Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আগামী নির্বাচনে চুরি করার পথে যারাই পা বাড়াবে, তারা কেউ রেহাই পাবে না : আমীর খসরু

সাভার উপজেলা প্রতিনিধি :

গণতান্ত্রিক দেশগুলো বাংলাদেশের ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে চুরি করার পথে যারাই পা বাড়াবে, তারা কেউ রেহাই পাবে না। বিশ্ব বিবেক, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তারা বাংলাদেশের ওপর কঠিন এবং নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সাভারের আমিনবাজারে ঢাকা জেলা বিএনপি আয়োজিত খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং সরকারের পদত্যাগের দাবিতে সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ২৫ তারিখে এখানে সভা হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু হয়নি। পুলিশ আগের রাতে এখানকার যেই মঞ্চ তা ভেঙে দিয়েছে। পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ছিল, যুবলীগ ছিল, জয়েন্ট অপারেশন। আমি একটা কথা বলতে চাই, আজকে বাংলাদেশের বাহিরে সমস্ত গণতান্ত্রিক দেশগুলো বাংলাদেশের ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে।

আমীর খসরু বলেন, এই যে সভা-সমাবেশ বন্ধ করার প্রক্রিয়া, মঞ্চ ভেঙে দেওয়ার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা জড়িত থাকবেন, রয়েছেন সবকিছুই ডকুমেন্টেড এবং নামসহ রেকর্ড হচ্ছে, কেউ বাদ যাবেন না। শুধু বিদেশিদের নিষেধাজ্ঞা নয়, বাংলাদেশের মানুষের নিষেধাজ্ঞায় পড়বেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বারবার বলা হচ্ছে, এই ভোট চুরির সঙ্গে যারা সরাসরি এবং পরোক্ষভাবে জড়িত থাকবেন, যারা দেখেও না দেখার ভান করছেন তারাও বাদ যাবেন না। সবার বুকেই কাঁপন শুরু হয়ে গেছে। বাইরে দেখান খুব সাহসী, কিন্তু ভেতরে এতো সাহস নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সেলফি তুলেও কোনো কাজ হচ্ছে না মন্তব্য করে আমীর খসরু বলেন, ওয়াশিংটনে জাতিসংঘের সব কাজ শেষে বিশ্বের সব নেতারা বাড়ি চলে গেলেও আমাদের অনির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটনে বসে রয়েছেন। অবস্থা বুঝতে পারছেন, কতটা খারাপ! সেলফি তুলেও এখন কোনো কাজ হচ্ছে না। সেলফি তুলে কতদিন একটু ফুরফুরা মেজাজে ছিলেন, তারপর দেখা গেল স্যাংশন। আওয়ামী লীগ যে ভুয়া, সারা বিশ্ব বুঝে গেছে।

আমীর খসরু বলেন, বারবার বলা হচ্ছে, ভোট চুরির সঙ্গে যারা জড়িত থাকবেন সরাসরি ও পরোক্ষভাবে, এমনকি যারা দেখেও না দেখার ভান করছেন তারাও বাদ যাবেন না। তারা বাইরে অনেক সাহসী, ভেতরে কিন্তু এতো সাহসী না।

নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, পদত্যাগ করতে হবে, নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে, নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য, অংশীদারত্বমূলক নির্বাচন করতে হবে। দেশে একটি নির্বাচিত সরকার হবে, সংসদ হবে, তারা জনগণের কাছে দায়ী থাকবে, জবাবদিহি থাকবে। তার আগে কোনো রক্ষা নেই। এক লাখ কোটি টাকা টাকার ওপরে শুধু বিদেশে পাচার করেছে। সেই টাকার কী হবে?
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, আগামীতে কী করবেন আপনারা? কারও অনুমতি দরকার নেই। আমাদের নেতা তারেক রহমান পরিষ্কারভাবে বলেছেন। তার কথা মেনেই চলবেন। আগামীতে যে কর্মসূচি আসবে, কারও অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। রাজপথ দখল করে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।

আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, স্বৈরাচারের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে প্রতিপক্ষকে হত্যা করা, গুম করা, জেলে পাঠানো। আমরা দেখেছি তারা কত লোককে হত্যা করেছে, গুম করেছে। আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠানোর মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে এই সরকার স্বৈরাচার। তারা জানে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাহিরে থাকলে এই স্বৈরাচার, এই ফ্যাসিস্ট সরকারের ক্ষমতায় থাকা সম্ভব হবে না।
তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টের আরেকটি চরিত্র হচ্ছে মিথ্যা মামলা, গায়েবি মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা। যাতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের মতো করে দেশটা দখল করে বসে থাকতে পারে। আজ তারা বিচার বিভাগকে দখল করেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দখল করেছে, সরকারি কর্মকর্তাদের দখল করেছে।

আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে নিয়ে কী করেছে আজকে সেটি জানা আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশনেত্রীর শারীরিক অবস্থা এমন জায়গায় এসে পৌঁছার কারণ কী? একটা প্রশ্ন কিন্তু আজকে জেগেছে। তাকে বিদেশে যেতে দেওয়া হচ্ছে না কেন? তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হলে জেলে রাখার সময় তাকে কোনো স্লো পয়জনিং করা হয়েছে কিনা বেড়িয়ে আসবে।

 

সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটো।

ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির পরিবার ও কল্যাণ বিষয়ক সহ-সম্পাদক ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু, মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতা, ঢাকা জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ইরফান ইবনে আমান অমি প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

আগামী নির্বাচনে চুরি করার পথে যারাই পা বাড়াবে, তারা কেউ রেহাই পাবে না : আমীর খসরু

প্রকাশের সময় : ১০:২২:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সাভার উপজেলা প্রতিনিধি :

গণতান্ত্রিক দেশগুলো বাংলাদেশের ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে চুরি করার পথে যারাই পা বাড়াবে, তারা কেউ রেহাই পাবে না। বিশ্ব বিবেক, যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তারা বাংলাদেশের ওপর কঠিন এবং নিবিড় পর্যবেক্ষণ করছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সাভারের আমিনবাজারে ঢাকা জেলা বিএনপি আয়োজিত খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং সরকারের পদত্যাগের দাবিতে সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ২৫ তারিখে এখানে সভা হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু হয়নি। পুলিশ আগের রাতে এখানকার যেই মঞ্চ তা ভেঙে দিয়েছে। পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ছিল, যুবলীগ ছিল, জয়েন্ট অপারেশন। আমি একটা কথা বলতে চাই, আজকে বাংলাদেশের বাহিরে সমস্ত গণতান্ত্রিক দেশগুলো বাংলাদেশের ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে।

আমীর খসরু বলেন, এই যে সভা-সমাবেশ বন্ধ করার প্রক্রিয়া, মঞ্চ ভেঙে দেওয়ার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা জড়িত থাকবেন, রয়েছেন সবকিছুই ডকুমেন্টেড এবং নামসহ রেকর্ড হচ্ছে, কেউ বাদ যাবেন না। শুধু বিদেশিদের নিষেধাজ্ঞা নয়, বাংলাদেশের মানুষের নিষেধাজ্ঞায় পড়বেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বারবার বলা হচ্ছে, এই ভোট চুরির সঙ্গে যারা সরাসরি এবং পরোক্ষভাবে জড়িত থাকবেন, যারা দেখেও না দেখার ভান করছেন তারাও বাদ যাবেন না। সবার বুকেই কাঁপন শুরু হয়ে গেছে। বাইরে দেখান খুব সাহসী, কিন্তু ভেতরে এতো সাহস নেই।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সেলফি তুলেও কোনো কাজ হচ্ছে না মন্তব্য করে আমীর খসরু বলেন, ওয়াশিংটনে জাতিসংঘের সব কাজ শেষে বিশ্বের সব নেতারা বাড়ি চলে গেলেও আমাদের অনির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটনে বসে রয়েছেন। অবস্থা বুঝতে পারছেন, কতটা খারাপ! সেলফি তুলেও এখন কোনো কাজ হচ্ছে না। সেলফি তুলে কতদিন একটু ফুরফুরা মেজাজে ছিলেন, তারপর দেখা গেল স্যাংশন। আওয়ামী লীগ যে ভুয়া, সারা বিশ্ব বুঝে গেছে।

আমীর খসরু বলেন, বারবার বলা হচ্ছে, ভোট চুরির সঙ্গে যারা জড়িত থাকবেন সরাসরি ও পরোক্ষভাবে, এমনকি যারা দেখেও না দেখার ভান করছেন তারাও বাদ যাবেন না। তারা বাইরে অনেক সাহসী, ভেতরে কিন্তু এতো সাহসী না।

নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, পদত্যাগ করতে হবে, নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে, নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য, অংশীদারত্বমূলক নির্বাচন করতে হবে। দেশে একটি নির্বাচিত সরকার হবে, সংসদ হবে, তারা জনগণের কাছে দায়ী থাকবে, জবাবদিহি থাকবে। তার আগে কোনো রক্ষা নেই। এক লাখ কোটি টাকা টাকার ওপরে শুধু বিদেশে পাচার করেছে। সেই টাকার কী হবে?
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, আগামীতে কী করবেন আপনারা? কারও অনুমতি দরকার নেই। আমাদের নেতা তারেক রহমান পরিষ্কারভাবে বলেছেন। তার কথা মেনেই চলবেন। আগামীতে যে কর্মসূচি আসবে, কারও অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। রাজপথ দখল করে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।

আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, স্বৈরাচারের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে প্রতিপক্ষকে হত্যা করা, গুম করা, জেলে পাঠানো। আমরা দেখেছি তারা কত লোককে হত্যা করেছে, গুম করেছে। আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠানোর মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে এই সরকার স্বৈরাচার। তারা জানে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাহিরে থাকলে এই স্বৈরাচার, এই ফ্যাসিস্ট সরকারের ক্ষমতায় থাকা সম্ভব হবে না।
তিনি আরও বলেন, স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টের আরেকটি চরিত্র হচ্ছে মিথ্যা মামলা, গায়েবি মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা। যাতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের মতো করে দেশটা দখল করে বসে থাকতে পারে। আজ তারা বিচার বিভাগকে দখল করেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দখল করেছে, সরকারি কর্মকর্তাদের দখল করেছে।

আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে নিয়ে কী করেছে আজকে সেটি জানা আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশনেত্রীর শারীরিক অবস্থা এমন জায়গায় এসে পৌঁছার কারণ কী? একটা প্রশ্ন কিন্তু আজকে জেগেছে। তাকে বিদেশে যেতে দেওয়া হচ্ছে না কেন? তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হলে জেলে রাখার সময় তাকে কোনো স্লো পয়জনিং করা হয়েছে কিনা বেড়িয়ে আসবে।

 

সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটো।

ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরীর সঞ্চালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির পরিবার ও কল্যাণ বিষয়ক সহ-সম্পাদক ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু, মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতা, ঢাকা জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ইরফান ইবনে আমান অমি প্রমুখ।