নিজস্ব প্রতিবেদক :
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ যে পথে চলছে তাতে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে। অক্টোবরেই আওয়ামী লীগের পতন হবে।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আমান উল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে মামলা ও সাজার প্রতিবাদে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ৯০’র ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য এবং সাবেক ছাত্রদল নেতাদের উদ্যোগে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ যে পথে চলছে তাতে প্রতিটি সেক্টর তারা (আওয়ামী লীগ) ধ্বংস করে ফেলছে। এখন দেশে শান্তি নেই। সব জায়গায় অরাজকতা চলছে। বিচার বিভাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা এসেছে এটা লজ্জার। বিচার ব্যবস্থার উপর মানুষ আস্থা হারাচ্ছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বসে বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে না গেলে কী হবে। সব দেশের সরকারপ্রধানরা বক্তব্য দিয়ে বাড়ি চলে গেছেন, উনি ওখানে বসে কী করছেন।
আমির খসরু বলেন, উনার মন্ত্রীরা, সরকারি কর্তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে না গেলে কী হবে। আপনার যুক্তরাষ্ট্র যাওয়া নিয়ে চিন্তা নয়, দেশের ১৮ কোটি মানুষের জন্য চিন্তার বিষয়। এসব দেশের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি ব্যবসা হয়। গার্মেন্টের বড় রপ্তানি হয় যুক্তরাষ্ট্রে। একজন গার্মেন্টকর্মীর তো চাকরি চলে যাবে। এর সঙ্গে অর্থনৈতিক ও মানবিক সম্পর্ক।’
ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হলে এখন যে সাজা স্থগিত করে তাকে বাসায় থাকার অনুমতি দিয়েছি, তা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। আবার তাকে জেলে যেতে হবে, আদালতে যেতে হবে। আদালতের কাছ থেকে তাকে অনুমতি নিতে হবে।
এ বক্তব্যের প্রসঙ্গে বিএনপি এই নেতা বলেন, এই প্রত্যাখ্যানের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা না দেওয়ার দায়িত্ব নিজের হাতে নিয়েছেন। শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা তাকে তার পরিণতির দিকে নিয়ে যাবে।
আমির খসরু আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের ভোট চুরির প্রকল্প হিসেবে খালেদা জিয়া, আমান উল্লাহ আমানসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী জেলে আছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য ক্রমে খারাপের দিকে। তাকে মুক্তি দিচ্ছে না, বাইরের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বাঁচতে চায়। আর এক মুহূর্ত অপেক্ষা করতে রাজি নয় তারা। আমরা যখন রাস্তায় চলাফেরা করি তখন আমাদের জিজ্ঞেস করে- আর কয়দিন? বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোরও ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গেছে। ভিসানীতি ঘোষণা হয়েছে, চালুও হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি এসে বাংলাদেশের বিভিন্ন লোকজনের সাথে মিটিং করে ব্রাসেলসে ফিরে গিয়ে বলেছে, তারা বাংলাদেশে পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। কারণ এ দেশে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই।
দেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে এ দেশের গণতন্ত্রকে বাঁচানোর জন্য।
বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, মার্কিন ভিসানীতিতে বিচার বিভাগকে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। বিশ্বের কোনো দেশে দেখেছেন বিচারকদের ভিসানীতির আওতায় এনেছে?
তিনি বলেন, বাংলাদেশের গার্মেন্টসের সবচেয়ে বড় ব্যবসা হয় আমেরিকায়। তারপর ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সেই ব্যবসা চলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এই শিল্প ধ্বংস হয়ে যাওয়ার অবস্থা হচ্ছে।
আমীর খসরু বলেন, আমাদের জেলে যাওয়ার কারণ একটাই- যে কারণে খালেদা জিয়া জেলে আছেন। হাজার হাজার নেতাকর্মী জেলে আছেন। যে কারণে হাজার হাজার মামলা। অনেকের শাস্তি হয়েছে। আরো অনেককে শাস্তি দিয়ে এবং জনগণকে নির্বাচনের বাইরে রেখে আবারো ক্ষমতায় যেতে চায় আওয়ামী লীগ।
বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের সঞ্চালনা আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব এবং ডাকসুর সাবেক নেতৃবৃন্দ। এ সময় ছাত্রদলের সাবেক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।