Dhaka রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজীপুর সিটির মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিলেন জায়েদা খাতুন

  • প্রতিনিধির নাম
  • প্রকাশের সময় : ০৪:৪১:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • ১৯৯ জন দেখেছেন

গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি : 

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত প্রথম নারী মেয়র জায়েদা খাতুন সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) তাঁর দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন। এ উপলক্ষে দুপুরে শহরের বঙ্গতাজ মিলনায়তনে এক অভিষেক অনুষ্ঠান ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এরপর তিনি নগর ভবনে যান। তবে অনুষ্ঠানে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং আওয়ামী লীগের কোনো বড় নেতাকে দেখা যায়নি।

অনুষ্ঠানে মেয়র জায়েদা নগরবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা লাখ লাখ ভোট দিয়ে আমাকে মেয়র নির্বাচিত করেছেন। আমার আগেও আমার ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে মেয়র পদে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছিলেন। এজন্য আমি আমার পরিবারের পক্ষ থেকে আপনাদের শুভেচ্ছা জানাই। আমি নির্বাচিত কাউন্সিলর ও সিটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের অনুরোধ জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, গাজীপুর নগরবাসী আমার উপর যে দায়িত্ব দিয়েছেন সেজন্য আল্লাহর উপর ভরসা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা এবং আমার ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে একটি সুন্দর ও আধুনিক নগর উপহার দেব।

সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আপনারা মাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। মা বলেছেন তার জীবনবাজি রেখে আপনাদের পাশে থাকবেন, সেবা দেবেন। আপনারা জানেন নির্বাচনের প্রচারণার কাজে টঙ্গীতে গেলে তিনি বারবার বাঁধা ও হামলার শিকার হয়েছেন। তারপরও তিনি থেমে যাননি।

তিনি আরও বলেন, কেউ শহরের ক্ষতি করবেন না। এ শহর রক্ষার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি, কষ্ট করেছি। আবারও প্রয়োজন হলে মায়ের সঙ্গে থেকে এ সিটির জন্য কাজ করবো।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএসএম সফিউল আজমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় সাবেক সংসদ সদস্য কাজী মোজাম্মেল হক, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সচিব মো. আব্দুল হান্নানসহ নবনির্বাচিত কাউন্সিলরগণ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকাল ৯টার পর হতেই গাড়িতে চড়ে এমনকি পায়ে হেঁটে নবনির্বাচিত মেয়রের সমর্থকেরা বাদ্য বাজিয়ে নেচেগেয়ে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হতে থাকেন। একপর্যায়ে পুরো এলাকা লোকে লোকারণ্যে হয়ে পড়ে। আনন্দমিছিলের কোলাহলে আশপাশ মুখর হয়ে ওঠে। অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেলে গাজীপুর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সফিউল আজম ও নির্বাচিত কাউন্সিলররা নতুন মেয়রকে ফুলের শুভেচ্ছা জানান।

এরপর মেয়র নগর ভবনে গিয়ে তাঁর আসনে বসেন। এ সময় তাঁর ছেলে জাহাঙ্গীর আলমও পাশে ছিলেন। আগের দিন গতকাল রোববার ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তাঁর দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

মেয়রের সমর্থকেরা বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু ব্যাংকে জামিনদার হয়ে ঋণখেলাপি হওয়ায় জাহাঙ্গীর আলমের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়। এরপর মাকে জয়ী করতে প্রচারণায় নামেন তিনি। তখন জায়েদা খাতুন বলেছিলেন, ছেলের প্রতি নগরবাসীর ভালোবাসা প্রমাণ করার জন্যই তিনি ওই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। নগরবাসী সেই ভালোবাসার প্রমাণ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ২৫ মে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জায়েদা খাতুন নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লা খানের সঙ্গে লড়াইয়ে তিনি ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করে এক চমক সৃষ্টি করেন। ৪৮০টি কেন্দ্রের মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লা পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট আর স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন পেয়েছেন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে গোপনে ধারণ করা জাহাঙ্গীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করেন। পরে তাকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

Tag :
জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

দেশের বিচার ও আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন : শিল্প উপদেষ্টা

গাজীপুর সিটির মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিলেন জায়েদা খাতুন

প্রকাশের সময় : ০৪:৪১:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি : 

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত প্রথম নারী মেয়র জায়েদা খাতুন সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) তাঁর দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন। এ উপলক্ষে দুপুরে শহরের বঙ্গতাজ মিলনায়তনে এক অভিষেক অনুষ্ঠান ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এরপর তিনি নগর ভবনে যান। তবে অনুষ্ঠানে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং আওয়ামী লীগের কোনো বড় নেতাকে দেখা যায়নি।

অনুষ্ঠানে মেয়র জায়েদা নগরবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা লাখ লাখ ভোট দিয়ে আমাকে মেয়র নির্বাচিত করেছেন। আমার আগেও আমার ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে মেয়র পদে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছিলেন। এজন্য আমি আমার পরিবারের পক্ষ থেকে আপনাদের শুভেচ্ছা জানাই। আমি নির্বাচিত কাউন্সিলর ও সিটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের অনুরোধ জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, গাজীপুর নগরবাসী আমার উপর যে দায়িত্ব দিয়েছেন সেজন্য আল্লাহর উপর ভরসা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা এবং আমার ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে একটি সুন্দর ও আধুনিক নগর উপহার দেব।

সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আপনারা মাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন। মা বলেছেন তার জীবনবাজি রেখে আপনাদের পাশে থাকবেন, সেবা দেবেন। আপনারা জানেন নির্বাচনের প্রচারণার কাজে টঙ্গীতে গেলে তিনি বারবার বাঁধা ও হামলার শিকার হয়েছেন। তারপরও তিনি থেমে যাননি।

তিনি আরও বলেন, কেউ শহরের ক্ষতি করবেন না। এ শহর রক্ষার জন্য অনেক চেষ্টা করেছি, কষ্ট করেছি। আবারও প্রয়োজন হলে মায়ের সঙ্গে থেকে এ সিটির জন্য কাজ করবো।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএসএম সফিউল আজমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন সাবেক মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় সাবেক সংসদ সদস্য কাজী মোজাম্মেল হক, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের সচিব মো. আব্দুল হান্নানসহ নবনির্বাচিত কাউন্সিলরগণ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকাল ৯টার পর হতেই গাড়িতে চড়ে এমনকি পায়ে হেঁটে নবনির্বাচিত মেয়রের সমর্থকেরা বাদ্য বাজিয়ে নেচেগেয়ে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হতে থাকেন। একপর্যায়ে পুরো এলাকা লোকে লোকারণ্যে হয়ে পড়ে। আনন্দমিছিলের কোলাহলে আশপাশ মুখর হয়ে ওঠে। অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেলে গাজীপুর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সফিউল আজম ও নির্বাচিত কাউন্সিলররা নতুন মেয়রকে ফুলের শুভেচ্ছা জানান।

এরপর মেয়র নগর ভবনে গিয়ে তাঁর আসনে বসেন। এ সময় তাঁর ছেলে জাহাঙ্গীর আলমও পাশে ছিলেন। আগের দিন গতকাল রোববার ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তাঁর দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।

মেয়রের সমর্থকেরা বলেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমও স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন। কিন্তু ব্যাংকে জামিনদার হয়ে ঋণখেলাপি হওয়ায় জাহাঙ্গীর আলমের প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়। এরপর মাকে জয়ী করতে প্রচারণায় নামেন তিনি। তখন জায়েদা খাতুন বলেছিলেন, ছেলের প্রতি নগরবাসীর ভালোবাসা প্রমাণ করার জন্যই তিনি ওই নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। নগরবাসী সেই ভালোবাসার প্রমাণ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ২৫ মে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জায়েদা খাতুন নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লা খানের সঙ্গে লড়াইয়ে তিনি ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করে এক চমক সৃষ্টি করেন। ৪৮০টি কেন্দ্রের মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লা পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট আর স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন পেয়েছেন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে গোপনে ধারণ করা জাহাঙ্গীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করা হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করেন। পরে তাকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।