Dhaka রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় রূপপুরে পৌঁছাল ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান

ঈশ্বরদী উপজেলা প্রতিনিধি : 

কড়া নিরাপত্তায় দেশের ইতিহাসের সর্ববৃহৎ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল বা ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান রূপপুরে পৌঁছেছে।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা ১৬ মিনিটে ইউরেনিয়ামের গাড়িবহর রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকরা দুই দেশের জাতীয় পতাকা ও বেলুন উড়িয়ে ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়ি বহরকে স্বাগত জানিয়েছে।

ঈশ্বরদীর পাকশীর হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বেলাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে রাশিয়া থেকে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে আসে ইউরেনিয়ামের এ চালান। বিশেষ নিরাপত্তাবলয়ে ঢাকা থেকে সড়কপথে এই ইউরেনিয়ামের চালান শুক্রবার ভোরে রূপপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথে গাজীপুরে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে কিছুক্ষণ থেমে থাকে। পরে সেখান থেকে ৭টার দিকে গাড়িবহর পাবনার দিকে রওনা দেয়।

পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সি জানান, পাবনা-ঢাকা রুটে অনেক সময় যানজটের সৃষ্টি হয়। এজন্য যানজট নিয়ন্ত্রণে ও নিরাপত্তার স্বার্থে শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে বাস চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তবে আরিচা-কাজিরহাট হয়ে বিকল্প ব্যবস্থায় যান চলাচল করতে পারবে।

ইউরেনিয়াম নিয়ে আসার জন্য সড়কপথে ব্যাপক নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা। ঢাকা থেকে রূপপুর পর্যন্ত সড়কে ফাঁকে ফাঁকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে পুলিশের তল্লাশি চৌকি বসানো হয়। পাবনা-ঢাকা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এ ইউরেনিয়াম পরিবহনে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিশেষ নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে নাটোরের বনপাড়া ও পাবনার ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া হয়ে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় পৌঁছায় ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান।

এদিকে, বাস চলাচল বন্ধের এই সিদ্ধান্তে পাবনা থেকে ঢাকাগামী প্রতিটি গাড়ির টিকিট বিক্রি বৃহস্পতিবার রাত থেকে বন্ধ ছিল।

পাবনা জেলা মটর মালিক গ্রুপের সভাপতি কাফি সরকার বলেন, প্রশাসনের নির্দেশে আমরা টিকিট বিক্রি বন্ধ রেখেছিলাম। পরে প্রশাসনের অনুমতি পাবার পর বাস চলাচল শুরু করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাশিয়া থেকে ঢাকায় শাহজালাল বিমানবন্দরে আসে ইউরেনিয়ামের প্রথম এই চালান। শুক্রবার রূপপুরে ইউরেনিয়াম এসে পৌঁছালেও রূপপুর প্রকল্পের কর্তৃপক্ষের কাছে আগামী ৫ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে এই ইউরেনিয়াম জ্বালানি হস্তান্তর করবেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশনের মহাপরিচালক রোসাটম আলেক্সি লিখাচেভ।

উল্লেখ্য, দেশের সবচেয়ে আলোচিত ও বড় প্রকল্প পাবনার রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে খরচ হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২২ হাজার ৫২ কোটি ৯১ লাখ ২৭ হাজার টাকা। রাশিয়া থেকে ঋণ সহায়তা পেয়েছে ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২৪ সালের প্রথম দিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র রূপপুর। ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে দ্বিতীয় ইউনিট চালু হতে পারে। দুটি ইউনিটে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

এক বছরে বিএনপির আয় ১৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা : রিজভী

সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় রূপপুরে পৌঁছাল ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান

প্রকাশের সময় : ০২:৩৪:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ঈশ্বরদী উপজেলা প্রতিনিধি : 

কড়া নিরাপত্তায় দেশের ইতিহাসের সর্ববৃহৎ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল বা ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান রূপপুরে পৌঁছেছে।

শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা ১৬ মিনিটে ইউরেনিয়ামের গাড়িবহর রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকরা দুই দেশের জাতীয় পতাকা ও বেলুন উড়িয়ে ইউরেনিয়াম বহনকারী গাড়ি বহরকে স্বাগত জানিয়েছে।

ঈশ্বরদীর পাকশীর হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বেলাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে রাশিয়া থেকে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে আসে ইউরেনিয়ামের এ চালান। বিশেষ নিরাপত্তাবলয়ে ঢাকা থেকে সড়কপথে এই ইউরেনিয়ামের চালান শুক্রবার ভোরে রূপপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথে গাজীপুরে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে কিছুক্ষণ থেমে থাকে। পরে সেখান থেকে ৭টার দিকে গাড়িবহর পাবনার দিকে রওনা দেয়।

পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সি জানান, পাবনা-ঢাকা রুটে অনেক সময় যানজটের সৃষ্টি হয়। এজন্য যানজট নিয়ন্ত্রণে ও নিরাপত্তার স্বার্থে শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে বাস চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তবে আরিচা-কাজিরহাট হয়ে বিকল্প ব্যবস্থায় যান চলাচল করতে পারবে।

ইউরেনিয়াম নিয়ে আসার জন্য সড়কপথে ব্যাপক নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা। ঢাকা থেকে রূপপুর পর্যন্ত সড়কে ফাঁকে ফাঁকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে পুলিশের তল্লাশি চৌকি বসানো হয়। পাবনা-ঢাকা মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এ ইউরেনিয়াম পরিবহনে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিশেষ নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে নাটোরের বনপাড়া ও পাবনার ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া হয়ে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় পৌঁছায় ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান।

এদিকে, বাস চলাচল বন্ধের এই সিদ্ধান্তে পাবনা থেকে ঢাকাগামী প্রতিটি গাড়ির টিকিট বিক্রি বৃহস্পতিবার রাত থেকে বন্ধ ছিল।

পাবনা জেলা মটর মালিক গ্রুপের সভাপতি কাফি সরকার বলেন, প্রশাসনের নির্দেশে আমরা টিকিট বিক্রি বন্ধ রেখেছিলাম। পরে প্রশাসনের অনুমতি পাবার পর বাস চলাচল শুরু করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাশিয়া থেকে ঢাকায় শাহজালাল বিমানবন্দরে আসে ইউরেনিয়ামের প্রথম এই চালান। শুক্রবার রূপপুরে ইউরেনিয়াম এসে পৌঁছালেও রূপপুর প্রকল্পের কর্তৃপক্ষের কাছে আগামী ৫ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে এই ইউরেনিয়াম জ্বালানি হস্তান্তর করবেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশনের মহাপরিচালক রোসাটম আলেক্সি লিখাচেভ।

উল্লেখ্য, দেশের সবচেয়ে আলোচিত ও বড় প্রকল্প পাবনার রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প। এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে খরচ হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২২ হাজার ৫২ কোটি ৯১ লাখ ২৭ হাজার টাকা। রাশিয়া থেকে ঋণ সহায়তা পেয়েছে ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২৪ সালের প্রথম দিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র রূপপুর। ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে দ্বিতীয় ইউনিট চালু হতে পারে। দুটি ইউনিটে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।