Dhaka রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমদানি শুল্কের বকেয়া ৭৬০ কোটি টাকা : অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বর্তমানে আমদানি শুল্কের বকেয়া প্রায় ৭৬০ কোটি ৩০ লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সদস্য হাবিবুর রহমানের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে এ তথ্য জানান তিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন ধরনের আইনি জটিলতার কারণে ক্ষেত্র বিশেষে আমদানি শুল্ক অনাদায়ী হয়ে থাকে। পণ্যচালান খালাসের পর নিয়মিত নিবারণী তৎপরতার অংশ হিসেবে খালাসোত্তর নিরীক্ষা (পোস্ট ক্লিয়ারেন্স অডিট) কার্যক্রম সম্পাদন করা হয় এবং এর মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রে অনাদায়ী বকেয়ার উদ্ভব হয়। শুল্কায়ন সম্পন্ন হলেও সাময়িক অর্থ সংকটের কারণে অনেক সময় পণ্য চালান খালাস না নেওয়ায় আমদানি শুল্ক অনাদায়ী থেকে যায়।

তিনি আরও বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো আমদানির ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়ে বিলম্বে পরিশোধের ভিত্তিতে পণ্য চালান খালাস নেওয়া হয়, পরবর্তীতে পণ্যচালান সংশ্লিষ্ট শুল্ক করাদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ না করলে সেক্ষেত্রে উক্ত চালানের আমদানি শুল্ক অনাদায়ী থেকে যায়। স্থানীয় ও রাজস্ব অডিট অধিদপ্তর কর্তৃক নিরীক্ষা ও সংশ্লিষ্ট কাস্টম হাউস/স্টেশন কর্তৃক পরবর্তী বিচারাদেশের মাধ্যমে ফাঁকিকৃত শুল্ক কর আদায়ের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয় বিধায় আমদানি পর্যায়ে বকেয়া উদঘাটিত হয়।

অনেক সময় আদালতে মামলা চলমান থাকায় আমদানি শুষ্ক অনাদায়ী থেকে যায় জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আদায়ের ব্যাপারে গৃহীত পদক্ষেপ: দি কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯ এ উল্লিখিত বকেয়া আদায়ে বিধি-বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করে অনাদায়ী শুল্ক আদায়ের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।

তিনি আরও বলেন, অনাদায়ী শুল্ক আদায়ের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণের ফলে এ পর্যন্ত ৪ দশমিক ৪৪ কোটি টাকা আদায় হয়েছে এবং অবশিষ্ট রাজস্ব আদায়ের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের ফলে শিগগিরই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। লেনদেনের ভারসাম্য পরিস্থিতির উন্নয়ন ও বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, লেনদেন ভারসাম্য পরিস্থিতির উন্নয়ন ও বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং তা বাস্তবায়ন করছে।

জামালপুর-৫ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘রুগ্ন শিল্পের সমস্যা সমাধানের জন্য ২০০৯ সালে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠিত হয়। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০১০ ও ২০১২ সালে ২৭৯টি রুগ্ন গার্মেন্টস এবং ২০১১ ও ২০১৫ সালে ১০০টি রুগ্ন টেক্সটাইল শিল্পের ঋণ বিলুপ্তের সার্কুলার জারি করে।’

ময়মনসিংহ-১১ আসনের সংসদ সদস্য কাজিম উদ্দিন আহম্মেদের প্রশ্নের অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচিতে কৃষি ও পল্লী ঋণ খাতে ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ঋণ আকারে বিতরণের জন্য ৩৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয়েছে।’

বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গার প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমার ফলে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের মুনাফার হার অধিক সংরক্ষণ করায় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা কমেনি। বর্তমানে বাজারে প্রচলিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী আমানতের ঘোষিত মুনাফার চেয়ে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার আকর্ষণীয় রয়েছে। তাই সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগকারীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই।

সংরক্ষিত নারী আসন-২৮ এর সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তারের এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের তৃতীয় মেয়াদের এ পর্যন্ত কৃষকের কোনো কৃষি ঋণ মওকুফ করা হয়নি। ব্যাংক আমানতকারীদের কাছ থেকে সংগৃহিত অর্থ কৃষকদের মধ্যে কৃষি ঋণ হিসেবে বিতরণ করে থাকে। আমানতকারীদের কাছ থেকে সংগৃহিত অর্থ আমানতকারীদের সুদসহ ফেরত দেওয়া হয়, বিধায় ব্যাংকের পক্ষে কৃষি ঋণ মওকুফ করা সম্ভব হয় না। তবে, ভবিষ্যতে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক বা বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বিতরণ করা কৃষি ঋণ মওকুফের ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো নির্দেশনাপ্রাপ্ত হলে তা বাস্তবায়ন করা হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আমদানি শুল্কের বকেয়া ৭৬০ কোটি টাকা : অর্থমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৭:০৪:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বর্তমানে আমদানি শুল্কের বকেয়া প্রায় ৭৬০ কোটি ৩০ লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সদস্য হাবিবুর রহমানের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে এ তথ্য জানান তিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন ধরনের আইনি জটিলতার কারণে ক্ষেত্র বিশেষে আমদানি শুল্ক অনাদায়ী হয়ে থাকে। পণ্যচালান খালাসের পর নিয়মিত নিবারণী তৎপরতার অংশ হিসেবে খালাসোত্তর নিরীক্ষা (পোস্ট ক্লিয়ারেন্স অডিট) কার্যক্রম সম্পাদন করা হয় এবং এর মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রে অনাদায়ী বকেয়ার উদ্ভব হয়। শুল্কায়ন সম্পন্ন হলেও সাময়িক অর্থ সংকটের কারণে অনেক সময় পণ্য চালান খালাস না নেওয়ায় আমদানি শুল্ক অনাদায়ী থেকে যায়।

তিনি আরও বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো আমদানির ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়ে বিলম্বে পরিশোধের ভিত্তিতে পণ্য চালান খালাস নেওয়া হয়, পরবর্তীতে পণ্যচালান সংশ্লিষ্ট শুল্ক করাদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ না করলে সেক্ষেত্রে উক্ত চালানের আমদানি শুল্ক অনাদায়ী থেকে যায়। স্থানীয় ও রাজস্ব অডিট অধিদপ্তর কর্তৃক নিরীক্ষা ও সংশ্লিষ্ট কাস্টম হাউস/স্টেশন কর্তৃক পরবর্তী বিচারাদেশের মাধ্যমে ফাঁকিকৃত শুল্ক কর আদায়ের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয় বিধায় আমদানি পর্যায়ে বকেয়া উদঘাটিত হয়।

অনেক সময় আদালতে মামলা চলমান থাকায় আমদানি শুষ্ক অনাদায়ী থেকে যায় জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আদায়ের ব্যাপারে গৃহীত পদক্ষেপ: দি কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯ এ উল্লিখিত বকেয়া আদায়ে বিধি-বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করে অনাদায়ী শুল্ক আদায়ের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।

তিনি আরও বলেন, অনাদায়ী শুল্ক আদায়ের জন্য বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণের ফলে এ পর্যন্ত ৪ দশমিক ৪৪ কোটি টাকা আদায় হয়েছে এবং অবশিষ্ট রাজস্ব আদায়ের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের ফলে শিগগিরই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। লেনদেনের ভারসাম্য পরিস্থিতির উন্নয়ন ও বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, লেনদেন ভারসাম্য পরিস্থিতির উন্নয়ন ও বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং তা বাস্তবায়ন করছে।

জামালপুর-৫ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘রুগ্ন শিল্পের সমস্যা সমাধানের জন্য ২০০৯ সালে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠিত হয়। তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০১০ ও ২০১২ সালে ২৭৯টি রুগ্ন গার্মেন্টস এবং ২০১১ ও ২০১৫ সালে ১০০টি রুগ্ন টেক্সটাইল শিল্পের ঋণ বিলুপ্তের সার্কুলার জারি করে।’

ময়মনসিংহ-১১ আসনের সংসদ সদস্য কাজিম উদ্দিন আহম্মেদের প্রশ্নের অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচিতে কৃষি ও পল্লী ঋণ খাতে ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ঋণ আকারে বিতরণের জন্য ৩৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয়েছে।’

বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গার প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমার ফলে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের মুনাফার হার অধিক সংরক্ষণ করায় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের সংখ্যা কমেনি। বর্তমানে বাজারে প্রচলিত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী আমানতের ঘোষিত মুনাফার চেয়ে জাতীয় সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার আকর্ষণীয় রয়েছে। তাই সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগকারীদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই।

সংরক্ষিত নারী আসন-২৮ এর সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তারের এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের তৃতীয় মেয়াদের এ পর্যন্ত কৃষকের কোনো কৃষি ঋণ মওকুফ করা হয়নি। ব্যাংক আমানতকারীদের কাছ থেকে সংগৃহিত অর্থ কৃষকদের মধ্যে কৃষি ঋণ হিসেবে বিতরণ করে থাকে। আমানতকারীদের কাছ থেকে সংগৃহিত অর্থ আমানতকারীদের সুদসহ ফেরত দেওয়া হয়, বিধায় ব্যাংকের পক্ষে কৃষি ঋণ মওকুফ করা সম্ভব হয় না। তবে, ভবিষ্যতে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক বা বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বিতরণ করা কৃষি ঋণ মওকুফের ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো নির্দেশনাপ্রাপ্ত হলে তা বাস্তবায়ন করা হবে।