Dhaka বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশকে ২০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ০২:০৮:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৩
  • ১৮৭ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ, নারীদের প্রসবপূর্ব পরিষেবা, চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করতে বাংলাদেশকে ২০ কোটি ডলার (প্রায় ২ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা) ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক।

বুধবার (৩১ আগস্ট) এই ঋণ অনুমোদন অনুমোদন করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংস্থাটি বলেছে, এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে। যার আওতায় স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কিত বিভিন্ন সেবা দেয়া হবে।
পাঁচ বছরের কম বয়সী ২৫ লাখ শিশু এই সেবা থেকে উপকৃত হবে বলে আশা করছে বিশ্বব্যাংক।

বাংলাদেশ ও ভুটানে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক এক বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশ গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। কিন্তু শহর এলাকায় নাগরিক স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ এখনও সীমিত। ফলে দরিদ্র এবং বস্তিবাসীদেরও বাধ্য হয়ে ব্যয়বহুল বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্যসেবা নিতে হয়।

তিনি আরও বলেন, জনসংখ্যার উচ্চ ঘনত্ব, জলবায়ু পরিবর্তন এবং দ্রুত নগরায়ণের কারণে ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ বাড়ছে, নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আবির্ভূত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা খাতে।

নগর স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা প্রকল্পের জন্য এই ঋণ অনুমোদন করা হয়। বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (আইডিএ) থেকে এই অর্থ দেওয়া হচ্ছে।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম সিটি এবং সাভার ও তারাবো পৌরসভা এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। এই প্রকল্প প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর একটি বলয় সৃষ্টি করবে। শহর এলাকার নাগরিকদের স্বাস্থ্য সমস্যা যেসব কারণে হয়, সেগুলো কমানোর চেষ্টা করাই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।

প্রকল্পের আওতায় স্বাস্থ্যসেবা বাড়াতে পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক ও নির্বাচিত বিদ্যমান জনস্বাস্থ্য সুবিধা সংস্কার করা হবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিক করা হবে। প্রকল্পটি নারীদের প্রসবপূর্ব পরিষেবা উন্নত করবে। আড়াই লাখেরও বেশি নারী গর্ভাবস্থায় কমপক্ষে চারটি চেকআপ গ্রহণের সুযোগ পাবেন।

এই প্রকল্প পরিবেশগত স্বাস্থ্য এবং প্রতিরোধমূলক পরিষেবার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। মশা নিয়ন্ত্রণ, চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, অসুস্থতা প্রতিরোধ এবং মানব স্বাস্থ্যের ওপর জলবায়ু পরিবর্তন ও বায়ু দূষণের প্রভাব কমাতে কাজ করবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মশার প্রজনস্থল পরিষ্কারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে অন্যতম। গত অর্ধশতাব্দীতে বাংলাদেশকে সব মিলিয়ে চার হাজার কোটি ডলারের মতো দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এই অর্থ কাজে লেগেছে দারিদ্র্য বিমোচনে। রাস্তাঘাট, ভবনসহ বড় অবকাঠামো নির্মাণেও অর্থ দিয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা, পরিবেশ রক্ষা, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন খাতে বিশ্বব্যাংক দশকের পর দশক অর্থ দিয়ে আসছে।

এই প্রকল্পের আওতায় নারীদের মাতৃত্বকালীন সেবা দেয়ার কথা জানিয়ে বলা হয়, এতে আড়াই লাখ নারী তাদের গর্ভকালীন সময়ে অন্তত চারটি চেকআপের সুযোগ পাবেন। এ ছাড়া ১৩ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক উচ্চ রক্তচাপের স্ক্রিনিং এবং ফলোআপ চিকিৎসার সুযোগ পাবেন। সরকারি বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ও পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিকে দরিদ্র নাগরিকদের সেবাপ্রাপ্তির খরচ কমিয়ে আনতেও সহায়ক হবে এই প্রকল্প।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এ প্রকল্পের আওতায় মৌসুমভিত্তিক সতর্কীকরণ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার কথা জানানো হয় বিবৃতিতে। একই সঙ্গে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংসে কাজ করা হবে।

বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে ওই ২০ কোটি ডলার ঋণ পাবে বাংলাদেশ। ৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরের মধ্যে ওই ঋণ শোধ করতে হবে।

উল্লেখ্য, গত অর্ধশতাব্দীতে সব মিলিয়ে বাংলাদেশকে ৪ হাজার কোটি ডলারে ঋণ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। দারিদ্র্য বিমোচন, অবকাঠামো নির্মাণসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা, পরিবেশ রক্ষা ও কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন খাতে এই অর্থ ব্যবহার করা হয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অপপ্রচার চালিয়ে তারেক রহমানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা যাবে না : রিজভী

বাংলাদেশকে ২০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

প্রকাশের সময় : ০২:০৮:০৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ, নারীদের প্রসবপূর্ব পরিষেবা, চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ নাগরিকদের স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করতে বাংলাদেশকে ২০ কোটি ডলার (প্রায় ২ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা) ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক।

বুধবার (৩১ আগস্ট) এই ঋণ অনুমোদন অনুমোদন করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংস্থাটি বলেছে, এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হবে। যার আওতায় স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কিত বিভিন্ন সেবা দেয়া হবে।
পাঁচ বছরের কম বয়সী ২৫ লাখ শিশু এই সেবা থেকে উপকৃত হবে বলে আশা করছে বিশ্বব্যাংক।

বাংলাদেশ ও ভুটানে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক এক বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশ গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। কিন্তু শহর এলাকায় নাগরিক স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ এখনও সীমিত। ফলে দরিদ্র এবং বস্তিবাসীদেরও বাধ্য হয়ে ব্যয়বহুল বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় স্বাস্থ্যসেবা নিতে হয়।

তিনি আরও বলেন, জনসংখ্যার উচ্চ ঘনত্ব, জলবায়ু পরিবর্তন এবং দ্রুত নগরায়ণের কারণে ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ বাড়ছে, নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আবির্ভূত হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবা খাতে।

নগর স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা প্রকল্পের জন্য এই ঋণ অনুমোদন করা হয়। বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (আইডিএ) থেকে এই অর্থ দেওয়া হচ্ছে।

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম সিটি এবং সাভার ও তারাবো পৌরসভা এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। এই প্রকল্প প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর একটি বলয় সৃষ্টি করবে। শহর এলাকার নাগরিকদের স্বাস্থ্য সমস্যা যেসব কারণে হয়, সেগুলো কমানোর চেষ্টা করাই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।

প্রকল্পের আওতায় স্বাস্থ্যসেবা বাড়াতে পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক ও নির্বাচিত বিদ্যমান জনস্বাস্থ্য সুবিধা সংস্কার করা হবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিক করা হবে। প্রকল্পটি নারীদের প্রসবপূর্ব পরিষেবা উন্নত করবে। আড়াই লাখেরও বেশি নারী গর্ভাবস্থায় কমপক্ষে চারটি চেকআপ গ্রহণের সুযোগ পাবেন।

এই প্রকল্প পরিবেশগত স্বাস্থ্য এবং প্রতিরোধমূলক পরিষেবার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। মশা নিয়ন্ত্রণ, চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, অসুস্থতা প্রতিরোধ এবং মানব স্বাস্থ্যের ওপর জলবায়ু পরিবর্তন ও বায়ু দূষণের প্রভাব কমাতে কাজ করবে। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে মশার প্রজনস্থল পরিষ্কারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে অন্যতম। গত অর্ধশতাব্দীতে বাংলাদেশকে সব মিলিয়ে চার হাজার কোটি ডলারের মতো দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এই অর্থ কাজে লেগেছে দারিদ্র্য বিমোচনে। রাস্তাঘাট, ভবনসহ বড় অবকাঠামো নির্মাণেও অর্থ দিয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা, পরিবেশ রক্ষা, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন খাতে বিশ্বব্যাংক দশকের পর দশক অর্থ দিয়ে আসছে।

এই প্রকল্পের আওতায় নারীদের মাতৃত্বকালীন সেবা দেয়ার কথা জানিয়ে বলা হয়, এতে আড়াই লাখ নারী তাদের গর্ভকালীন সময়ে অন্তত চারটি চেকআপের সুযোগ পাবেন। এ ছাড়া ১৩ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক উচ্চ রক্তচাপের স্ক্রিনিং এবং ফলোআপ চিকিৎসার সুযোগ পাবেন। সরকারি বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ও পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিকে দরিদ্র নাগরিকদের সেবাপ্রাপ্তির খরচ কমিয়ে আনতেও সহায়ক হবে এই প্রকল্প।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এ প্রকল্পের আওতায় মৌসুমভিত্তিক সতর্কীকরণ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলার কথা জানানো হয় বিবৃতিতে। একই সঙ্গে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং মশার প্রজননক্ষেত্র ধ্বংসে কাজ করা হবে।

বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে ওই ২০ কোটি ডলার ঋণ পাবে বাংলাদেশ। ৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরের মধ্যে ওই ঋণ শোধ করতে হবে।

উল্লেখ্য, গত অর্ধশতাব্দীতে সব মিলিয়ে বাংলাদেশকে ৪ হাজার কোটি ডলারে ঋণ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। দারিদ্র্য বিমোচন, অবকাঠামো নির্মাণসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা, পরিবেশ রক্ষা ও কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন খাতে এই অর্থ ব্যবহার করা হয়েছে।