Dhaka মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সংবিধানকে কাটা-ছেঁড়া করেছিল বিএনপি, আওয়ামী লীগ করেনি : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বাঁচাতে সংবিধান সংশোধন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সংবিধানকে কাটা-ছেঁড়া করেছিল বিএনপি, আওয়ামী লীগ করেনি। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার বন্ধ করতে পঞ্চম সংশোধনী দিয়েছিল জিয়াউর রহমান।

বুধবার (১৬ আগস্ট) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

সেতুমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুলকে আমি প্রশ্নটা করি, বার বার করেছি, সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী খন্দকার মোশতাকের পঞ্চম সংশোধনী বাংলাদেশের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেছিল কে, জিয়াউর রহমান। পঞ্চম সংশোধনী কে করেছিল? জিয়াউর রহমান এই কুখ্যাত সংশোধনী এনেছিল বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার বন্ধ করতে। ঈদের বিচার হবে না। ক্ষমা করবে না ইতিহাস। তিন নভেম্বরের মাস্টারমাইন্ড ক্ষমা করবে না ইতিহাস। ২১ আগস্টের মাস্টারমাইন্ড, হরকতুল জিহাদ নেতা জবানবন্দিতে বলেছে, হাওয়া ভবনের নির্দেশ পেয়ে গেলে হামলা শুরু হয়েছিল, এই গ্রেনেড হামলা যার প্রাইম টার্গেট ছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। খুনিদের ইনডেমিনিটি জিয়াউর রহমানও দিয়েছে আবার অপারেশন ক্লিন হার্টের সময় খালেদা জিয়াও দিয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনাকালীন সময়ে দেখলাম ষষ্ঠবারের মতো আরেকটা জন্মদিবস। কোন দিন? ১৫ আগস্ট। আগে কিন্তু ছিল না ১৫ আগস্ট। হঠাৎ করেই ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিবস। বিএনপিকে জিজ্ঞেস করি- একজন মানুষের কয়টা জন্মদিবস থাকে? ছয় ছয়বার জন্মদিবসের কথা যখন আমি বলি, তখন ফখরুল বলেন শিষ্টাচার বহির্ভূত, মিথ্যাচার, বিষোদগার। ক্ষমা করবে না ইতিহাস।

বিএনপি জজ মিয়া নাটক সাজিয়েচিল উল্লেখ করে বলেন, বিএনপি নেতারা বলুক কেন তারা জজ মিয়া নাটক সাজিয়েছিল। আসলে খুনিদের স্বীকৃতি জিয়া ও খালেদা দুই জনই দিয়ে গেছেন।

বিএনপির মিথ্যাচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগকে লড়তে হচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ওদের গণতন্ত্র অর্থপাচারের গণতন্ত্র, ওদের গণতন্ত্র দুর্নীতির গণতন্ত্র। আর এদের সঙ্গেই লড়তে হচ্ছে আমাদের। প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে শেখ হাসিনাকে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আগস্ট মাস এলেই বিএনপি নেতাদের চোখ-মুখ শুকিয়ে যায়। সত্যের মুখোমুখি হতে তারা ভয় পায়। ইতিহাসের অনেক প্রশ্নের জবাব আছে, সেই প্রশ্নের জবাব বার বার তাদের কাছে চেয়েও পাইনি। জিজ্ঞেস করেছিলাম বিএনপি নেতাদের, ১৫ আগস্টের খুনিদের নিরাপদে বিদেশে পাঠালো কে, খুনিদের বিদেশে বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করল কে? জিয়াউর রহমান নয়, কে তিনি, কে সে, কে বঙ্গবন্ধু হত্যার অব্যবহিত পর বলেছিল ডালিমের সাথে দেখা হলো, ওয়েল ডান মেজর ডালিম ইউ হ্যাভ ডান এ গুড জব। কেন, আন্তোনি মাস্কারেনহাসের বইটি পড়ুন। সাক্ষাৎকারগুলো পড়ুন। জিয়াউর রহমান কি কথা বলেনি। হত্যাকারী, হত্যা যে করে আর যে মদদ দেয় উভয় সমান অপরাধী। হত্যাকারীদের দুঃসাহস দিয়েছে জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান দুঃসাহস না দিলে এই ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে যে কলঙ্কিত, সবচেয়ে নৃশংসতম অপরাধ এরা ঘটাতে পারতো কি না সেটা নিয়ে প্রশ্ন আছে।

তিনি বলেন, হত্যা যে করেন আর হত্যায় যে মদদ দেন, উভয়ই সমান অপরাধী। হত্যাকারীদের দুঃসাহস দিয়েছেন জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমানের দুঃসাহস না হলে পৃথিবীতে এ ঘটনা ঘটত না।

ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ১৯৭৫ সালের বীরপুরুষ কর্নেল জামিল, আমরা সবাই কাপুরুষ। আমাদের যাদের বঙ্গবন্ধু ডেকেছিলেন, ভয়ে সাড়া দেননি, তাদের বীরপুরুষ বলা যাবে? আমরা কাপুরুষ। ইতিহাসে এ সত্যকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সব সত্য আমরা এখনো জানি না। সব সত্য এখনো বের হয়ে আসেনি। অজানা অনেক তথ্য রয়ে গেছে। সত্য প্রকাশ হবেই। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছেন, সেখানে অনেক সত্য বেরিয়ে এসেছে। কিন্তু এ সত্য আমরা কতজনে স্বীকার করি? ৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু কয়েকজনকে ফোন করেছিলেন। কে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন? সত্য যদি বলতে হয়, শুধুমাত্র কর্নেল জামিল ছুটে এসেছিলেন ৩২ নম্বরে। আমাদের কোনো নেতা আসেননি। আমরা কেউ বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ৩২ নম্বরে আসিনি। ঘাতকরা যখন গুলি করছিল তখন বঙ্গবন্ধু কর্নেল জামিলকে ফোন করেছিলেন, কর্নেল জামিল কোনো বাধা মানেননি। তিনি ছুটে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর ভবনের দিকে, আর তাকে পথের মধ্যেই হত্যা করা হয়।’

তিনি বলেন, আমরা আমাদের বিবেকের কাছে অপরাধী। বঙ্গবন্ধুর জন্য আমরা বড় পদে এসেছি, বড় নেতা হয়েছি। জামিল যে সাহস, আনুগত্য, দেশপ্রেম দেখিয়েছিলেন সেটা কি কোনো পলিটিশিয়ান দেখাতে পেরেছেন? পারেননি। এটাই সত্য।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত আছেন। সঞ্চালনা করছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আব্দুল আওয়াল শামীম।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংবিধানকে কাটা-ছেঁড়া করেছিল বিএনপি, আওয়ামী লীগ করেনি : কাদের

প্রকাশের সময় : ০৬:২৭:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বাঁচাতে সংবিধান সংশোধন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সংবিধানকে কাটা-ছেঁড়া করেছিল বিএনপি, আওয়ামী লীগ করেনি। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার বন্ধ করতে পঞ্চম সংশোধনী দিয়েছিল জিয়াউর রহমান।

বুধবার (১৬ আগস্ট) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

সেতুমন্ত্রী বলেন, মির্জা ফখরুলকে আমি প্রশ্নটা করি, বার বার করেছি, সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী খন্দকার মোশতাকের পঞ্চম সংশোধনী বাংলাদেশের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেছিল কে, জিয়াউর রহমান। পঞ্চম সংশোধনী কে করেছিল? জিয়াউর রহমান এই কুখ্যাত সংশোধনী এনেছিল বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার বন্ধ করতে। ঈদের বিচার হবে না। ক্ষমা করবে না ইতিহাস। তিন নভেম্বরের মাস্টারমাইন্ড ক্ষমা করবে না ইতিহাস। ২১ আগস্টের মাস্টারমাইন্ড, হরকতুল জিহাদ নেতা জবানবন্দিতে বলেছে, হাওয়া ভবনের নির্দেশ পেয়ে গেলে হামলা শুরু হয়েছিল, এই গ্রেনেড হামলা যার প্রাইম টার্গেট ছিলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। খুনিদের ইনডেমিনিটি জিয়াউর রহমানও দিয়েছে আবার অপারেশন ক্লিন হার্টের সময় খালেদা জিয়াও দিয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনাকালীন সময়ে দেখলাম ষষ্ঠবারের মতো আরেকটা জন্মদিবস। কোন দিন? ১৫ আগস্ট। আগে কিন্তু ছিল না ১৫ আগস্ট। হঠাৎ করেই ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিবস। বিএনপিকে জিজ্ঞেস করি- একজন মানুষের কয়টা জন্মদিবস থাকে? ছয় ছয়বার জন্মদিবসের কথা যখন আমি বলি, তখন ফখরুল বলেন শিষ্টাচার বহির্ভূত, মিথ্যাচার, বিষোদগার। ক্ষমা করবে না ইতিহাস।

বিএনপি জজ মিয়া নাটক সাজিয়েচিল উল্লেখ করে বলেন, বিএনপি নেতারা বলুক কেন তারা জজ মিয়া নাটক সাজিয়েছিল। আসলে খুনিদের স্বীকৃতি জিয়া ও খালেদা দুই জনই দিয়ে গেছেন।

বিএনপির মিথ্যাচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগকে লড়তে হচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ওদের গণতন্ত্র অর্থপাচারের গণতন্ত্র, ওদের গণতন্ত্র দুর্নীতির গণতন্ত্র। আর এদের সঙ্গেই লড়তে হচ্ছে আমাদের। প্রতিযোগিতা করতে হচ্ছে শেখ হাসিনাকে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আগস্ট মাস এলেই বিএনপি নেতাদের চোখ-মুখ শুকিয়ে যায়। সত্যের মুখোমুখি হতে তারা ভয় পায়। ইতিহাসের অনেক প্রশ্নের জবাব আছে, সেই প্রশ্নের জবাব বার বার তাদের কাছে চেয়েও পাইনি। জিজ্ঞেস করেছিলাম বিএনপি নেতাদের, ১৫ আগস্টের খুনিদের নিরাপদে বিদেশে পাঠালো কে, খুনিদের বিদেশে বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করল কে? জিয়াউর রহমান নয়, কে তিনি, কে সে, কে বঙ্গবন্ধু হত্যার অব্যবহিত পর বলেছিল ডালিমের সাথে দেখা হলো, ওয়েল ডান মেজর ডালিম ইউ হ্যাভ ডান এ গুড জব। কেন, আন্তোনি মাস্কারেনহাসের বইটি পড়ুন। সাক্ষাৎকারগুলো পড়ুন। জিয়াউর রহমান কি কথা বলেনি। হত্যাকারী, হত্যা যে করে আর যে মদদ দেয় উভয় সমান অপরাধী। হত্যাকারীদের দুঃসাহস দিয়েছে জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমান দুঃসাহস না দিলে এই ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে যে কলঙ্কিত, সবচেয়ে নৃশংসতম অপরাধ এরা ঘটাতে পারতো কি না সেটা নিয়ে প্রশ্ন আছে।

তিনি বলেন, হত্যা যে করেন আর হত্যায় যে মদদ দেন, উভয়ই সমান অপরাধী। হত্যাকারীদের দুঃসাহস দিয়েছেন জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমানের দুঃসাহস না হলে পৃথিবীতে এ ঘটনা ঘটত না।

ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ১৯৭৫ সালের বীরপুরুষ কর্নেল জামিল, আমরা সবাই কাপুরুষ। আমাদের যাদের বঙ্গবন্ধু ডেকেছিলেন, ভয়ে সাড়া দেননি, তাদের বীরপুরুষ বলা যাবে? আমরা কাপুরুষ। ইতিহাসে এ সত্যকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সব সত্য আমরা এখনো জানি না। সব সত্য এখনো বের হয়ে আসেনি। অজানা অনেক তথ্য রয়ে গেছে। সত্য প্রকাশ হবেই। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছেন, সেখানে অনেক সত্য বেরিয়ে এসেছে। কিন্তু এ সত্য আমরা কতজনে স্বীকার করি? ৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু কয়েকজনকে ফোন করেছিলেন। কে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন? সত্য যদি বলতে হয়, শুধুমাত্র কর্নেল জামিল ছুটে এসেছিলেন ৩২ নম্বরে। আমাদের কোনো নেতা আসেননি। আমরা কেউ বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ৩২ নম্বরে আসিনি। ঘাতকরা যখন গুলি করছিল তখন বঙ্গবন্ধু কর্নেল জামিলকে ফোন করেছিলেন, কর্নেল জামিল কোনো বাধা মানেননি। তিনি ছুটে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর ভবনের দিকে, আর তাকে পথের মধ্যেই হত্যা করা হয়।’

তিনি বলেন, আমরা আমাদের বিবেকের কাছে অপরাধী। বঙ্গবন্ধুর জন্য আমরা বড় পদে এসেছি, বড় নেতা হয়েছি। জামিল যে সাহস, আনুগত্য, দেশপ্রেম দেখিয়েছিলেন সেটা কি কোনো পলিটিশিয়ান দেখাতে পেরেছেন? পারেননি। এটাই সত্য।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত আছেন। সঞ্চালনা করছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আব্দুল আওয়াল শামীম।