Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মার্কিন ভিসানীতির আওতায় যারা পড়বেন, তাদের সংখ্যা খুব বেশি নয় : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মার্কিন ভিসানীতির আওতায় যারা পড়বেন, তাদের সংখ্যা খুব বেশি নয় বলে মন্তব্য করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, মার্কিন এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মোটেই চিন্তিত নন তিনি। এসব বিষয় নিয়ে বিএনপি চাপে আছে। আমাদের হারানোর কিছু নেই।

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে গুলশানে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোনো সরকারি কর্মকর্তা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়লে, তা যদি তার কাজের ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা তৈরি করে, তবে মার্কিন প্রশাসনের সাথে সে বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

যে কয়জনের বিরুদ্ধে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে সেটাও যথেষ্ট পরীক্ষা নিরীক্ষা করে, সঠিক তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে মার্কিন প্রশাসন করবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন শাহরিয়ার আলম।

তিনি বলেন, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো অতীতে যেভাবে বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে, ভিসানীতি ঘোষণার পর তাদেরও কিছুটা কৌশলগত পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।

শাহরিয়ার আলম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিধিনিষেধের আওতায় পড়াদের সংখ্যার বিষয়ে আমাদের একটি ধারণা দেওয়া হয়েছে। এখানে নতুন কিছু বলার নেই। এ বিষয়ে কয়েকদিন আগে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমাদের দুদিন আগ থেকে হেডসআপ দেওয়া হয়েছে। আমাদের একটা সংখ্যার ধারণা দেওয়া হয়েছে এটুকু বলতে পারি। তবে সংখ্যাটি বড় নয়, ছোট এটুকু বলতে পারি। এ বিষয়ে আমরা শুরুতে যে প্রতিক্রিয়া দেয়েছিলাম, সেই পরিপ্রেক্ষিতে বলতে চাই-আমরা দেখব প্রত্যাশা করব এটা যেন জুডিশিয়াসলি হয়, আরবিটরি যেন না হয়। এখানেও প্রত্যাশা যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, সেটাও যতেষ্ঠ পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে সঠিক তথ্য-উপাত্তের ভীত্তিতে এটা তারা করছেন। তাদের কনসার্নের জায়গাগুলো আমরা এড্রেস করছি সেই র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞার পর থেকে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারি কেউ যদি ভিসা নীতির আওতায় পড়েন, এটা যদি আমাদের কাজের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করে আমরা ভবিষ্যতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের সঙ্গে নির্দষ্ট ইস্যু নিয়ে পার্টিকুলার ইনডিভিজুয়ালদের নিয়ে কথা বলব। ভিসা নীতি ঘোষণার ফলে যদি আমাদের কাযক্রমে কোনো সমস্যা হয়, কোনো ব্যক্তি বা তার পরিবারের সেগুলো আমরা জানলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলব।

মার্কিন ভিসা নীতিতে বিএনপি-জায়ামাতের শঙ্কা বেশি থাকার কথা মন্তব্য করে শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা এখনও দেখছি, জনগণের ক্ষতি করে বিরোধী দল এক দফা দাবির কথা বলছেন। মার্কিন ভিসা নীতিতে বিএনপি-জায়ামাতের শঙ্কা বেশি থাকার কথা। কারণ তারা বলছেন, নির্বাচনই হতে দেবেন না। আমরা যেটা বলছি, নির্বাচন আইন অনুযায়ী হবে। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যেন নির্বাচন কমিশন করতে পারে এ বিষয়ে সরকার সর্বচ্চ সার্বিক সহায়তা দিয়ে যাবে। আমাদের এ অবস্থান।

নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভিসা নীতি আরোপের বিষয়টি কিভাবে দেখছে সরকার-এমন প্রশ্ন রাখা হয় প্রতিমন্ত্রীর কাছে। জবাবে তিনি বলেন, আমাদের আভ্যন্তরীন বিষয়ে কোনো রাষ্ট্র বা সংস্থার কোনো হস্তক্ষেপ আমরা দেখতে চাই না। এটা লাউড এন্ড ক্লিয়ার। কিন্তু তারা এটা ঘোষণা করেছে,আমরা ভালো স্পিরিট দেখতে পাচ্ছি।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অতীতের মতো বিএনপি-জ্বালাও পোড়াও করলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নেবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, যাদের অতীত রাজনৈতিক ইতিহাস জ্বালাও-পোড়াওর সেক্ষত্রে আইন শূঙ্খলা বাহিনীকে তো বাড়তিসতর্কতা অবলম্বন করতেই হয়। তাদের নীতেতে আছে, কেউ যদি পুলিশের ওপর আক্রমন করে বোমাবাজি করে গাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করে তারা প্রক্রিয়া দেবে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার তারা ব্যবস্থা নেবে।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে নতুন করে কোনো নিষেধাজ্ঞা আসা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি না। নির্বাচনের আগে আর কোনো ধরণের বিবৃতিও আপনারা দেখতে পাবেন না। আমরা পরিস্কারভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছি, এ রকম সেনসেটিভ টাইমে কোনো পদক্ষেপ বা বিবৃতি হস্তক্ষেপ হিসেবে মনে হবে।

গণমাধ্যকে উদ্দেশ্য করে শাহরিয়ার আলম বলেন, আপনারও মনে করছেন, ফের নিষেধাজ্ঞা আসবে। গত দুই বছরে ফের নিষেধাজ্ঞা আসার কোনো কারণ ঘটেছে কি? র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞার নতুন কিছু ঘটেছে যে ফের নতুন নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। এ ধরণের কথা বা ইন্ডিকেশন অভ্যন্তীর রাজনীতিতে আমরা না চাইলেও একটা প্রভাব ফেলতে পারে। এ বোঝাপড়া থেকে আমরা পরিস্কারভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছি, এ ধরণের কাযক্রম থেকে বিরত থাকতে এবং আমরা সে ধরণের কিছু আশ্বাসও পেয়েছি।

বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের ব্যাপারে আজ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে ‘পদক্ষেপ’ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে যাচ্ছেন বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধী দলের সদস্যরা। যদিও এই ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় যারা পড়তে যাচ্ছেন তাদের নাম উল্লেখ করেনি পররাষ্ট্র দপ্তর।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

মার্কিন ভিসানীতির আওতায় যারা পড়বেন, তাদের সংখ্যা খুব বেশি নয় : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ১২:৫০:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

মার্কিন ভিসানীতির আওতায় যারা পড়বেন, তাদের সংখ্যা খুব বেশি নয় বলে মন্তব্য করে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, মার্কিন এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মোটেই চিন্তিত নন তিনি। এসব বিষয় নিয়ে বিএনপি চাপে আছে। আমাদের হারানোর কিছু নেই।

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে গুলশানে নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোনো সরকারি কর্মকর্তা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়লে, তা যদি তার কাজের ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা তৈরি করে, তবে মার্কিন প্রশাসনের সাথে সে বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

যে কয়জনের বিরুদ্ধে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে সেটাও যথেষ্ট পরীক্ষা নিরীক্ষা করে, সঠিক তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে মার্কিন প্রশাসন করবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন শাহরিয়ার আলম।

তিনি বলেন, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো অতীতে যেভাবে বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে, ভিসানীতি ঘোষণার পর তাদেরও কিছুটা কৌশলগত পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।

শাহরিয়ার আলম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বিধিনিষেধের আওতায় পড়াদের সংখ্যার বিষয়ে আমাদের একটি ধারণা দেওয়া হয়েছে। এখানে নতুন কিছু বলার নেই। এ বিষয়ে কয়েকদিন আগে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আমাদের দুদিন আগ থেকে হেডসআপ দেওয়া হয়েছে। আমাদের একটা সংখ্যার ধারণা দেওয়া হয়েছে এটুকু বলতে পারি। তবে সংখ্যাটি বড় নয়, ছোট এটুকু বলতে পারি। এ বিষয়ে আমরা শুরুতে যে প্রতিক্রিয়া দেয়েছিলাম, সেই পরিপ্রেক্ষিতে বলতে চাই-আমরা দেখব প্রত্যাশা করব এটা যেন জুডিশিয়াসলি হয়, আরবিটরি যেন না হয়। এখানেও প্রত্যাশা যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে, সেটাও যতেষ্ঠ পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে সঠিক তথ্য-উপাত্তের ভীত্তিতে এটা তারা করছেন। তাদের কনসার্নের জায়গাগুলো আমরা এড্রেস করছি সেই র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞার পর থেকে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারি কেউ যদি ভিসা নীতির আওতায় পড়েন, এটা যদি আমাদের কাজের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করে আমরা ভবিষ্যতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের সঙ্গে নির্দষ্ট ইস্যু নিয়ে পার্টিকুলার ইনডিভিজুয়ালদের নিয়ে কথা বলব। ভিসা নীতি ঘোষণার ফলে যদি আমাদের কাযক্রমে কোনো সমস্যা হয়, কোনো ব্যক্তি বা তার পরিবারের সেগুলো আমরা জানলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কথা বলব।

মার্কিন ভিসা নীতিতে বিএনপি-জায়ামাতের শঙ্কা বেশি থাকার কথা মন্তব্য করে শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা এখনও দেখছি, জনগণের ক্ষতি করে বিরোধী দল এক দফা দাবির কথা বলছেন। মার্কিন ভিসা নীতিতে বিএনপি-জায়ামাতের শঙ্কা বেশি থাকার কথা। কারণ তারা বলছেন, নির্বাচনই হতে দেবেন না। আমরা যেটা বলছি, নির্বাচন আইন অনুযায়ী হবে। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যেন নির্বাচন কমিশন করতে পারে এ বিষয়ে সরকার সর্বচ্চ সার্বিক সহায়তা দিয়ে যাবে। আমাদের এ অবস্থান।

নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভিসা নীতি আরোপের বিষয়টি কিভাবে দেখছে সরকার-এমন প্রশ্ন রাখা হয় প্রতিমন্ত্রীর কাছে। জবাবে তিনি বলেন, আমাদের আভ্যন্তরীন বিষয়ে কোনো রাষ্ট্র বা সংস্থার কোনো হস্তক্ষেপ আমরা দেখতে চাই না। এটা লাউড এন্ড ক্লিয়ার। কিন্তু তারা এটা ঘোষণা করেছে,আমরা ভালো স্পিরিট দেখতে পাচ্ছি।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অতীতের মতো বিএনপি-জ্বালাও পোড়াও করলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নেবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, যাদের অতীত রাজনৈতিক ইতিহাস জ্বালাও-পোড়াওর সেক্ষত্রে আইন শূঙ্খলা বাহিনীকে তো বাড়তিসতর্কতা অবলম্বন করতেই হয়। তাদের নীতেতে আছে, কেউ যদি পুলিশের ওপর আক্রমন করে বোমাবাজি করে গাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করে তারা প্রক্রিয়া দেবে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার তারা ব্যবস্থা নেবে।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে নতুন করে কোনো নিষেধাজ্ঞা আসা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি না। নির্বাচনের আগে আর কোনো ধরণের বিবৃতিও আপনারা দেখতে পাবেন না। আমরা পরিস্কারভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছি, এ রকম সেনসেটিভ টাইমে কোনো পদক্ষেপ বা বিবৃতি হস্তক্ষেপ হিসেবে মনে হবে।

গণমাধ্যকে উদ্দেশ্য করে শাহরিয়ার আলম বলেন, আপনারও মনে করছেন, ফের নিষেধাজ্ঞা আসবে। গত দুই বছরে ফের নিষেধাজ্ঞা আসার কোনো কারণ ঘটেছে কি? র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞার নতুন কিছু ঘটেছে যে ফের নতুন নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। এ ধরণের কথা বা ইন্ডিকেশন অভ্যন্তীর রাজনীতিতে আমরা না চাইলেও একটা প্রভাব ফেলতে পারে। এ বোঝাপড়া থেকে আমরা পরিস্কারভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছি, এ ধরণের কাযক্রম থেকে বিরত থাকতে এবং আমরা সে ধরণের কিছু আশ্বাসও পেয়েছি।

বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের ব্যাপারে আজ শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে ‘পদক্ষেপ’ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে যাচ্ছেন বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, ক্ষমতাসীন দল এবং বিরোধী দলের সদস্যরা। যদিও এই ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় যারা পড়তে যাচ্ছেন তাদের নাম উল্লেখ করেনি পররাষ্ট্র দপ্তর।