Dhaka বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দলের প্রয়োজনে মনে করলে নিজের আমেরিকান ভিসা সাংবাদিক ডেকে জ্বালিয়ে দেবো : কাদের মির্জা

নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি : 

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই এবং নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কাদের মির্জা বলেন, আমারও আমেরিকার ভিসা আছে। দলের প্রয়োজন হলে নিজের আমেরিকান ভিসা সাংবাদিক ডেকে জ্বালিয়ে দেব। কারণ কানাডার আদালতে স্বীকৃত সন্ত্রাসী দল বিএনপির জন্য বিবৃতি দেয় আমেরিকা। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে তারা কোনো কথা বলে না। তাদের (আমেরিকা) একটাই নীতি যারে দেখতে পারি না তার চলন বাঁকা।

বুধবার (৯ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বসুরহাট পৌরসভার নিজ কক্ষে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক থেকে লাইভে এসে তিনি এসব কথা বলেন।

আগস্ট মাস শোকের মাস উল্লেখ করে কাদের মির্জা বলেন, আগস্ট মাস, বাঙালি জাতির শোকের মাস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের পদলেহি কুত্তা মোস্তাকের নেতৃত্বে কিছু বিপদগামী সেনা সদস্যরা স্বাধীনতার মহান স্থপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে । আমি শোকাবহ আগস্টের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের অমর স্মৃতির প্রতি অতল শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে তিনি বলেন, যে নেতা ১৪ বছর কারাগারে দিন কাটিয়েছেন, যে নেতা তিনবার ফাঁসির কাষ্ঠে গিয়েও বাঙালি জাতির জয়গান গেয়েছেন। তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাকে এবং তার দলের কর্মীদের কেউ ভিসানীতির ভয় দেখিয়ে, রক্তচক্ষু দেখিয়ে কিংবা কেউ আগুন সন্ত্রাস করে দমাতে পারবে না।

কাদের মির্জা বলেন, দরজায় কড়া নাড়ছে জাতীয় নির্বাচন, এরই মাঝে সরব হয়েছে বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসের সকল কলঙ্কিত অধ্যায়ের রচনাকারী দল বিএনপি। জনবিছিন্ন হয়ে জনগণের স্বার্থ না ভেবে, জনগণের জানমালে আঘাত করে অগ্নিসন্ত্রাস আর বিদেশীদের পরমায়েশে ক্ষমতায় যাওয়ার নীলনকশা একে নানান অপতৎপরতা চালাচ্ছে তারা। কিন্তু জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা, দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ বরাবরের মতোই জনগণের স্বার্থ রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরী হয়ে মাঠে আছে। ইনশাহআল্লাহ জনগণের স্বার্থে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ যে কোন অপতৎপরতা রুখে দিতে প্রস্তুত। ইতোমধ্যেই কানাডার আদালতে টানা ৫ বার সন্ত্রাসী সংগঠন স্বীকৃতি প্রাপ্ত বিএনপি’র আন্দোলন লোদে আটকে গেছে।

বিএনপিকে উদ্দেশ্যে করে কাদের মির্জা বলেন, মির্জা ফখরুল বলতেছে, সরকার নাকি ভিসা নীতির ভয়ে গয়েশ্বর রায়কে ভাত খাওয়ায়ছে আমান উল্লাহ আমানের জন্য ফল পাঠিয়েছে” আমি মির্জা ফখরুলকে প্রশ্ন করতে চাই- আপনাদের ভাষায় সরকার ভয় পেয়েছে, অন্যদিকে জননেত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন তিনি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করবেন। তাহলে আপনারা নির্বাচন নিয়ে ভয় পাচ্ছেন কেন? আপনারা জ্বালাও পোড়াও, অগ্নি সন্ত্রাস, মানুষ হত্য এসব বন্ধ করে নির্বাচনে আসেন। নির্বাচন নিয়ে আপনাদের এত ভয় কেন? সেপ্টেম্বর মাসে কি নাকি দেখাবে বলতেছে। আওয়ামী লীগকে এসব ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। তলোয়ারের নিচে যে দলের জন্ম সে দলকে ভয় দেখাতে আসবেন না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আপনারা যত পারেন আন্দোলন করেন কোন অসুবিধা নাই। কিন্তু আন্দোলনের নামে যদি জনগণের জানমালের ক্ষতি করতে চান, আগুন সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করেন তাহলে তাদের প্রতিহত করতে পুলিশই যথেষ্ট। আর কেউ লাগবে না।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত দিয়েছিল সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত তারা ঢাকার সকল প্রবেশদ্বারে বসে থেকে লাগাতার আন্দোলন করবে। নেতাকর্মীদের বলেছিল জামা-কাপড় নিয়ে যেতে, শেষ পর্যন্ত এই জামা-কাপড় কেউ হোটেলে ফেলে, কেউ বাসায় ফেলে কেউ পথে-ঘাটে ফেলে চলে গেছে। কারণ জামা-কাপড় নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের কাছে ধরা খেলে পুলিশ মারবে আর পাবলিকের হাতে ধরা খেলে গণধোলায় খাবে। তারা দেশ থেকে ঢাকাকে বিছিন্ন করার দেওয়ার স্বপ্নে যে আন্দোলন করেতে চেয়েছিল তা ঢাকার সকল প্রবেশপথে লোদে আটকে গেছে। এদের এসব আন্দোলন-সংগ্রাম নিয়ে দেশবাসীর উদ্বিগ্ন নয়।

বিএনপির আন্দোলন করতে করতে নির্বাচন শেষ হয়ে যাবে উল্লেখ করে কাদের মির্জা বলেন,গত ২৯ তারিখ চুড়ান্ত ব্যর্থ হয়ে এখন আবার তারা প্রতিবাদ সভা দিয়ে শুরু করছে অর্থ্যাৎ ‘অ-আ’ থেকে শুরু করছে ‘ও -ঔ’ পর্যন্ত যেতে যেতে নির্বাচন শেষ হয়ে যাবে। তাই বিএনপির এসব আন্দোলন নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর চিন্তা করার কোন কারণ আছে বলে আমি মনে করি না। কিন্তু দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে মানুষ একটু অস্বস্তিতে আছে তাছাড়া ডেঙ্গুও একটি বড় সমস্যা হয়ে গেছে এখন। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিএনপির এসব আন্দোলনে পাত্তা না দিয়ে দ্রব্যমূল্য বিদ্যুৎ ও ডেঙ্গু সমস্যার প্রতি নজরদারি ভালো ভাবে রাখতে হব।

তিনি আরও বলেন, আমি নিশ্চিত, এইবার বিএনপি নির্বাচন করবে। আপনারা একটা বিষয় লক্ষ্য করবেন, তারেক জিয়া ঘোষণা দিচ্ছে যে আন্দোলন করতে তাদের অর্থের অভাব হবে না এই টাকা কোথায় পেয়েছে? তারেক রহমান ইতোমধ্যে মনোনয়ন দিবে বলে অনেক প্রার্থী থেকে শত শত কোটি টাকা নিয়ে নিছে। কোন কারণে যদি নির্বাচন তারা না করে তাহলে প্রার্থীরাও তার থেকে টাকা চাইতে পারবে না আর তারেকও টাকা ফেরৎ দিবে না কাজেই এই সকল প্রার্থী বিএনপির রাজনীতি থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে আর বিএনপি মুসলিম লীগ হয়ে যাবে। এই জন্য বিএনপি তাদের দল বাঁচাতে নির্বাচন করতে বাধ্য।

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন , আমাদের ৮টি বিভাগীয় শহরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, শিক্ষক, সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে একটি করে শোভা যাত্রা করবেন যার প্রতিপাদ্য থাকবে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’। তাহলে দেশের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সকল শক্তি ঐক্যবদ্ধ ও উজ্জীবিত হবে।

তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দেয়ার মতো যোগ্যতা আমার নেই তাও আমার ব্যক্তিগত কিছু মতামত বলি। আপনি সারা বাংলাদেশে এত বেশি উন্নয়ন করেছেন যা দিনের পর দিন বলে শেষ করা যাবে না। আমাদের কিছু কিছু মন্ত্রী/এম.পি আছেন যে, তার এলাকায় কত উন্নয়ন হয়েছে সে নিজেও জানেন না। ইতোমধ্যেই গত ৬ আগস্ট আপনি তৃণমূলের নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে থেকে মানুষের হৃদয় জয় ও তাদের আস্থা- বিশ্বাস অর্জনের নির্দেশ দিয়েছেন। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আপনার নির্দেশনা মতো কাজ করছে করবে কিন্তু নমিনেশনের পিছনে ঘুরা এসব এম.পি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নেতাকর্মী ও জনগণের সাথে কোন সম্পর্ক নেই, তারা এলাকা ছেড়ে ঢাকায় নমিনেশনের জন্য ঘুরে, আপনার সেদিকে আরো একটু নজরদারী করলে ভালো হয়।

কাদের মির্জা বলেন, আপনি নির্দেশ দিয়েছেন দল যাকে মনোনয়ন দিবে তার পক্ষে কাজ করতে। আমরা তৃণমূলের সকল নেতাকর্মী আপোষহীনভাবে আপনার নির্দেশনা পালন করবো। দেশে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে এটা আমাদের এমপি প্রার্থীরা নিশ্চিত হয়ে গেছে। তাই এমপিরা নেতাকর্মী ও জনগণের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নমিনেশনের পিছনে ঘুরতেছে। কেউ কেউ মনে করতেছে নমিনেশন পেলেই বিজয়। আর নমিনেশনের ক্ষেত্রে অনেক সময় দেখা যায়, দীর্ঘবছর প্রবাসে থেকে হঠাৎ এসে নমিনেশন প্রার্থী হয়, এদের এলাকার সাথে কোন সম্পর্ক নেই, আর আসে আবার চলে যায়; এদের এভাবে নমিনেশন না দিয়ে, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এবার সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করলে আগামীতে এই প্রবাসীদের জন্য ১০টা আসন সংরক্ষিত রাখার জন্য আমি প্রস্তাব করছি।

তিনি আরও বলেন, নেতাদের নির্বাচন কার্যক্রম তদার তদারকি করার জন্য আপনি প্রতিটা অথবা ২/৩টা আসনে আওয়ামী লীগের সৎ ও মেধাবী বুদ্ধিজীবী এবং সুশীল সমাজের কাউকে দায়িত্ব দেন। অন্য কাউকে দায়িত্ব দিলে আবার টাকার কাছে বিক্রি হয়ে যাবে। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে আপনি মনোনয়নের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন। জনগণের প্রাণে একাত্মা প্রকাশ করে জনগণের সাথে মিশে কাজ করলে ইনশাহ আল্লাহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতার সঙ্গে আবারও সরকার গঠন করবে।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই। তিনি বসুরহাট পৌরসভার চারবারের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে আছেন। তিনি ‘অপরাজনীতি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সত্য বচনের’ কারণে তিনি জাতীয়ভাবে বেশ আলোচিত হন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

এইচএসসির স্থগিত পরীক্ষার নতুন সময়সূচি প্রকাশ

দলের প্রয়োজনে মনে করলে নিজের আমেরিকান ভিসা সাংবাদিক ডেকে জ্বালিয়ে দেবো : কাদের মির্জা

প্রকাশের সময় : ০২:৩৪:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৩

নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি : 

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই এবং নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল কাদের মির্জা বলেন, আমারও আমেরিকার ভিসা আছে। দলের প্রয়োজন হলে নিজের আমেরিকান ভিসা সাংবাদিক ডেকে জ্বালিয়ে দেব। কারণ কানাডার আদালতে স্বীকৃত সন্ত্রাসী দল বিএনপির জন্য বিবৃতি দেয় আমেরিকা। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে তারা কোনো কথা বলে না। তাদের (আমেরিকা) একটাই নীতি যারে দেখতে পারি না তার চলন বাঁকা।

বুধবার (৯ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বসুরহাট পৌরসভার নিজ কক্ষে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক থেকে লাইভে এসে তিনি এসব কথা বলেন।

আগস্ট মাস শোকের মাস উল্লেখ করে কাদের মির্জা বলেন, আগস্ট মাস, বাঙালি জাতির শোকের মাস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের পদলেহি কুত্তা মোস্তাকের নেতৃত্বে কিছু বিপদগামী সেনা সদস্যরা স্বাধীনতার মহান স্থপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে । আমি শোকাবহ আগস্টের এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের অমর স্মৃতির প্রতি অতল শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে তিনি বলেন, যে নেতা ১৪ বছর কারাগারে দিন কাটিয়েছেন, যে নেতা তিনবার ফাঁসির কাষ্ঠে গিয়েও বাঙালি জাতির জয়গান গেয়েছেন। তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তাকে এবং তার দলের কর্মীদের কেউ ভিসানীতির ভয় দেখিয়ে, রক্তচক্ষু দেখিয়ে কিংবা কেউ আগুন সন্ত্রাস করে দমাতে পারবে না।

কাদের মির্জা বলেন, দরজায় কড়া নাড়ছে জাতীয় নির্বাচন, এরই মাঝে সরব হয়েছে বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসের সকল কলঙ্কিত অধ্যায়ের রচনাকারী দল বিএনপি। জনবিছিন্ন হয়ে জনগণের স্বার্থ না ভেবে, জনগণের জানমালে আঘাত করে অগ্নিসন্ত্রাস আর বিদেশীদের পরমায়েশে ক্ষমতায় যাওয়ার নীলনকশা একে নানান অপতৎপরতা চালাচ্ছে তারা। কিন্তু জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা, দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ বরাবরের মতোই জনগণের স্বার্থ রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরী হয়ে মাঠে আছে। ইনশাহআল্লাহ জনগণের স্বার্থে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ যে কোন অপতৎপরতা রুখে দিতে প্রস্তুত। ইতোমধ্যেই কানাডার আদালতে টানা ৫ বার সন্ত্রাসী সংগঠন স্বীকৃতি প্রাপ্ত বিএনপি’র আন্দোলন লোদে আটকে গেছে।

বিএনপিকে উদ্দেশ্যে করে কাদের মির্জা বলেন, মির্জা ফখরুল বলতেছে, সরকার নাকি ভিসা নীতির ভয়ে গয়েশ্বর রায়কে ভাত খাওয়ায়ছে আমান উল্লাহ আমানের জন্য ফল পাঠিয়েছে” আমি মির্জা ফখরুলকে প্রশ্ন করতে চাই- আপনাদের ভাষায় সরকার ভয় পেয়েছে, অন্যদিকে জননেত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন তিনি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করবেন। তাহলে আপনারা নির্বাচন নিয়ে ভয় পাচ্ছেন কেন? আপনারা জ্বালাও পোড়াও, অগ্নি সন্ত্রাস, মানুষ হত্য এসব বন্ধ করে নির্বাচনে আসেন। নির্বাচন নিয়ে আপনাদের এত ভয় কেন? সেপ্টেম্বর মাসে কি নাকি দেখাবে বলতেছে। আওয়ামী লীগকে এসব ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। তলোয়ারের নিচে যে দলের জন্ম সে দলকে ভয় দেখাতে আসবেন না। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আপনারা যত পারেন আন্দোলন করেন কোন অসুবিধা নাই। কিন্তু আন্দোলনের নামে যদি জনগণের জানমালের ক্ষতি করতে চান, আগুন সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করেন তাহলে তাদের প্রতিহত করতে পুলিশই যথেষ্ট। আর কেউ লাগবে না।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত দিয়েছিল সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত তারা ঢাকার সকল প্রবেশদ্বারে বসে থেকে লাগাতার আন্দোলন করবে। নেতাকর্মীদের বলেছিল জামা-কাপড় নিয়ে যেতে, শেষ পর্যন্ত এই জামা-কাপড় কেউ হোটেলে ফেলে, কেউ বাসায় ফেলে কেউ পথে-ঘাটে ফেলে চলে গেছে। কারণ জামা-কাপড় নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের কাছে ধরা খেলে পুলিশ মারবে আর পাবলিকের হাতে ধরা খেলে গণধোলায় খাবে। তারা দেশ থেকে ঢাকাকে বিছিন্ন করার দেওয়ার স্বপ্নে যে আন্দোলন করেতে চেয়েছিল তা ঢাকার সকল প্রবেশপথে লোদে আটকে গেছে। এদের এসব আন্দোলন-সংগ্রাম নিয়ে দেশবাসীর উদ্বিগ্ন নয়।

বিএনপির আন্দোলন করতে করতে নির্বাচন শেষ হয়ে যাবে উল্লেখ করে কাদের মির্জা বলেন,গত ২৯ তারিখ চুড়ান্ত ব্যর্থ হয়ে এখন আবার তারা প্রতিবাদ সভা দিয়ে শুরু করছে অর্থ্যাৎ ‘অ-আ’ থেকে শুরু করছে ‘ও -ঔ’ পর্যন্ত যেতে যেতে নির্বাচন শেষ হয়ে যাবে। তাই বিএনপির এসব আন্দোলন নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর চিন্তা করার কোন কারণ আছে বলে আমি মনে করি না। কিন্তু দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং বিদ্যুৎ সমস্যা নিয়ে মানুষ একটু অস্বস্তিতে আছে তাছাড়া ডেঙ্গুও একটি বড় সমস্যা হয়ে গেছে এখন। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিএনপির এসব আন্দোলনে পাত্তা না দিয়ে দ্রব্যমূল্য বিদ্যুৎ ও ডেঙ্গু সমস্যার প্রতি নজরদারি ভালো ভাবে রাখতে হব।

তিনি আরও বলেন, আমি নিশ্চিত, এইবার বিএনপি নির্বাচন করবে। আপনারা একটা বিষয় লক্ষ্য করবেন, তারেক জিয়া ঘোষণা দিচ্ছে যে আন্দোলন করতে তাদের অর্থের অভাব হবে না এই টাকা কোথায় পেয়েছে? তারেক রহমান ইতোমধ্যে মনোনয়ন দিবে বলে অনেক প্রার্থী থেকে শত শত কোটি টাকা নিয়ে নিছে। কোন কারণে যদি নির্বাচন তারা না করে তাহলে প্রার্থীরাও তার থেকে টাকা চাইতে পারবে না আর তারেকও টাকা ফেরৎ দিবে না কাজেই এই সকল প্রার্থী বিএনপির রাজনীতি থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে আর বিএনপি মুসলিম লীগ হয়ে যাবে। এই জন্য বিএনপি তাদের দল বাঁচাতে নির্বাচন করতে বাধ্য।

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন , আমাদের ৮টি বিভাগীয় শহরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সব রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, শিক্ষক, সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে একটি করে শোভা যাত্রা করবেন যার প্রতিপাদ্য থাকবে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’। তাহলে দেশের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সকল শক্তি ঐক্যবদ্ধ ও উজ্জীবিত হবে।

তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দেয়ার মতো যোগ্যতা আমার নেই তাও আমার ব্যক্তিগত কিছু মতামত বলি। আপনি সারা বাংলাদেশে এত বেশি উন্নয়ন করেছেন যা দিনের পর দিন বলে শেষ করা যাবে না। আমাদের কিছু কিছু মন্ত্রী/এম.পি আছেন যে, তার এলাকায় কত উন্নয়ন হয়েছে সে নিজেও জানেন না। ইতোমধ্যেই গত ৬ আগস্ট আপনি তৃণমূলের নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে থেকে মানুষের হৃদয় জয় ও তাদের আস্থা- বিশ্বাস অর্জনের নির্দেশ দিয়েছেন। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আপনার নির্দেশনা মতো কাজ করছে করবে কিন্তু নমিনেশনের পিছনে ঘুরা এসব এম.পি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নেতাকর্মী ও জনগণের সাথে কোন সম্পর্ক নেই, তারা এলাকা ছেড়ে ঢাকায় নমিনেশনের জন্য ঘুরে, আপনার সেদিকে আরো একটু নজরদারী করলে ভালো হয়।

কাদের মির্জা বলেন, আপনি নির্দেশ দিয়েছেন দল যাকে মনোনয়ন দিবে তার পক্ষে কাজ করতে। আমরা তৃণমূলের সকল নেতাকর্মী আপোষহীনভাবে আপনার নির্দেশনা পালন করবো। দেশে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে এটা আমাদের এমপি প্রার্থীরা নিশ্চিত হয়ে গেছে। তাই এমপিরা নেতাকর্মী ও জনগণের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নমিনেশনের পিছনে ঘুরতেছে। কেউ কেউ মনে করতেছে নমিনেশন পেলেই বিজয়। আর নমিনেশনের ক্ষেত্রে অনেক সময় দেখা যায়, দীর্ঘবছর প্রবাসে থেকে হঠাৎ এসে নমিনেশন প্রার্থী হয়, এদের এলাকার সাথে কোন সম্পর্ক নেই, আর আসে আবার চলে যায়; এদের এভাবে নমিনেশন না দিয়ে, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এবার সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করলে আগামীতে এই প্রবাসীদের জন্য ১০টা আসন সংরক্ষিত রাখার জন্য আমি প্রস্তাব করছি।

তিনি আরও বলেন, নেতাদের নির্বাচন কার্যক্রম তদার তদারকি করার জন্য আপনি প্রতিটা অথবা ২/৩টা আসনে আওয়ামী লীগের সৎ ও মেধাবী বুদ্ধিজীবী এবং সুশীল সমাজের কাউকে দায়িত্ব দেন। অন্য কাউকে দায়িত্ব দিলে আবার টাকার কাছে বিক্রি হয়ে যাবে। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে আপনি মনোনয়নের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন। জনগণের প্রাণে একাত্মা প্রকাশ করে জনগণের সাথে মিশে কাজ করলে ইনশাহ আল্লাহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতার সঙ্গে আবারও সরকার গঠন করবে।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই। তিনি বসুরহাট পৌরসভার চারবারের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্বে আছেন। তিনি ‘অপরাজনীতি ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সত্য বচনের’ কারণে তিনি জাতীয়ভাবে বেশ আলোচিত হন।