নিজস্ব প্রতিবেদক :
সোয়া ৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক সড়ক নির্মাণের পর মেরামতের নামে কয়েক ধাপে ব্যয় করা হয়েছে ৫ কোটি টাকা। কিন্তু মাদারীপুর-শরিয়তপুর-চাঁদপুর মহাসড়কে দূর হচ্ছে না খানাখন্দ। এতে ক্ষুব্ধ যাত্রী-চালক-পথচারী।
সরেজমিনে দেখা যায়, মাদারীপুর সরকারি কলেজ গেট, থানার মোড়, স্টেডিয়াম গেট, ইটেরপুল, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে, নতুন বাসস্ট্যান্ড, খাগদীসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়কটির পিচ উঠে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে আধুনিক সড়ক। বছর বছর সংস্কারের নামে ব্যয় করা লাখ লাখ টাকা। তবুও কেন সড়ক বেশি দিন টিকছে না এমন প্রশ্ন যাত্রী-চালক ও এলাকাবাসীর।
জানা যায়, মাদারীপুর-শরিয়তপুর-চাঁদপুর মহাসড়ক ৭ কিলোমিটার দুই লেন থেকে চারলেনে উন্নীতকরণ করা হয়। ৭৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে মোস্তফাপুর থেকে ডিসিব্রিজ এলাকা সড়কের কাজ শেষ হয় ২০১৮ সালে। এরপর ২০২০-২১ অর্থ বছরে নওগাঁ জেলার স্টেডিয়ামপাড়ার আমিনুল হক প্রাইভেট লিমিটেড ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জরুরিভাবে মেরামতে ব্যয় করা হয় ৪৫ লাখ টাকা। কিন্তু অল্প বৃষ্টিতেই দেখা দিয়েছে বড় বড় গর্ত। এতে সৃষ্টি হয়েছে মরণফাঁদ। ২০২১-২২ অর্থবছরে ঢাকার বনানীর ওটিবিএল ও হাসান টেকনো বিল্ডার্স লিমিটেড নামে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে একই সড়ক মেরামতে সাড়ে ৪ কোটি টাকা খরচ করে সওজ। কিন্তু এরপরেও চিত্র একই রকম।
সড়ক দিয়ে চলাচলকারী বলেন, কলেজের সামনে বড় বড় গর্ত। শরিয়তপুর থেকে ফরিদপুরগামী ট্রাক চালক আবু জাফর মিয়া বলেন, মাদারীপুর শহর থেকে মোস্তফাপুরের ফোরলেন সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত। এতে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। গাড়ি চালাতেও সমস্যা হয়।
মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোতাহার হোসেন জানান, একদিকে ভারি যানবাহন চলাচল বৃদ্ধি পেয়েছে, আর অন্যদিকে প্রচ- বৃষ্টির কারণে সড়কের বিভিন্ন স্থানে একটু গর্ত হয়েছে। যা মেরামতের জন্য সড়ক বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারী প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করার পর বেঁধে দেওয়া পরবর্তী সময়ের মধ্যে আবারো খানাখন্দক হলে নিজ উদ্যোগে সংস্কার করে দেবে, এজন্য সড়ক বিভাগ থেকে আলাদা কোনো অর্থ প্রদান করা হবে না। আমরা অলরেডি বলে দিয়েছি।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ খান বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগ কত টাকা ব্যয়ে সড়ক মেরামত করছে সেই ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হবে। আর জনগণের চলাচলের সুবিধার্থে কার্যকর ব্যবস্থাও নেওয়া হবে। কারণ সরকারের টাকা মানে জনগণের টাকা, এই টাকা অপচয়ের কোনো সুযোগ নেই। কারো কোনো গাফিলাতি থাকলে প্রয়োজনে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।