কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি :
কক্সবাজারের শহরের একটি আবাসিক হোটেল থেকে সাইফ উদ্দিন (৪৫) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ, সাইফ উদ্দিনকে পরিকল্পিতভাবে হোটেলকক্ষে হত্যা করে পালিয়েছেন অপরাধীরা।
সোমবার (২১ আগস্ট) সকাল ১০টায় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। রোববার (২০ আগস্ট) গভীর রাতে হোটেলের দ্বিতীয় তলার ১০৮ নম্বর কক্ষে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে সন্দেহ পুলিশ ও দলের নেতা-কর্মীদের।
নিহত সাইফ উদ্দিন কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তিনি কক্সবাজার শহরের ঘোনার পাড়া এলাকায় আবুল বশরের ছেলে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, হোটেলকক্ষে আওয়ামী লীগ সদস্যকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সাইফ উদ্দিনের দুই হাত রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় খাটের ওপর পড়ে ছিল। হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ এবং অন্যান্য আলামত সংগ্রহ করে অপরাধীদের শনাক্ত করার কাজ চালাচ্ছে পুলিশ।
বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত পুলিশ সদস্যদের হোটেলে অবস্থান করে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে। সেখানে উপস্থিত আছেন কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুবুর রহমান, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল করসহ দলীয় নেতা–কর্মীরা। হোটেলের সামনে প্রধানসড়কে দর্শনার্থীদের ভিড় লাগায় যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে।
মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমানে শহর আওয়ামী লীগের সদস্য সাইফ উদ্দিন অত্যন্ত ভদ্র ও পরিচিত মুখ ছিলেন। হোটেলকক্ষে তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত সাইফ উদ্দিনের বন্ধু কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদ সভাপতি দীপক শর্মা বলেন, হোটেলকক্ষের একটি খাটে সাইফ উদ্দিনের দুই হাত রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় পড়েছিল। পরনে ছিল খয়েরি রঙের প্যান্ট। গায়ে কোনো কাপড় ছিল না। একটি পায়ের হাঁটুতে রক্তের দাগ দেখা গেছে। লাশের অবস্থা দেখে পরিষ্কার ধারণা হয়, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
ঘোনাপাড়ার বাসিন্দা ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল কর জানান, ছাত্রলীগ থেকে শহর আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন সাইফ উদ্দিন। তাঁর কোনো শত্রু ছিল না। রাজনীতির পাশাপাশি তিনি বাবার ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু হোটেলকক্ষে তাঁর এমন মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছেন না। এটি পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ড। তাঁরা হত্যাকাণ্ডের বিচার চান।