নিজস্ব প্রতিবেদক :
বড় অঙ্কের ঘাটতি নিয়ে বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরের সমাপ্ত করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ৪৪ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি নিয়ে বছর (জুলাই-জুন) শেষ হয়েছে।
রাজস্ব আদায়ের তিন খাত হলো শুল্ক, আয়কর ও মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট। বিদায়ী অর্থবছরে এই তিন খাতের মধ্যে বেশি কমেছে শুল্ক আদায়ের ক্ষেত্রে। ডলার বাঁচাতে আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপের কারণে কমে গেছে আমদানি। এর প্রভাবে শুল্ক আদায়ও কমেছে।
যদিও মূল্য সংযোজন করের (ভ্যাট) চূড়ান্ত হিসাব এখনো আসেনি। আগামী ১৫ জুলাই ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের শেষ দিন। ওই সময় শেষে বড় অঙ্কের অর্থ জমা পড়বে। ফলে ঘাটতি কিছুটা কমবে বলে মনে করছেন এনবিআর সংশ্লিষ্টরা।
গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে সংস্থাটির রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। বিপরীতে এনবিআরের সাময়িক হিসাব অনুযায়ী আদায় হয়েছে ৩ লাখ ২৫ হাজার ২৭২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় পিছিয়ে আছে প্রায় ৪৪ হাজার ৭২৮ কোটি টাকা। যদিও গত অর্থবছরের তুলনায় রাজস্ব আদায় বেড়েছে ৮.১২ শতাংশ।
এর আগে গত অর্থবছরের ১১ মাস (জুলাই-মে) শেষে ঘাটতির পরিমাণ ছিল প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ শেষ পর্যন্ত এনবিআরের জন্য উচ্চাভিলাষী থেকে গেলো।
এনবিআর সূত্রে আরও জানা যায়, গত অর্থবছরে আমদানি-রপ্তানি খাত অর্থাৎ কাস্টমস বিভাগ থেকে ১ লাখ ১১ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৯১ হাজার ৭১৭ কোটি টাকা। সবচেয়ে কম ২.৫৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে ঘাটতি প্রায় ১৯ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা।
অন্যদিকে ভ্যাট খাতে সর্বোচ্চ সাড়ে ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হলেও ঘাটতি থেকে বের হতে পারেনি। ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। ঘাটতি ১৬ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। ভ্যাট খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন ১৫ জুলাই যখন চূড়ান্ত হিসাব হবে তখন হয়ত ঘাটতি অনেক কমে যাবে।
আর আয়কর খাত থেকে আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ২২ হাজার ১০০ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৯২১ কোটি টাকা। ঘাটতি ৯ হাজার ১৭৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। আয়কর খাতে ৯.৬২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
এর আগে গত ২০২১-২২ অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২৮ হাজার কোটি টাকা। ওই বছর ৩ লাখ ৮৫২ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছিল।
নাম প্রকাশ না করে এ বিষয়ে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরের এনবিআরের তিন বিভাগে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৮৭.৯১ শতাংশ লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। যার মধ্যে কাস্টমস বিভাগ থেকে ৮২.৬৩ শতাংশ, আয়করে ৯২.৪৮ শতাংশ এবং ভ্যাট বিভাগ থেকে ৮৮.১২ শতাংশ রাজস্ব আহরণ সম্ভব হয়েছে। এটা কম সাফল্য নয়! তবে বিশ্ব পরিস্থিতি বিবেচনা করতে হবে।
চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।