Dhaka বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের ওপর চাপ সৃষ্টি, যা অগ্রহণযোগ্য : রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ১০:১৩:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • ১৯১ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অনেক দেশ বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দলের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে যা অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, জাতিসংঘ এবং এর বন্ধুদের ওপর চাপের পরও বাংলাদেশ তার নিজের স্বার্থ রক্ষা করে চলবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে তিনি যৌথ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পর বাংলাদেশ তাদের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার। অনেক ধরনের অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও আমাদের রাজনৈতিক সংলাপ চালিয়ে গেছি দেশটির সঙ্গে।

বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দলের ওপর অনেক দেশের চাপ সৃষ্টি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতিসংঘ এবং এর বন্ধুদেশের চাপের পরও বাংলাদেশ তার নিজের স্বার্থ রক্ষা করে চলবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি।

ল্যাভরভ বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ শিডিউল অনুযায়ী চলছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। বাংলাদেশে এলএনজি, সার, গম রফতানির জন্য আলোচনা চলছে।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে সাপ্লাই-চেইনে সমস্যা হয়েছে সত্যি; তবে রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের সব মালামাল সময়মতো বাংলাদেশে পৌঁছেছে।

রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের মালামালের মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে দুই দেশের স্থানীয় মুদ্রা বিনিময় নিয়ে আলোচনা চলছে আর এর জন্য নিউক্লিয়ার ফুয়েল বাংলাদেশে আসবে অক্টোবরে, জানান রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, রাশিয়া আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করছে। আজকে এই আলোচনার মাধ্যমে আমরা অনেক ইস্যু তুলে এনেছি। আমাদের ইস্যু ছিল, আমাদের রূপপুর পাওয়ার প্ল্যান্ট। আপনারা জেনে খুশি হবে যে এটি মোটামুটি অনটাইম শেষ হবে। আমাদের ইস্যু ছিল রোহিঙ্গা, রোহিঙ্গা ইস্যুতে তারা (রাশিয়া) আমাদের সঙ্গে একাত্ম যে তাদের (রোহিঙ্গাদের) দেশে ফিরে যাওয়া উচিত। এইভাবে আমরা তাদের সহায়তা চেয়েছি।

ড. মোমেন বলেন, আমরা উভয় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বাড়ানোর জন্য কথা বলেছি। আমাদের জন্য অনেক স্কোপ আসছে- ১০০টি ইকোনোমিক জোন, ২৯টি হাইটেক পার্ক- এইগুলোর অ্যাডভান্টেজ যাতে নিতে পারে সে জন্য আমরা অনুরোধ করেছি।

তিনি বলেন, তারা আমাদের বলেছে, তাদের দেশ থেকে আমরা এলএনজি আনতে পারি। তারা আমাদের প্রস্তাব করেছে যে তারা দেশ থেকে আমরা ক্লোরাইড আনতে পারি।

ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, আমাদের ইস্যু ছিল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। আপনারা জেনে খুশি হবেন এটা সময়মতো চালু হবে। আর বাংলাদেশকে দীর্ঘদিন ধরে নবায়নযোগ্য জ্বালানি দেবে রাশিয়া। এমন আশ্বাস পাওয়া গেছে।’

মোমেন বলেন, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে। জানিয়েছি, আমরা যুদ্ধ চাই না। দ্রুত সমাধান চাই।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই ইউক্রেন ওয়ারের কারণে এই ব্যবসা-বাণিজ্যের যে অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে- সেটি তুলে ধরেছি। আর আমরা বলেছি তাদের দেশে একটি ইকোনোমিক কমিশন আছে এশিয়ান ইকোনোমিক কমিশন সেটাতে তাদের পারটিসিপেন্ট চাই। তারা বলেছে, সেটা নিতে হলে বাকি রাষ্ট্রের যে সব সদস্য বিশেষ করে তাজাকিস্তান, তাদের পারমিশন লাগবে। সবাই মিলে ডিশিসন…।

তিনি বলেন, তো আমাদের দেশের যেগুলো বাইলিটারাল ইস্যু সেগুলো উনার (লাভরভ) কাছে তুলে ধরেছি এবং হি ওয়াজ ভেরি সিমপিথেটিক এবং বলেছেন এইগুলো ব্যাপারে দৃষ্টি দেবেন।

এর আগে সন্ধ্যা ৬টায় রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় পৌঁছান। তাকে বহন করা বিমানটি রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। পরে তারা বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালে ফটোসেশনে অংশগ্রহণ করেন। প্রথমবারের ঝটিকা সফরে ঢাকায় এসেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ।

সফরের দ্বিতীয় দিন আগামী শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এরপর তিনি গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে ঢাকা থেকে নয়াদিল্লির উদ্দেশে রওনা করবেন লাভরভ।

আবহাওয়া

সাবেক মন্ত্রী দস্তগীরের ৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের ওপর চাপ সৃষ্টি, যা অগ্রহণযোগ্য : রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ১০:১৩:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

অনেক দেশ বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দলের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে যা অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেন, জাতিসংঘ এবং এর বন্ধুদের ওপর চাপের পরও বাংলাদেশ তার নিজের স্বার্থ রক্ষা করে চলবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে তিনি যৌথ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পর বাংলাদেশ তাদের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার। অনেক ধরনের অসুবিধা থাকা সত্ত্বেও আমাদের রাজনৈতিক সংলাপ চালিয়ে গেছি দেশটির সঙ্গে।

বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দলের ওপর অনেক দেশের চাপ সৃষ্টি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জাতিসংঘ এবং এর বন্ধুদেশের চাপের পরও বাংলাদেশ তার নিজের স্বার্থ রক্ষা করে চলবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি।

ল্যাভরভ বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ শিডিউল অনুযায়ী চলছে বলে আমরা জানতে পেরেছি। বাংলাদেশে এলএনজি, সার, গম রফতানির জন্য আলোচনা চলছে।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, নিষেধাজ্ঞার কারণে সাপ্লাই-চেইনে সমস্যা হয়েছে সত্যি; তবে রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রের সব মালামাল সময়মতো বাংলাদেশে পৌঁছেছে।

রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের মালামালের মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে দুই দেশের স্থানীয় মুদ্রা বিনিময় নিয়ে আলোচনা চলছে আর এর জন্য নিউক্লিয়ার ফুয়েল বাংলাদেশে আসবে অক্টোবরে, জানান রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, রাশিয়া আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহায্য করছে। আজকে এই আলোচনার মাধ্যমে আমরা অনেক ইস্যু তুলে এনেছি। আমাদের ইস্যু ছিল, আমাদের রূপপুর পাওয়ার প্ল্যান্ট। আপনারা জেনে খুশি হবে যে এটি মোটামুটি অনটাইম শেষ হবে। আমাদের ইস্যু ছিল রোহিঙ্গা, রোহিঙ্গা ইস্যুতে তারা (রাশিয়া) আমাদের সঙ্গে একাত্ম যে তাদের (রোহিঙ্গাদের) দেশে ফিরে যাওয়া উচিত। এইভাবে আমরা তাদের সহায়তা চেয়েছি।

ড. মোমেন বলেন, আমরা উভয় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও বাড়ানোর জন্য কথা বলেছি। আমাদের জন্য অনেক স্কোপ আসছে- ১০০টি ইকোনোমিক জোন, ২৯টি হাইটেক পার্ক- এইগুলোর অ্যাডভান্টেজ যাতে নিতে পারে সে জন্য আমরা অনুরোধ করেছি।

তিনি বলেন, তারা আমাদের বলেছে, তাদের দেশ থেকে আমরা এলএনজি আনতে পারি। তারা আমাদের প্রস্তাব করেছে যে তারা দেশ থেকে আমরা ক্লোরাইড আনতে পারি।

ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, আমাদের ইস্যু ছিল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। আপনারা জেনে খুশি হবেন এটা সময়মতো চালু হবে। আর বাংলাদেশকে দীর্ঘদিন ধরে নবায়নযোগ্য জ্বালানি দেবে রাশিয়া। এমন আশ্বাস পাওয়া গেছে।’

মোমেন বলেন, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে। জানিয়েছি, আমরা যুদ্ধ চাই না। দ্রুত সমাধান চাই।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই ইউক্রেন ওয়ারের কারণে এই ব্যবসা-বাণিজ্যের যে অসুবিধার সৃষ্টি হচ্ছে- সেটি তুলে ধরেছি। আর আমরা বলেছি তাদের দেশে একটি ইকোনোমিক কমিশন আছে এশিয়ান ইকোনোমিক কমিশন সেটাতে তাদের পারটিসিপেন্ট চাই। তারা বলেছে, সেটা নিতে হলে বাকি রাষ্ট্রের যে সব সদস্য বিশেষ করে তাজাকিস্তান, তাদের পারমিশন লাগবে। সবাই মিলে ডিশিসন…।

তিনি বলেন, তো আমাদের দেশের যেগুলো বাইলিটারাল ইস্যু সেগুলো উনার (লাভরভ) কাছে তুলে ধরেছি এবং হি ওয়াজ ভেরি সিমপিথেটিক এবং বলেছেন এইগুলো ব্যাপারে দৃষ্টি দেবেন।

এর আগে সন্ধ্যা ৬টায় রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় পৌঁছান। তাকে বহন করা বিমানটি রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। পরে তারা বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালে ফটোসেশনে অংশগ্রহণ করেন। প্রথমবারের ঝটিকা সফরে ঢাকায় এসেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ।

সফরের দ্বিতীয় দিন আগামী শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এরপর তিনি গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দিতে ঢাকা থেকে নয়াদিল্লির উদ্দেশে রওনা করবেন লাভরভ।