নিজস্ব প্রতিবেদক :
বহু বছর বড় ধরনের কোনো সংস্কার হচ্ছে না চাঁদপুর শহরের নিউ ট্রাক রোড। যে কারণে এই সড়কে যান চলাচল তো দূরের কথা এই হেঁটে চলাও মুশকিল হয়ে পড়েছে। অথচ সড়কটি শহরের জন্য অতিগুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্তময়। কিন্তু পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সড়কটি মেরামতের কোনো উদ্যোগই নিচ্ছে না। এ কারণে এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে সড়কটির। বেড়েছে জনদুর্ভোগ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় ওয়ার্ড কাজী অফিস থেকে শুরু করে বিআইডাব্লিউটিএ মোড় পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার সড়কে বড় বড় অনেক গর্ত। সম্প্রতিতে বৃষ্টি হওয়ায় ওইসব গর্তে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও বছরজুড়ে যে কোনো সময় বৃষ্টি হলে সড়কটিতে যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। সব মিলিয়ে সড়কটির এখন বেহাল দশা।
স্থানীয় বাসিন্দা কুদ্দুছ মিয়া জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই সড়ক ও মহল্লার সংযোগ সড়ক থেকে শত শত স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাশিক্ষার্থী এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে। কিন্তু সড়কের এই বেহাল অবস্থার কারণে হেঁটে চলাও সম্ভব হয় না। শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্ম কাদা ও নোংরা পানিতে নষ্ট হয়। যানবাহন চলাচলের সময় ময়লা পানি এসে গায়ে পড়ে।
একাধিক রিকশাচালক জানান, বহু বছর ধরে এই সড়কটি মেরামত করা হয়নি। খুবই খারাপ অবস্থা এর। ছোট যানবাহন চলাচলের সময় আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। যেকোনো সময় দুর্ঘটনায় পড়তে পারি। অনেক সময় ইচ্ছা থাকলেও আমরা এই সড়কে ভাড়া নিয়ে আসতে চাই না।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা আলম খান বলেন, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত মালবাহী ট্রাক চলে। প্রত্যেক ট্রাক থেকে পৌরসভা টোল আদায় করে। এছাড়াও পৌরসভার জন্য এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। কারণ, দিনের বেলায় শহরের মূল সড়ক দিয়ে বড় বড় ট্রাকগুলো না গিয়ে এই সড়কে চলে। ট্রাক রোডের গুরুত্ব কোনো অংশই কম নয়। পৌর কর্তৃপক্ষ সড়কটি মজবুতভাবে মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া দরকার। বৃষ্টির পরে অনেক সময় ইটের খোয়া দিয়ে বড় বড় গর্ত ঠিক করা হয়। কিন্তু এক বৃষ্টিতে আবার পূর্বের অবস্থার ফিরে যায়।
ট্রাক রোডের বটতলা এলাকার মুদি ব্যবসায়ী হারুন মিয়া বলেন, বৃষ্টি এলে এই সড়কে জলাবদ্ধতা হয়। বৃষ্টি না থাকলে যানবাহন চলতে গিয়ে ধুলাবালি এসে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালপত্র নষ্ট হয়। কিছুক্ষণ পরপর দোকান পরিষ্কার করতে হয়। এছাড়া এই সড়কের ট্রাকঘাট থেকে ইট, বালু ও সিমেন্ট ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যগুলো ২৪ ঘণ্টা এই সড়ক দিয়ে পরিবহন করেন। বার বার অর্থ ব্যয় করার চাইতে সড়কটি মজুবত করে সংস্কার করা প্রয়োজন।
স্থানীয় কাউন্সিলর মো. ইউনুছ শোয়েব বলেন, আমি নিজেও এই সড়ক দিয়ে চলাচল করি। আমার সাধ্যমতো গর্তগুলো মেরামত করে রাখার চেষ্টা করি। পৌরসভার উন্নয়ন ফান্ডে টাকা হলে অবশ্যই সড়কটি মেরামত হবে।
চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান বলেন, শহরের যেসব এলাকায় উন্নয়নের প্রয়োজন সেখানে আমরা কাজ করছি। শহরের কয়েকটি সড়ক প্রশস্ত করা হয়েছে। ট্রাক রোডের অবস্থাও আমার জানা আছে। ট্রাক রোড মেরামতের বিষয়টিও আমাদের সংস্কার তালিকায় রয়েছে। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে গত দুই বছরে প্রায় ৫০ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছি। পর্যায়ক্রমে সবকাজই করা হবে।