Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হলো এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর যানজট নিরসনে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে দীর্ঘ প্রতিক্ষিত দেশের প্রথম উড়াল মহাসড়ক বা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে।

রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা থেকে এর ওপর দিয়ে শুরু হয় যান চলাচল। এখন শুধু হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত যাওয়া যাচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে। এ অংশের দূরত্ব ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার। এতে করে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট যাওয়া-আসা করতে সময় লাগবে মাত্র ১০ মিনিট।

যদিও ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে মহানগরের কোনো যাত্রীবাহী বাসকে চলাচল করতে দেখা যায়নি। তবে অফিসগামী কিছু বাস এবং দুই-একটি বিআরটিসি বাসকে চলাচল করতে দেখা গেছে। সকাল থেকে অফিসগামী ব্যক্তিগত গাড়ি এবং কিছু কাভার্ডভ্যানকে চলাচল করতে দেখা গেছে।

এ পথের যাত্রীরা বলছেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হওয়ার কারণে বিমানবন্দরকেন্দ্রিক যে যানজটের ভোগান্তি ছিল তা কিছুটা হলেও কমবে। এখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা আর বসে থাকতে হবে না গাড়িতে।

তবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পূর্ণাঙ্গ সুফল পেতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ বাকি অংশের (তেজগাঁও-কুতুবখালী) জন্য অপেক্ষা করতে হবে আগামী বছর পর্যন্ত। এ উড়ালপথের পুরোটা চালু হলে বদলে যাবে যানজটের নগরী ঢাকার দৃশ্যপট।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে থ্রি হুইলার, সাইকেল এবং পথচারীরা চলাচল করতে পারবে না। আর মোটরসাইকেল এখনই চলতে দেওয়া হবে না। এছাড়া উড়ালসড়কে যে কোনো ধরনের যানবাহন দাঁড়ানো ও যানবাহন থেকে নেমে ছবি তোলায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ের মূল সড়কে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিসীমা হবে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার।

২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রথম চুক্তি সইয়ের এক যুগ পরে নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আলোর মুখ দেখল প্রকল্পটি।

জানা গেছে, ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দূরত্বের উড়াল সড়কে ওঠা-নামার জন্য ১৫টি র‌্যাম্প রয়েছে। এরমধ্যে খুলে দেওয়া হয়েছে ১৩টি। বনানী ও মহাখালী র‌্যাম্প পুরোপুরি প্রস্তুত না হওয়ায় আপাতত এ দুটি র‌্যাম্প বন্ধ থাকছে।

উড়ালসড়কের ওপর দিয়ে চলাচল করতে হলে টোল দিতে হবে। এজন্য যানবাহনকে চার শ্রেণিতে ভাগ করে নির্ধারণ করা হয়েছে টোল। এতে সর্বনিম্ন টোল ৮০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, চার শ্রেণির যানবাহনের মধ্যে গাড়ি, ট্যাক্সি, জিপ, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল, মাইক্রোবাস (১৬ সিটের কম) এবং হালকা ট্রাকের (তিন টনের কম) টোল ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ টাকা, সব ধরনের বাসের (১৬ সিট বা এর বেশি) ক্ষেত্রে ১৬০ টাকা, মাঝারি ধরনের ট্রাকের (ছয় চাকা পর্যন্ত) ৩২০ টাকা, আর বড় ট্রাকের (ছয় চাকার বেশি) ক্ষেত্রে ৪০০ টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। দুর্ঘটনা রোধে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে ছোট ও কম গতির যানবাহন চলাচল করবে না।

সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, ২৫ বছরের চুক্তির মধ্যে সাড়ে ২১ বছর টোল আদায় করবে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম সাখাওয়াত আকতার বলেন, কাওলা পয়েন্টে একটা টোলপ্লাজা আছে। এছাড়া কুড়িল, মহাখালী, বনানী ও তেজগাঁওয়ে আছে টোলপ্লাজা।

এর আগে শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাওলা অংশে নামফলক উন্মোচনের মাধ্যমে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেন। এরপর কাওলা প্রান্ত থেকে টোল দিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তার সঙ্গে ছোটবোন শেখ রেহানা ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তারা ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হলো এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

প্রকাশের সময় : ১২:১১:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর যানজট নিরসনে সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে দীর্ঘ প্রতিক্ষিত দেশের প্রথম উড়াল মহাসড়ক বা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে।

রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা থেকে এর ওপর দিয়ে শুরু হয় যান চলাচল। এখন শুধু হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত যাওয়া যাচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে। এ অংশের দূরত্ব ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার। এতে করে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট যাওয়া-আসা করতে সময় লাগবে মাত্র ১০ মিনিট।

যদিও ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে মহানগরের কোনো যাত্রীবাহী বাসকে চলাচল করতে দেখা যায়নি। তবে অফিসগামী কিছু বাস এবং দুই-একটি বিআরটিসি বাসকে চলাচল করতে দেখা গেছে। সকাল থেকে অফিসগামী ব্যক্তিগত গাড়ি এবং কিছু কাভার্ডভ্যানকে চলাচল করতে দেখা গেছে।

এ পথের যাত্রীরা বলছেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হওয়ার কারণে বিমানবন্দরকেন্দ্রিক যে যানজটের ভোগান্তি ছিল তা কিছুটা হলেও কমবে। এখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা আর বসে থাকতে হবে না গাড়িতে।

তবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পূর্ণাঙ্গ সুফল পেতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ বাকি অংশের (তেজগাঁও-কুতুবখালী) জন্য অপেক্ষা করতে হবে আগামী বছর পর্যন্ত। এ উড়ালপথের পুরোটা চালু হলে বদলে যাবে যানজটের নগরী ঢাকার দৃশ্যপট।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে থ্রি হুইলার, সাইকেল এবং পথচারীরা চলাচল করতে পারবে না। আর মোটরসাইকেল এখনই চলতে দেওয়া হবে না। এছাড়া উড়ালসড়কে যে কোনো ধরনের যানবাহন দাঁড়ানো ও যানবাহন থেকে নেমে ছবি তোলায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ের মূল সড়কে যানবাহনের সর্বোচ্চ গতিসীমা হবে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার।

২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রথম চুক্তি সইয়ের এক যুগ পরে নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আলোর মুখ দেখল প্রকল্পটি।

জানা গেছে, ১১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দূরত্বের উড়াল সড়কে ওঠা-নামার জন্য ১৫টি র‌্যাম্প রয়েছে। এরমধ্যে খুলে দেওয়া হয়েছে ১৩টি। বনানী ও মহাখালী র‌্যাম্প পুরোপুরি প্রস্তুত না হওয়ায় আপাতত এ দুটি র‌্যাম্প বন্ধ থাকছে।

উড়ালসড়কের ওপর দিয়ে চলাচল করতে হলে টোল দিতে হবে। এজন্য যানবাহনকে চার শ্রেণিতে ভাগ করে নির্ধারণ করা হয়েছে টোল। এতে সর্বনিম্ন টোল ৮০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, চার শ্রেণির যানবাহনের মধ্যে গাড়ি, ট্যাক্সি, জিপ, স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল, মাইক্রোবাস (১৬ সিটের কম) এবং হালকা ট্রাকের (তিন টনের কম) টোল ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০ টাকা, সব ধরনের বাসের (১৬ সিট বা এর বেশি) ক্ষেত্রে ১৬০ টাকা, মাঝারি ধরনের ট্রাকের (ছয় চাকা পর্যন্ত) ৩২০ টাকা, আর বড় ট্রাকের (ছয় চাকার বেশি) ক্ষেত্রে ৪০০ টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। দুর্ঘটনা রোধে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে ছোট ও কম গতির যানবাহন চলাচল করবে না।

সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, ২৫ বছরের চুক্তির মধ্যে সাড়ে ২১ বছর টোল আদায় করবে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম সাখাওয়াত আকতার বলেন, কাওলা পয়েন্টে একটা টোলপ্লাজা আছে। এছাড়া কুড়িল, মহাখালী, বনানী ও তেজগাঁওয়ে আছে টোলপ্লাজা।

এর আগে শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাওলা অংশে নামফলক উন্মোচনের মাধ্যমে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেন। এরপর কাওলা প্রান্ত থেকে টোল দিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় তার সঙ্গে ছোটবোন শেখ রেহানা ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ সরকারের পদস্থ কর্মকর্তারা ছিলেন।