বিনোদন ডেস্ক :
ঢাকাই শোবিজের সফলতম দম্পতি নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। একসঙ্গে সংসার জীবনের গল্প রচনা করে চলছেন দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে। ভক্তদের কাছেও তাদের ভালোবাসা, সম্পর্ক আর সংসারের খুচরো গল্প ভীষণ প্রিয়। তাদের একে-অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ কিংবা ঝগড়াহীন দ্বৈত জীবন, অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণার বটে।
চাইলেই সময়কে পেছনে নেওয়া যায় না। নইলে অনেকেই তাদের সুখস্মৃতিতে বারবার ফিরে যেতেন। যেহেতু সময়কে পেছনে নেওয়া যায় না তাই পেছনের সময়ের সেই মুহূর্তটাকে বর্তমানে এনে ফ্রেমবন্দি করার আইডিয়া মোটেও মন্দ না। তাই তো এমন এক অভিনব পন্থাই অবলম্বন করলেন জনপ্রিয় তারকা দম্পতি নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা।
রোবাবার (১৬ জুলাই) বিবাহিত জীবনের ১৩ বছর পূর্ণ করলেন তিশা-ফারুকী। এই শুভক্ষণে পুরোনো স্মৃতিতে ফিরলেন তারা। পরিকল্পনায় ছিল, যে পোশাক পরে বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন ঠিক সেই পোশাকেই তেরো বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ফটোশুট করা। যেই ভাবা সেই কাজ। যার ঝলক দেখা গেল দুজনের ফেসবুক দেয়ালে।
১৩তম বিবাহবার্ষিকীতে তিশা ও ফারুকী তাদের বিয়ের পোশাকে পুনরায় সেজেছেন। শুধু তাই নয়, সেই পোশাকে এমন একটি জায়গায় গিয়ে ফটোশুট করেছেন, যেই জায়গার সঙ্গে তাদের সম্পর্কের সূচনার যোগসূত্র রয়েছে!
পুরো বিষয়টি নির্মাতা ফারুকীর ভাষ্যে শোনা যাক, জীবন কখনও কখনও নিজের মতো করেই স্ক্রিপ্ট লেখে। আমাদের বিয়ের ১৩ বছর পূর্তিতে তিশা পরিকল্পনা করলো- আমরা বিয়েতে যে পোশাক পরেছিলাম, সেটা পরেই ১৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটা ফটোশুট করবো। সেই একই মানুষ, একই পোশাক, শুধু সময়টা এগিয়ে গেছে, আর আমাদের জীবনে এসেছে ইলহাম। তো সেই অনুযায়ী আমরা ভাবছিলাম কোথায় যাওয়া যায়! ঢাকার কাছেই হিজল তমাল নামে একটা পিকনিক স্পট আছে। ওখানেই গেলাম। গিয়েই খেয়াল হলো, এর মালিকের বাড়িতেই ‘নিখোঁজ সংবাদ’র (নাটক) শুটিং হয়েছিল। আর সেই স্পটেই আমি তিশাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। আজকে তেরো বছর পর সেখানেই আসাটা মহাজাগতিক এক পরিকল্পনাই বটে।
ফারুকী সরল মনে অকপটেই জানালেন, তিশার ওপর তিনি কতটা নির্ভরশীল। রাতে লাইট নিভিয়ে একা ঘুমাতেও তার ভয় হয়। টেলিভিশন’ নির্মাতা বললেন, ‘তেরো বছরে আমরা অনেক চড়াই-উতরাই পার হয়েছি। বাচ্চা নেওয়া নিয়ে অনেক কিছুর মুখোমুখি হয়েছি। কিন্তু নিঃসন্দেহে এই জার্নিটা ছিল অসাধারণ। তোমার কাছে কৃতজ্ঞতার তালিকাটা অনেক বড়। কত বড় বড় বিষয় থেকে শুরু করে তুচ্ছ বিষয়ে তোমার ওপর নির্ভর করি। তোমাকে ছাড়া বিদেশে গেলে এখনও রাতের বেলা বাতি নেভাতে পারি না, ভয় পাই। ভাবি একা একা যাবো কিভাবে এই দুনিয়া থেকে? অথচ কী আশ্চর্য আমরা একা একাই বড় হয়েছিলাম এই দুনিয়ায়!
সবশেষে প্রিয়তমা স্ত্রীকে ভালোবাসা জানিয়ে ফারুকী বলেছেন, আরও কত কিছু বলতে মন চায়। তার চেয়ে বরং বলি, লাভ ইউ তিশা। হ্যাপি অ্যানিভারসারি টু আস।
এদিকে তিশাও নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন নিজের সোশ্যাল হ্যান্ডেলে। লিখেছেন, ‘২০১০-র এই দিনটাতে আমাদের বিয়ে হয়। আজ ২০২৩। দেখতে দেখতে তেরোটা বছর একসাথে কাটিয়ে দিলাম। তাই ভাবলাম একই পোশাকে, একই মানুষের সাথে আবার বিয়ে হোক। জীবনে যোগ হয়েছে শুধু ইলহাম। আর বিয়োগ হয়েছে সময়। বাকি সবকিছু আগের মতোই আছে। ধন্যবাদ তোমাকে, এত বছর আমাকে সহ্য করার জন্য। আলহামদুলিল্লাহ। লাভ ইউ সো মাচ। হ্যাপি ম্যারেজ অ্যানিভার্সারি।’
ফারুকী-তিশার এই অভিনব পরিকল্পনা এবং পরষ্পরের প্রতি ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ নেটদুনিয়া। ফারুকীর পোস্টে এ পর্যন্ত ৬১ হাজার এবং তিশার পোস্টে ১ লাখ ৬১ হাজার রিঅ্যাকশন জমা হয়েছে। আর দুজনের পোস্টে শুভেচ্ছা মন্তব্যের সংখ্যা সাড়ে নয় হাজার।
বলা দরকার, বিয়ের এক যুগ পর সন্তানের বাবা-মা হয়েছেন ফারুকী-তিশা। গত বছরের ৫ জানুয়ারি তাদের ঘর আলো করে আসে ইলহাম।
উল্লেখ্য, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ‘পারাপার’ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন নুসরাত ইমরোজ তিশা, সেখান থেকেই তাদের চেনাজানা। পরে ‘সিক্সটি নাইন’ নাটক করতে গিয়ে ভালো বন্ধুত্ব তৈরি হয় দুজনের। বন্ধুত্ব থেকে প্রেম। দীর্ঘদিনের সে প্রেমকে পরিণয়ে রূপ দেন ২০১০ সালের ১৬ জুলাই। বিয়ের এক যুগ পর, গত বছরের ৫ জানুয়ারি তাদের কোলজুড়ে আসে একমাত্র কন্যাসন্তান ইলহাম নুসরাত ফারুকী।