Dhaka সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুড়িগ্রামে ৫ বছরেও শেষ করতে পারেনি সেতু নির্মাণকাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পরপর তিন দফা সময় বাড়িয়েও কুড়িগ্রাম সোনাহাট স্থলবন্দর সড়কের সোনাহাট সেতুর নির্মাণ কাজের শেষ হয়নি। পাঁচ বছরে মাত্র ৩৫ শতাংশ কাজ হয়েছে। এতে বন্দরে পণ্য আমদানি-রফতানি বিঘ্নিত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে মাত্র ৩৫ শতাংশ কাজ হলেও সেতু নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকে শুধু তাগাদা দেওয়ার মাঝেই সীমাবদ্ধ রয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। ফলে সরকারি সংস্থার সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি আর নানা অজুহাতের কারণে প্রায় ৫ বছরেও সোনাহাট সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেনি। সেতুর ১৩টি পিলারের মধ্যে মাত্র ৫টি পিলারের কাজ শেষ হয়েছে। কবে নাগাদ এই সেতুর কাজ শেষ হবে তা কারওই জানা নেই।

দুধকুমার নদের ওপর ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট বেইলি সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে অনেক আগেই। তারপরও এই সেতু দিয়েই পারাপার করা হচ্ছে সোনাহাট স্থল বন্দরের পাথর, কয়লাসহ অন্য পণ্যবোঝাই যানবাহন।

২০১৮ সালের ২ অক্টোবর ২৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে দুধকুমার নদের ওপর ৬৪৫ মিটার পিসি গার্ডার সেতুসহ ২.৩২ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক ও একটি এক্সললোড কন্ট্রোল স্টেশন নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদন দেয় সড়ক বিভাগ। কাজটি বাস্তবায়ন করার কথা ছিল ২০২১ সালের ৩০ জুন। প্রকল্পটি বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের নাম এমএম বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড।

অন্যদিকে জরাজীর্ণ বেইলি সেতুর প্রায় পাশঘেঁষে দক্ষিণে নদের দুই তীরে দাঁড়িয়ে আছে কয়েকটি পিলার। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে সেতু নির্মাণের জন্য কাজ শুরু করে পিলারগুলো বানানো হলেও তারপর আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। দেখা নেই নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টদেরও।

ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট সেতু এলাকার বাসিন্দা আফজল হোসেন জানান, প্রায় চার-পাঁচ বছর ধরে থেমে আছে সেতু তৈরির কাজ। পাশের বেইলি ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ। দ্রুত নির্মাণাধীন সেতুর কাজ শেষ করা প্রয়োজন।

এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতু দিয়ে ১০ টনের বেশি পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ট্রাক লোড-আনলোডে বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। বন্দরের আমদানি-রফতানি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় নির্মাণাধীন সেতুটির কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি ব্যবসায়ী নেতাসহ বন্দর কর্মকর্তাদের।

সোনাহাট স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা ব্যবসায়ীরা বারবার বলার পরও সেতু নির্মাণে সংশ্লিষ্টদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। ব্রিটিশ আমলের এই বেইলি সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে সোনাহাট স্থলবন্দরটিই বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা সরকারকে রাজস্ব দিচ্ছি। আমরা চাই দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হোক।

সোনাহাট স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মোহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, সোনাহাটের জরাজীর্ণ বেইলি সেতুটির কারণে বন্দরের আমদানি-রফতানি বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

কুড়িগ্রাম সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নির্মাণাধীন সোনাহাট সেতু নির্মাণে নকশা, ভূমি অধিগ্রহণে কিছুটা জটিলতা ছিল। পাশাপাশি ঠিকাদারের হেয়ালিপনায় সেতুটি নির্মাণ সময়সাপেক্ষ হয়ে পড়েছে। তবে আমরা ঠিকাদারকে তাগাদা দিয়েছি দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য। ২০২৫ সালের জুনে নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে জানান সড়ক বিভাগের এই কর্মকর্তা।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের ছাদ থেকে পড়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু

কুড়িগ্রামে ৫ বছরেও শেষ করতে পারেনি সেতু নির্মাণকাজ

প্রকাশের সময় : ০১:০৭:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

পরপর তিন দফা সময় বাড়িয়েও কুড়িগ্রাম সোনাহাট স্থলবন্দর সড়কের সোনাহাট সেতুর নির্মাণ কাজের শেষ হয়নি। পাঁচ বছরে মাত্র ৩৫ শতাংশ কাজ হয়েছে। এতে বন্দরে পণ্য আমদানি-রফতানি বিঘ্নিত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে মাত্র ৩৫ শতাংশ কাজ হলেও সেতু নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকে শুধু তাগাদা দেওয়ার মাঝেই সীমাবদ্ধ রয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ। ফলে সরকারি সংস্থার সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি আর নানা অজুহাতের কারণে প্রায় ৫ বছরেও সোনাহাট সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেনি। সেতুর ১৩টি পিলারের মধ্যে মাত্র ৫টি পিলারের কাজ শেষ হয়েছে। কবে নাগাদ এই সেতুর কাজ শেষ হবে তা কারওই জানা নেই।

দুধকুমার নদের ওপর ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট বেইলি সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে অনেক আগেই। তারপরও এই সেতু দিয়েই পারাপার করা হচ্ছে সোনাহাট স্থল বন্দরের পাথর, কয়লাসহ অন্য পণ্যবোঝাই যানবাহন।

২০১৮ সালের ২ অক্টোবর ২৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে দুধকুমার নদের ওপর ৬৪৫ মিটার পিসি গার্ডার সেতুসহ ২.৩২ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক ও একটি এক্সললোড কন্ট্রোল স্টেশন নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদন দেয় সড়ক বিভাগ। কাজটি বাস্তবায়ন করার কথা ছিল ২০২১ সালের ৩০ জুন। প্রকল্পটি বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের নাম এমএম বিল্ডার্স ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড।

অন্যদিকে জরাজীর্ণ বেইলি সেতুর প্রায় পাশঘেঁষে দক্ষিণে নদের দুই তীরে দাঁড়িয়ে আছে কয়েকটি পিলার। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে সেতু নির্মাণের জন্য কাজ শুরু করে পিলারগুলো বানানো হলেও তারপর আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। দেখা নেই নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টদেরও।

ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট সেতু এলাকার বাসিন্দা আফজল হোসেন জানান, প্রায় চার-পাঁচ বছর ধরে থেমে আছে সেতু তৈরির কাজ। পাশের বেইলি ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ। দ্রুত নির্মাণাধীন সেতুর কাজ শেষ করা প্রয়োজন।

এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতু দিয়ে ১০ টনের বেশি পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ট্রাক লোড-আনলোডে বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। বন্দরের আমদানি-রফতানি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় নির্মাণাধীন সেতুটির কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি ব্যবসায়ী নেতাসহ বন্দর কর্মকর্তাদের।

সোনাহাট স্থলবন্দরের আমদানি-রফতানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা ব্যবসায়ীরা বারবার বলার পরও সেতু নির্মাণে সংশ্লিষ্টদের কোনো মাথা ব্যথা নেই। ব্রিটিশ আমলের এই বেইলি সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে সোনাহাট স্থলবন্দরটিই বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা সরকারকে রাজস্ব দিচ্ছি। আমরা চাই দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হোক।

সোনাহাট স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মোহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, সোনাহাটের জরাজীর্ণ বেইলি সেতুটির কারণে বন্দরের আমদানি-রফতানি বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

কুড়িগ্রাম সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নির্মাণাধীন সোনাহাট সেতু নির্মাণে নকশা, ভূমি অধিগ্রহণে কিছুটা জটিলতা ছিল। পাশাপাশি ঠিকাদারের হেয়ালিপনায় সেতুটি নির্মাণ সময়সাপেক্ষ হয়ে পড়েছে। তবে আমরা ঠিকাদারকে তাগাদা দিয়েছি দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য। ২০২৫ সালের জুনে নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে জানান সড়ক বিভাগের এই কর্মকর্তা।