাপুটে বোলিংয়ে মাত্র ১৫৭ রানে অলআউট হয় আফগানরা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। সাকিব ও মিরাজ নেন ৩টি করে উইকেট।
১৫৭ রানের ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম দুই ওভারে ১৫ রান তুলে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন দুই টাইগার ওপেনার লিটন-তামিম। তবে এরপরই ঘটেছে ছন্দপতন। রান আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন জুনিয়র তামিম। আউট হওয়ার আগে ১৩ বলে ১ বাউন্ডারিতে ৫ রান করেন তরুণ এই ব্যাটার। তামিমের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন ফর্মের তুঙ্গে থাকা মিরাজ।
ইনিংসের সপ্তম ওভারে ফজলহক ফারুকির বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন আরেক ওপেনার লিটন দাস। আউট হওয়ার আগে ১৮ বলে ২টি চারের সাহায্যে ১৩ রান করেন এই ওপেনার। এরপর উইকেটে এসে মিরাজের সাথে জুটি গড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত। আফগান বোলারদের বাজে বল পেলেই বাউন্ডারি মেরেছেন মিরাজ। ৫৮ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন তিনি। অন্যপ্রান্তে পরিস্থিতি বুঝে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করেন শান্ত। দু’জনে মিলে ১২৯ বলে গড়েন ৯৭ রানের জুটি। ৭৩ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৫৭ রান করা মিরাজকে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন নাভিন উল হক।
এরপর ক্রিজে এসে ইনিংস বড় করতে পারেননি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। দারুণ এক শট খেলেও সাকিব ধরা পড়েন বাউন্ডারি লাইনে। ফেরার আগে অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ১৪ রান। তবে অপর প্রান্তে থাকা শান্ত ৮০ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৬ষ্ঠ ফিফটি স্পর্শ করেন। পরের ওভারে নাভিনকে ব্যাক টু ব্যাক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৯২ বল আগেই নিশ্চিত করেন বাংলাদেশের ৬ উইকেটের জয়। শান্ত অপরাজিত থাকেন ৫৯ রানে, মুশফিক ২ রানে।
এর আগে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা বেশ ভালোই করেছিলেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ এবং ইব্রাহিম জাদরান। টাইগার বোলারদের দেখেশুনে খেলে স্কোরবোর্ডে রান তুলেছেন দ্রুত। এই দুই আফগান ওপেনারদের বিপক্ষে সুবিধা করে ওঠতে পারছিলেন না তাসকিন, শরিফুল, মুস্তাফিজরা।
এরপর নবম ওভারে বল হাতে আজ নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসেই ব্রেক থ্রু এনে দেন টাইগার অধিনায়ক। তার করা দ্বিতীয় বলে ২২ রান করে সাজঘরে ফিরেন ইব্রাহিম। ২৫ বলে ৩ চার এবং ১ ছয়ে ২২ রান করে এই আফগান ওপেনার সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৪৭ রানের ওপেনিং জুটি।
ইব্রাহিম ফিরলে ক্রিজে গুরবাজের সঙ্গী হন রহমত শাহ। দুজন মিলে দেখেশুনে খেলে আবার এগিয়ে যাচ্ছিলেন বড় জুটি গড়ার দিকে। জুটি গড়ে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৩৬ রান। তবে ষোলতম ওভারে বোলিংয়ে এসেই ফের আঘাত হানেন সাকিব। ওভারের প্রথম বলেই লিটনের ক্যাচে পরিণত হন রহমত। সাজঘরে ফেরার আগে ২৫ বলে করেছেন ১৮ রান।
এদিকে এক প্রান্তে যাওয়া আসার খেলা চলতে থাকলেও অপরপ্রান্তে ধরে খেলছিলেন আফগান ওপেনার গুরবাজ। টাইগার বোলারদের দেখেশুনে খেলে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ব্যক্তিগত অর্ধ শতকের দিকে। তবে মুস্তাফিজের বলে তানজিদ তামিমেদ দুর্দান্ত ক্যাচ হয়ে ফিরে গেছেন ৪৭ রান করেই। এর আগের ওভারে ৩৮ বলে ১৮ রান করা আফগান অধিনায়ক হাসমতউল্লাহর উইকেট তুলে নিয়েছিলেন মেহেদী মিরাজ। এরপর ২৯ তম ওভারে বোলিংয়ে এসে নাজিবুল্লাহ জাদরানকে বোল্ড আউট করেছেন সাকিব।
এরপরে আর আফগানদের দলের হাল ধরতে পারেননি কেউই। মিরাজের স্পিন জালে ব্যর্থ হয়েছেন রশিদ, মুজিবরা। বাংলাদেশের হয়ে আজ সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন সাকিব এবং মিরাজ।