নিজস্ব প্রতিবেদক :
দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় শেরপুরের ঝিনাইগাতী-ধানশাইল সড়কের উত্তরণ পাবলিক স্কুল হতে মোল্লাপাড়া কবরস্থান পর্যন্ত সড়কের পিচ উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সড়কটি এখন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এতে এ পথে চলাচলকারী শিক্ষার্থী, জনসাধারণ ও যানবাহন চালকেরা ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়কটির অধিকাংশ স্থানে পিচ ওঠে গিয়ে ইট-সুরকি বের হয়ে গেছে ও ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো স্থানে সড়কের দুই পাশের মাটি সরে গিয়ে সড়কটি দেবে গেছে ও পানি জমে আছে। ভাঙাচোরা এ সড়ক দিয়ে পথচারী ও যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
ভুক্তভোগীরা জানায়, ২০১২-১৩ সালে প্রায় এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যর এ সড়কটির কার্পেটিং কাজ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। এ সড়ক দিয়েই হাজী অছি আমরুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ঝিনাইগাতী দাখিল মাদরাসা, মহিলা আদর্শ ডিগ্রি কলেজেসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় রাস্তাটির কার্পেটিং, ইট ও খোয়া সরে গিয়ে ছোট-বড় অনেক খাদের সৃষ্টি হয়েছে। এসব খাদে পড়ে অটোরিকশা, রিকশাসহ ছোটখাটো যানবাহন উল্টে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এছাড়া বৃষ্টির পানি জমে থাকায় ও কাদার জন্য সাধারণ মানুষের পায়ে হেঁটে চলাচলও কষ্টের হয়ে উঠেছে।
ঝিনাইগাতী দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থী ফজলুল হক জানান, ভাঙাচোরা সড়কটি দিয়ে বাইসাইকেল চালিয়ে মাদরাসায় যেতে খুব কষ্ট হয়। বৃষ্টির দিনে তো হেঁটে যাওয়াই মুশকিল।
আরেক শিক্ষার্থী আফসানা মিমি জানান, সড়ক ভাঙা থাকার কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসতে সমস্যা হয়। অনেক শিক্ষার্থীরা হাঁটতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে তাদের স্কুল ড্রেসে কাদা ও নোংরা পানি লেগে যায়। বাধ্য হয়ে শিশু শিক্ষার্থীরা কাদা জামা নিয়েই স্কুলে যায়, না হয় আবার বাসায় গিয়ে ড্রেস পরিবর্তন করে স্কুলে আসতে হচ্ছে তাদের।
স্থানীয় বাসিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রাশেদা পারভীন রেনু বলেন, আমাদের রাস্তাটির এমন অবস্থা হয়েছে; রিকশা চালকেরাও ভাড়া নিয়ে আসতে চান না। বৃষ্টির পানি জমে থাকায় ও সৃষ্ট কাদায় হেঁটেও চলাচল করা যায় না। এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী সবারই দুর্ভোগের সীমা নেই। সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে এ অবস্থায় পড়ে আছে। এখানকার জনপ্রতিনিধি ও দায়িত্বশীলরা এদিকে কোনো নজরই দেয় না। যার ফলে সড়কটি আর সংস্কার হচ্ছে না। দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. জাহিদুল হক মনির বলেন, আমি বেশ কয়েকদিন সরেজমিনে গিয়ে সড়কটি দেখে এসেছি। স্থানীয়দের দুর্ভোগ লাঘবে সড়কটি সম্প্রসারণসহ অনতিবিলম্বে তা সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের উপজেলা প্রকৌশলী শুভ বসাক বলেন, এ রাস্তাটি বিষয়ে আমার জানা ছিল না। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে এ রাস্তাটি বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।