নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশজুড়ে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর সংক্রমণ ও মৃত্যুর ধারা অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায়ও মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ জনে। একই সময়ে নতুন করে ১৮২ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে সপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় বেশিরভাগ হাসপাতাল তাদের ডেঙ্গুর রিপোর্ট দেয়নি। আগামীকাল তা সমন্বয় করার কথা জানানো হয়েছে।
শুক্রবার (৭ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের ইনচার্জ ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে নতুন করে আরও ১৮১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। নতুন ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ৭২ জন ঢাকায় চিকিৎসাধীন। বাকি ১১০ জন রাজধানীর বাইরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর এই সময়ে ডেঙ্গুতে নতুন করে একজন মারা গেছেন। ফলে চলতি বছর মশাবাহিত রোগটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ জনে।
বর্তমানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ২ হাজার ১৬৫ জন ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৫৩টি ডেঙ্গু ডেডিকেটেড হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ১ হাজার ৫২৮ জন। এছাড়া ঢাকার বাইরে ৬৩৭ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, চলতি বছরের প্রথম দিন (১ জানুয়ারি) থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ১১ হাজার ২৯৮ জন। এরমধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৯ হাজার ৬৮ জন।
প্রতিবছর বর্ষাকালে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন। ওই সময়ে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। ওই বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া ২০২২ সালে ডেঙ্গু নিয়ে মোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। এরমধ্যে গত বছর মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে ২৮১ জন মারা গেছেন।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে দেরিতে ভর্তির কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে। এ বছর ডেঙ্গুতে যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের ৮০ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে ভর্তির ১ থেকে ৩ দিনের মধ্যে। ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ৫০ জনের তথ্য পর্যালোচনা করে এটা জানতে পেরেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা। পর্যালোচনায় আরও দেখা গেছে, মৃত ব্যক্তিদের বড় অংশই কর্মক্ষম। আর বেশি মারা যাচ্ছেন নারীরা।