আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

বিজয় মিছিল করে জেনারেল ব্রাইস ওলিগুই এনগুয়েমাকে গ্যাবনের ক্ষমতায় বসালেন সেনা সদস্যরা। এর আগে বুধবার এনগুয়েমাকে দেশটির অন্তর্র্বতীকালীন নেতা ঘোষণা করা হয়। ঘোষণার পর মিছিল করে রাজধানী লিব্রেভিলের রাস্তা দিয়ে তাঁকে কাঁধে তুলে নিয়ে যান সমর্থকেরা।

বিবিসি জানায়, অন্তর্র্বতী সময়ে কে দেশকে নেতৃত্ব দেবে তা ঠিক করতে অভ্যুত্থানের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বৈঠকে বসেন জেনারেলরা। ওই পদে জেনারেল এনগুয়েমাকে বসাতে ভোট দেন সবাই। এনগুয়েমা দেশটির প্রেসিডেন্ট গার্ড বাহিনীর সাবেক প্রধান।

এদিকে ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট আলি বঙ্গো ওনদিমবা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ থেকে এক ভিডিও বার্তায় ‘বিশ্বজুড়ে থাকা মিত্রদের’ কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। বুধবার দেশটির সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানে প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের সদস্যদের হাতে গৃহবন্দী হওয়ার ঘণ্টাখানেক পর এ ভিডিও বার্তা দেন তিনি। বঙ্গোর পরিবার ৫৫ বছর ধরে গ্যাবনের ক্ষমতা দখল করে ছিল। সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এবার সেই শাসনের অবসান হল।

এর আগে স্থানীয় সময় বুধবার ভোররাতে জাতীয় টেলিভিশনে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, তাঁরা দেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন। গত ২৬ আগস্টের নির্বাচনে বঙ্গোকে যে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল, ওই ফলাফল বাতিল ঘোষণা করেন তাঁরা। লিব্রেভিল ও অন্যান্য শহরে জনতা আনন্দ মিছিল করে সেনাবাহিনীর ঘোষণাকে স্বাগত জানায়।

বুধবার সেনাসদস্যরা টেলিভিশনে এসে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের ঘোষণা দেন। এ সময় তাঁরা জানান, গত ২৬ আগস্টের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করা হচ্ছে। প্রজাতন্ত্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত হয়ে গেছে। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত দেশের সীমানা বন্ধ থাকবে। যদিও জাতিসংঘ, আফ্রিকান ইউনিয়ন ও ফ্রান্স এই সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছে। ফ্রান্সের সঙ্গে বঙ্গো পরিবারের ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে জানা যায়।

কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বঙ্গোর এক ছেলেকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে, জেনারেলরা আলোচনার জন্য একত্রিত হন। সেখানে পরিবর্তিত সময়ে নেতৃত্ব কে দেবেন, সে বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নেন।

পরে প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের সাবেক প্রধান জেনারেল এনগুয়েমার নাম প্রস্তাব করা হলে তাকে নিয়োগের ব্যাপারে সেনারা সর্বসম্মত ভোটে সম্মত হন। সেনাবাহিনীর এই ঘোষণার পর লিব্রেভিল এবং অন্যান্য জায়গায় সাধারণ মানুষ উদযাপন করতে থাকে।

অবশ্য জাতিসংঘ, আফ্রিকান ইউনিয়ন এবং ফ্রান্স এই অভ্যুত্থানের তীব্র নিন্দা করেছে। তাদের সাথে বঙ্গোর পরিবারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।

উল্লেখ্য, মধ্য আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত গ্যাবন তেল এবং খনিজ সমৃদ্ধ একটি দেশ। এই দেশটির জনসংখ্যা মাত্র ২৪ লাখ। ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট আলী বঙ্গোকে গত শনিবারের বিতর্কিত নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

২০০৯ সাল থেকে তিনি দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বপালন করছিলেন। এর আগে, তার বাবা টানা ৪১ বছর ক্ষমতায় ছিলেন।