Dhaka সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডিজিটাল শাটডাউনের মাধ্যমে মানুষের অধিকার হরণ করা হচ্ছে: ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ডিজিটাল শাটডাউনের মাধ্যমে সরকার মানুষের অধিকার হরণ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (২৩ জুলাই) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। ইন্টারনেট শাটডাউনসহ সব ধরনের ডিজিটাল নির্যাতনের প্রতিবাদে বিএনপির মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের কারণে শুধু বিএনপির নেতাকর্মী নয়, মুক্তমনা মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে। বিরোধীদল দমনে ডিজিটালাইজেশনসহ ইন্টারনেট শাটডাউনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে সরকার।

তিনি বলেন, সরকার গণঅভ্যুত্থানের ভয়ে নতুন চক্রান্ত শুরু করেছে, ডিজিটাল শাটডাউনের মাধ্যমে মানুষের অধিকার হরণ করছে। বিএনপির কর্মসূচিতে ব্যাঘাত ঘটাতে সমাবেশের দিন ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখছে। বিটিআরসিকে সরকার জনগণের বিরুদ্ধে নিপীড়নের নতুন আধুনিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এটি সুস্পষ্টভাবে ব্যক্তির নাগরিক অধিকারের লঙ্ঘন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলন আজ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত ফয়সালার পর্বে অনুপ্রবেশ করতে যাচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আপনাদের সকলের তথা দেশ-বিদেশের সকল গণতান্ত্রিক শক্তির সহযোগিতায় বাংলাদেশের চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলন আজ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত ফয়সালার পর্বে অনুপ্রবেশ করতে যাচ্ছে। এতদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড গুম-খুন, জেল-জুলুম, নির্যাতন, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাসহ বিভিন্ন রকম মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে এই আন্দোলনকে দমন করার অপচেষ্টা করেছে। তাদের সমস্ত অপচেষ্টাই প্রায় ব্যার্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। আন্দোলন সংগ্রাম ও ফ্যাসিবাদী সরকারের নির্যাতনের ওই সকল বিভিন্ন তথ্য প্রতিনিয়ত আপনাদের পাশাপাশি বিএনপি মিডিয়া সেল সাধ্যমত উন্মোচন করে আসছে। আন্দোলন সংগ্রামের এই তথ্য সমূহের অবাধ প্রবাহকে ক্ষমতাসীন সরকার ভয় পায়। ইতোমধ্যেই সে কারণে অনির্বাচিত অবৈধ পার্লামেন্টে তারা তৈরি করেছে গণবিরোধী ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্ট (ডিএসএ)। এই গণবিরোধী আইনের বলে ইতোমধ্যেই শুধু বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী নয়, মুক্তমনা অনেক সাংবাদিক ও স্বাধীন নাগরিকরাও শিকার হয়েছে মিথ্যা মামলার। এতকিছুর পরেও ক্ষমতাসীন সরকার গণঅভ্যুত্থানের ভয়ে ভীত হয়ে প্রয়োগ করছে নতুন ডিজিটাল অস্ত্র ‘ইন্টারনেট-শাটডাউন’। নির্যাতনকারী পুলিশ কেড়ে নিচ্ছে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ব্যক্তিগত ডিভাইস ‘মোবাইল ফোন’।

এর পরিপ্রেক্ষিতেই আমরা সংক্ষুব্ধ নাগরিকদের পক্ষ থেকে তীব্র ক্ষোভের সাথে আপনাদের সামনে তুলে ধরতে এসেছি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম দমনে নাগরিকদের ডিজিটাল অধিকার হরণে সরকারের চলমান অপ-তৎপরতার আরো কিছু চিত্র।

তিনি বলেন, বর্তমান এই জনবিচ্ছিন্ন সরকার কথায় কথায় ডিজিটাল বাংলাদেশের কৃতিত্ব দাবি করে থাকে। কিন্তু আমরা যদি বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে তুলনা করে দেখি, তবে দেখা যাবে বাংলাদেশে ডিজিটাল সেবার অবস্থা কত শোচনীয়। বরং সাইবার জগতে মানুষের যেটুকু স্বাভাবিক অধিকার অবশিষ্ট আছে সেই অধিকারকেও কেড়ে নেয়ার গভীর চক্রান্ত করছে এই আওয়ামী লীগ সরকার।

তিনি আরো বলেন, নাগরিকদের সেবা প্রদান এবং তাদের অধিকার সংরক্ষণ করার জন্য দেশে একাধিক প্রতিষ্ঠান আছে। তেমন একটি প্রতিষ্ঠানের নাম বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলা এ প্রতিষ্ঠানটির কাজ হলো দেশের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পরিচালনা এবং সেবার মান দেখভাল করা। কিন্তু জনগণের টাকায় প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানকেই বর্তমান স্বৈরাচারি সরকার জনগণের বিরুদ্ধে নিপীড়নের আরেকটি আধুনিক হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে। নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সুবিধা পাওয়ার মৌলিক নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে জনগণকে, কেড়ে নেয়া হচ্ছে মত প্রকাশের অধিকার।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, শুধু ইন্টারনেট বন্ধ নয়, রাস্তায় মানুষকে আটকে তাদের ব্যক্তিগত মোবাইল তল্লাশির নামে গণ হয়রানি করা হচ্ছে।

সরকার ডিজিটাইজেশনকে জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ইন্টারনেট শাটডাউনের ঘটনা নাগরিক অধিকারের ভয়ংকর লঙ্ঘন। আগামী দিনের রাজনীতিকে সামনে রেখে মানুষের ডিজিটাল অধিকারকে আরও সংকুচিত করার আশঙ্কা প্রকাশ করেন বিএনপির মহাসচিব।

তিনি বলেন, বিদেশ থেকে নজরদারি প্রযুক্তি কিনে জনগণের ওপর তার প্রয়োগ করছে সরকার। তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, একবার ভেবে দেখুন, তারা নিজেরাই বলছে দেশের পাঁচ কোটি মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য লোপাট হয়ে গেছে, এমনকি এ সংখ্যা ১৮ কোটিও হতে পারে, কে নিশ্চয়তা দিবে এর মাঝে আপনি নেই, আমি নেই। ডিজিটাল-ডাকাত আমার আপনার একান্ত সাইবার ডোমেইনে আয়েশে বিচরণ করছে, আর আমরা আতঙ্কে আছি, এই বুঝি আমার তথ্য পরিচয় চুরি করে একটা ভুয়া আইডি খুলে আপত্তিকর পোস্ট দিয়ে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের আসামি করে ফেলছে, আমার তথ্য দিয়ে গাড়ির রেজিট্রেশন করে ইয়াবা পাচার করে আমার আজীবন কারাবাসের পথ করে দিচ্ছে, আমার নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট করে অর্থ পাচার করছে অথবা বড় অংকের ঋণ আবেদন করে আমার সহায় সম্পদ লোপাটের ব্যবস্থা করছে। জাহালম নামের এক ভদ্রলোকের প্রতারিত হওয়ার ঘটনা ও শোচনীয় পরিনতির কথা নিশ্চয়ই আপনাদের স্মরণে আছে। আজ পুরো বাংলাদেশই জাহালমের পরিনতিতে আতঙ্কিত।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি ডিজিটালাইজেশন এই সভ্যতার আশির্বাদ যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে অধিকার হিসেবে জড়িয়ে আছে। কিন্তু বর্তমানে এই সরকার এই ডিজিটালাইজেশনকেই জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে। ডিজিটাল মাধ্যমে নিপীড়ন, জনগণের ওপর নজরদারি, ফোন কল রেকর্ড, অনলাইনে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন, অনলাইনে নারীদের প্রতি সহিংসতাকে উস্কে দেয়া, ভিন্ন মতাবলম্বীদের ব্ল্যাকমেইল করা, ভুল তথ্য অপতথ্য বিকৃত তথ্য ও কন্টেন্ট জালিয়াতির মাধ্যমে প্রপাগান্ডা চালানো সহ নানান অপরাধ করে চলেছে এই সরকার।

তিনি আরও বলেন, গত ১২ জুলাই এক দফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ চলাকালে ওই এলাকার ইন্টারনেট সুবিধা বিঘ্নিত করা হয়েছিল। অথচ ওই দিন একই সময়ে বায়তুল মোকাররম সরকারি দলের সমাবেশ স্থলের ইন্টারনেট সংযোগ ছিল স্বাভাবিক।

সংবাদ সম্মেলন অন্যদের মধ্যে বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সদস্য শাম্মী আক্তার, রুমিন ফারহানা, কাদের গণি চৌধুরী, মীর হেলাল উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ডিজিটাল শাটডাউনের মাধ্যমে মানুষের অধিকার হরণ করা হচ্ছে: ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০২:৩৯:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ জুলাই ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ডিজিটাল শাটডাউনের মাধ্যমে সরকার মানুষের অধিকার হরণ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

রোববার (২৩ জুলাই) রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। ইন্টারনেট শাটডাউনসহ সব ধরনের ডিজিটাল নির্যাতনের প্রতিবাদে বিএনপির মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের কারণে শুধু বিএনপির নেতাকর্মী নয়, মুক্তমনা মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে। বিরোধীদল দমনে ডিজিটালাইজেশনসহ ইন্টারনেট শাটডাউনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে সরকার।

তিনি বলেন, সরকার গণঅভ্যুত্থানের ভয়ে নতুন চক্রান্ত শুরু করেছে, ডিজিটাল শাটডাউনের মাধ্যমে মানুষের অধিকার হরণ করছে। বিএনপির কর্মসূচিতে ব্যাঘাত ঘটাতে সমাবেশের দিন ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখছে। বিটিআরসিকে সরকার জনগণের বিরুদ্ধে নিপীড়নের নতুন আধুনিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এটি সুস্পষ্টভাবে ব্যক্তির নাগরিক অধিকারের লঙ্ঘন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলন আজ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত ফয়সালার পর্বে অনুপ্রবেশ করতে যাচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আপনাদের সকলের তথা দেশ-বিদেশের সকল গণতান্ত্রিক শক্তির সহযোগিতায় বাংলাদেশের চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলন আজ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে চূড়ান্ত ফয়সালার পর্বে অনুপ্রবেশ করতে যাচ্ছে। এতদিন ধরে আওয়ামী লীগ সরকারের বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড গুম-খুন, জেল-জুলুম, নির্যাতন, নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাসহ বিভিন্ন রকম মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে এই আন্দোলনকে দমন করার অপচেষ্টা করেছে। তাদের সমস্ত অপচেষ্টাই প্রায় ব্যার্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। আন্দোলন সংগ্রাম ও ফ্যাসিবাদী সরকারের নির্যাতনের ওই সকল বিভিন্ন তথ্য প্রতিনিয়ত আপনাদের পাশাপাশি বিএনপি মিডিয়া সেল সাধ্যমত উন্মোচন করে আসছে। আন্দোলন সংগ্রামের এই তথ্য সমূহের অবাধ প্রবাহকে ক্ষমতাসীন সরকার ভয় পায়। ইতোমধ্যেই সে কারণে অনির্বাচিত অবৈধ পার্লামেন্টে তারা তৈরি করেছে গণবিরোধী ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্ট (ডিএসএ)। এই গণবিরোধী আইনের বলে ইতোমধ্যেই শুধু বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী নয়, মুক্তমনা অনেক সাংবাদিক ও স্বাধীন নাগরিকরাও শিকার হয়েছে মিথ্যা মামলার। এতকিছুর পরেও ক্ষমতাসীন সরকার গণঅভ্যুত্থানের ভয়ে ভীত হয়ে প্রয়োগ করছে নতুন ডিজিটাল অস্ত্র ‘ইন্টারনেট-শাটডাউন’। নির্যাতনকারী পুলিশ কেড়ে নিচ্ছে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ব্যক্তিগত ডিভাইস ‘মোবাইল ফোন’।

এর পরিপ্রেক্ষিতেই আমরা সংক্ষুব্ধ নাগরিকদের পক্ষ থেকে তীব্র ক্ষোভের সাথে আপনাদের সামনে তুলে ধরতে এসেছি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম দমনে নাগরিকদের ডিজিটাল অধিকার হরণে সরকারের চলমান অপ-তৎপরতার আরো কিছু চিত্র।

তিনি বলেন, বর্তমান এই জনবিচ্ছিন্ন সরকার কথায় কথায় ডিজিটাল বাংলাদেশের কৃতিত্ব দাবি করে থাকে। কিন্তু আমরা যদি বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে তুলনা করে দেখি, তবে দেখা যাবে বাংলাদেশে ডিজিটাল সেবার অবস্থা কত শোচনীয়। বরং সাইবার জগতে মানুষের যেটুকু স্বাভাবিক অধিকার অবশিষ্ট আছে সেই অধিকারকেও কেড়ে নেয়ার গভীর চক্রান্ত করছে এই আওয়ামী লীগ সরকার।

তিনি আরো বলেন, নাগরিকদের সেবা প্রদান এবং তাদের অধিকার সংরক্ষণ করার জন্য দেশে একাধিক প্রতিষ্ঠান আছে। তেমন একটি প্রতিষ্ঠানের নাম বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলা এ প্রতিষ্ঠানটির কাজ হলো দেশের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পরিচালনা এবং সেবার মান দেখভাল করা। কিন্তু জনগণের টাকায় প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানকেই বর্তমান স্বৈরাচারি সরকার জনগণের বিরুদ্ধে নিপীড়নের আরেকটি আধুনিক হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে। নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সুবিধা পাওয়ার মৌলিক নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে জনগণকে, কেড়ে নেয়া হচ্ছে মত প্রকাশের অধিকার।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, শুধু ইন্টারনেট বন্ধ নয়, রাস্তায় মানুষকে আটকে তাদের ব্যক্তিগত মোবাইল তল্লাশির নামে গণ হয়রানি করা হচ্ছে।

সরকার ডিজিটাইজেশনকে জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ইন্টারনেট শাটডাউনের ঘটনা নাগরিক অধিকারের ভয়ংকর লঙ্ঘন। আগামী দিনের রাজনীতিকে সামনে রেখে মানুষের ডিজিটাল অধিকারকে আরও সংকুচিত করার আশঙ্কা প্রকাশ করেন বিএনপির মহাসচিব।

তিনি বলেন, বিদেশ থেকে নজরদারি প্রযুক্তি কিনে জনগণের ওপর তার প্রয়োগ করছে সরকার। তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, একবার ভেবে দেখুন, তারা নিজেরাই বলছে দেশের পাঁচ কোটি মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য লোপাট হয়ে গেছে, এমনকি এ সংখ্যা ১৮ কোটিও হতে পারে, কে নিশ্চয়তা দিবে এর মাঝে আপনি নেই, আমি নেই। ডিজিটাল-ডাকাত আমার আপনার একান্ত সাইবার ডোমেইনে আয়েশে বিচরণ করছে, আর আমরা আতঙ্কে আছি, এই বুঝি আমার তথ্য পরিচয় চুরি করে একটা ভুয়া আইডি খুলে আপত্তিকর পোস্ট দিয়ে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের আসামি করে ফেলছে, আমার তথ্য দিয়ে গাড়ির রেজিট্রেশন করে ইয়াবা পাচার করে আমার আজীবন কারাবাসের পথ করে দিচ্ছে, আমার নামে ভুয়া অ্যাকাউন্ট করে অর্থ পাচার করছে অথবা বড় অংকের ঋণ আবেদন করে আমার সহায় সম্পদ লোপাটের ব্যবস্থা করছে। জাহালম নামের এক ভদ্রলোকের প্রতারিত হওয়ার ঘটনা ও শোচনীয় পরিনতির কথা নিশ্চয়ই আপনাদের স্মরণে আছে। আজ পুরো বাংলাদেশই জাহালমের পরিনতিতে আতঙ্কিত।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি ডিজিটালাইজেশন এই সভ্যতার আশির্বাদ যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে অধিকার হিসেবে জড়িয়ে আছে। কিন্তু বর্তমানে এই সরকার এই ডিজিটালাইজেশনকেই জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে। ডিজিটাল মাধ্যমে নিপীড়ন, জনগণের ওপর নজরদারি, ফোন কল রেকর্ড, অনলাইনে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন, অনলাইনে নারীদের প্রতি সহিংসতাকে উস্কে দেয়া, ভিন্ন মতাবলম্বীদের ব্ল্যাকমেইল করা, ভুল তথ্য অপতথ্য বিকৃত তথ্য ও কন্টেন্ট জালিয়াতির মাধ্যমে প্রপাগান্ডা চালানো সহ নানান অপরাধ করে চলেছে এই সরকার।

তিনি আরও বলেন, গত ১২ জুলাই এক দফা দাবিতে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ চলাকালে ওই এলাকার ইন্টারনেট সুবিধা বিঘ্নিত করা হয়েছিল। অথচ ওই দিন একই সময়ে বায়তুল মোকাররম সরকারি দলের সমাবেশ স্থলের ইন্টারনেট সংযোগ ছিল স্বাভাবিক।

সংবাদ সম্মেলন অন্যদের মধ্যে বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সদস্য শাম্মী আক্তার, রুমিন ফারহানা, কাদের গণি চৌধুরী, মীর হেলাল উপস্থিত ছিলেন।