নিজস্ব প্রতিবেদক :
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে দেশের দুই বিভাগে দুই দিনের রোডমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপির তিন অঙ্গ সহযোগী সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু।
তিনি জানান, সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর রংপুর থেকে সৈয়দপুর দশমাইল হয়ে দিনাজপুর, ১৭ সেপ্টেম্বর বগুড়া থেকে সান্তাহার-নওগাঁ হয়ে রাজশাহী পর্যন্ত রোডমার্চ করবে বিএনপির এই তিন সংগঠন। এই কর্মসূচি সফলে আগের মতো সাংবাদিকসহ দেশের সবার সহযোগীতা কামনা করছি।
টুকু বলেন, আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে আপাতত দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করলাম। আপনাদের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এই কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়াও বিএনপির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
তিনি আরও জানান, পরবর্তী ধাপের কর্মসূচি পরে ঘোষণা করা হবে। ধারাবাহিক কর্মসূচির মাধ্যমে এই সরকারের পতন হবে, ইনশাআল্লাহ।
টুকু বলেন, রংপুরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে রোডমার্চ শুরু হবে। মাঝপথে কয়েকটি পথসভা হবে। দিনাজপুরে সমাবেশের মাধ্যমে প্রথম দিনের কর্মসূচি শেষ হবে। একইভাবে দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি বগুড়া থেকে শুরু হয়ে রাজশাহীতে গিয়ে শেষ হবে।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে টুকু বলেন, রাতে ভোট দিয়ে সরকার গঠন করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেয়েছে নিশিরাতের সরকার।
তিনি বলেন, তারেক রহমানসহ ৫০ লাখ নেতার বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দিয়ে নির্যাতন করছে এই সরকার। আমাদের প্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজকে উন্নত চিকিৎসা পাচ্ছেন না। তিনি হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
এসময় আরও অভিযোগ করে টুকু বলেন রাত পর্যন্ত কোর্ট চলে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে। তাই আজ আমরা তিন সংগঠন রাজপথে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছি।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, ‘আমরা এর আগে দেশবাঁচাতে তারণ্যের সমাবেশ করেছিলাম। দেশে চার কোটি তরুণ নতুন ভোটার হয়েছে, তারা গত ১৫ বছরে একবারের জন্যও ভোট দিতে পারেনি। দেশে গণতন্ত্র ও মানুষের বাকস্বাধীনতা নেই।’
তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের মতো ছাত্রী এর আগে দেশে পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে টুকু বলেন, ‘সমগ্র দেশ আজ বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে রয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে যে বিচারক খালাস দিয়ে রায় দিয়েছিলেন, সে পরে দেশে থাকতে পারেনি। আবার রাতে আদালত বসিয়ে সাক্ষ্য নিয়ে সম্প্রতি একটি মামলায় তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। দেশের সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান এবং বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে এমন মেধাবী ছাত্রী পাওয়া যায়নি প্রখ্যাত চিকিৎসক ডা. জুবাইদা রহমানকে সাজা দিয়েছে এই সরকার।’
তিনি বলেন, এভাবে গণতন্ত্র ও বিচারহীনতার মধ্যে দেশ চলতে পারে না। ‘৫২, ৭১ ও ‘৯০’তে যেভাবে তরুণরা একত্রিত হয়ে দাবি আদায় করেছিল, তেমনি আমরা তিন সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল ঐক্যভাবে তরুণ সমাজকে সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিতি ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, যুবদলের যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মামুন প্রমুখ।