নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি-জামায়াত বিদেশিদের কাছে ধর্না দেয়। তারা বিদেশিদের কাছে ধর্না দিয়ে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি তাদের কাছে তুলে ধরেন। আমাদের রাজনৈতিক মতবিরোধিতা থাকতেই পারে। কিন্তু সেটি বিদেশিদের কাছে তুলে ধরা দেশবিরোধী অপতৎপরতা। এটা করছেন বিএনপিসহ তাদের মিত্ররা। তারা জনগণের কাছে ধর্না না দিয়ে দেশবিরোধী অপতৎপরতা করছেন।
রোববার (৯ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ইউনিয়ন সদস্য সংস্থা আয়োজিত ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের ভাবনা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তারা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বিদেশিদের কাছে নালিশ করছে। তবে বিএনপি এখন চারটি বক্তব্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ আছে। আর বক্তব্যগুলো হচ্ছে— তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচন কমিশন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য ও তারেক রহমানের শাস্তি। কিন্তু এর বাইরে তাদের দেশের জনগণকে নিয়ে কোনো বক্তব্য নেই।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশবিরোধী অপতৎপরতায় লিপ্ত বিএনপিকে বর্জন করুন। দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন ষড়যন্ত্র হচ্ছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে যখন সমৃদ্ধের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন তাকে হত্যা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও যখন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তখন ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন বিএনপিসহ মিত্ররা।
দেশের উন্নয়নের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, গত সাড়ে ১৪ বছরে দেশের যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে তা দেশের জনগণের কাছে আপনাদেরই তুলে ধরতে হবে। এখন গ্রামের ছেলেদের সঙ্গে শহরের ছেলেদের আর কোনো পার্থক্য নেই। দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, তখন দেশকে নিয়ে নানা রকমের ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে এবং সেই ষড়যন্ত্রের সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে আমাদেরই দু’একজন রাজনীতিবিদ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ২২ প্রকার ভাতা চালু আছে। যেমন- বয়স্ক ভাতা ও বিধবা ভাতা। আর এই সমস্ত সামাজিক কার্যক্রমগুলো ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমেই বিতরণ করা হয়ে থাকে। কাজেই আপনারাই জানেন যে, দেশের প্রান্তিক জনগণের জন্য সরকার কী ভূমিকা রাখছে।
সম্প্রতি সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় নির্বাচন নির্বাচন কমিশন সফলতার সঙ্গে শেষ করেছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এই নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলেও জনগণের সম্পৃক্ততা ছিল। তাই এখান থেকে বিএনপির সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। তারা কী জনগণের সঙ্গে থাকবে কি না।
হাছান মাহমুদ বলেন, গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বিএনপির ওপর একটি চপেটাঘাত। তারা নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তাদের নেতা, কর্মী, সমর্থদের বলেছে নির্বাচন বর্জন করার জন্য। তাদের আহ্বানে জনগণ সাড়া দেয়নি। নির্বাচনে ৫০ শতাংশ, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। এটি বিএনপির ওপর চপেটাঘাত। এখান থেকে বিএনপির শিক্ষা নেওয়া দরকার। বিএনপি বর্জন করতে পারে। কিন্তু জনগণ বর্জন করবে না।
ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যরা তৃণমূলের নেতা। কার বাড়িতে কী সমস্যা এগুলো ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যরা জানেন। স্থানীয় সরকার প্রধানমন্ত্রী শক্তিশালী করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যদের ভাতার পরিমাণ বাড়িয়েছেন। সমাজের অবহেলিত ও পশ্চাৎ মানুষের কল্যাণ প্রধানমন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন। ২২ ধরনের ভাতা সরকার চালু করেছে। ওএস, এমএসের চাল দিচ্ছে। এগুলো ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যরা নির্ধারণ করেন।
তিনি বলেন, এখন কেউ বিদেশে গেলে পাঁচ বছর পর দেশে এলে এলাকা চিন্তে কষ্ট হয়। এখন আর কুঁড়েঘর নেই। এখন সাধারণ পরিবারে কেউ না খেয়ে থাকে না। এখন মাছ ও মাংস খায়, বাংলাদেশ বদলে গেছে।
সংগঠনের চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার মিলনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লায়ন ফিরোজুর রহমান ওলী ও সংগঠনের মহাসচিব এম সাইফুল ইসলাম মোয়াজ্জেম প্রমুখ।