Dhaka শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাগুলো রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাগুলো রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকে বলে জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল আমিনা জে মোহাম্মদের কাছে অভিযোগ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

শনিবার (১ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল আমিনা জে মোহাম্মদের সঙ্গে ‘রোড টু সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস সামিট ২০২৩’ শীর্ষক সেমিনার শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিরোধী দল নালিশ-টালিশ করে। সে কারণে দেশের জনগণের কাছে তাদের আস্থা নেই। জনগণের প্রতি বিশ্বাস নেই। তাই তারা বিদেশিদের কাছে নালিশ করেন। এক সময় ব্রিটিশদের কাছে আমাদের দেশ ২০০ বছর পরাধীন ছিল। তখনও মীর জাফরের মতো ষড়যন্ত্রকারীরা ছিল, এখনও আছে। তবে, এখন নালিশ করে লাভ হবে না। এ রকম ষড়যন্ত্রকারী সব সময় ছিল, এখনো আছে। তবে জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বিদেশিদের ডেকে এনে দেশের যেন অনিষ্ট করতে না পারে, এজন্য জনগণকে সচেতন থাকতে হবে । জনগণকে বলব, যারা দেশকে ধ্বংস করতে চায়, তাদেরকে বর্জন করুন। তাহলে দেশের মঙ্গল, জনগণের মঙ্গল।

জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেলের সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে আলাপ হয়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। উন্নয়ন বজায় রাখা বড় চ্যালেঞ্জ। ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচনও বড় চ্যালেঞ্জ।

আব্দুল মোমেন বলেন, আমি জনগণকে আহ্বান জানাই, যারা দেশের ধ্বংস চায়, আপনারা তাদের বর্জন করুন। এ দেশের উন্নতি হলে দেশের যে-যেই মতের বা দলের হোক না কেন; তারও উন্নতি হবে। সুতরাং সবাই একসঙ্গে দেশের যাতে অনিষ্ট না হয়, বিদেশ থেকে ডেকে এনে যেন দেশের অনিষ্ট না করা হয়, সেই কাজটিই করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আশা করি আগামী দিনে আমাদের যত দলমত আছে, তারা দেশটাকে ধ্বংস করবেন না। আর নালিশ-টালিশ করে খুব লাভ হবে না। দুঃখের বিষয়, আমাদের অনেক উন্নয়ন সহযোগী রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আমি আজ তাকে (আমিনা) সেটি বলেছি, আপনাদের যত উন্নয়ন সংস্থা, তাদের উন্নয়ন কার্যক্রমে মনোযোগ দেওয়া উচিত, রাজনীতিতে নয়। (বাংলাদেশের) নির্বাচন যখন হবে, তখন হবে। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিচ্ছি। সেটি নিয়ে আর কথা বলার কোনো প্রয়োজন নেই।

তিনি বলেন, আমরা তার (আমিনা) সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক আলোচনা করিনি। আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশ প্রতিদিন চ্যালেঞ্জের মুখে থাকে। উন্নয়ন বড় চ্যালেঞ্জ আমাদের, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পূরণ বড় চ্যালেঞ্জ আমাদের।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে জাতিসংঘের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের আট বছর পরও এসডিজি অর্জনে অর্থায়ন প্রক্রিয়া খুব দ্রুত এগোচ্ছে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আমরা খুব ভালো করেছি, আমরা এসডিজিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি এবং আমরা এটিকে আমাদের পুরো সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত করেছি। বাংলাদেশ তার এসডিজি অর্থায়নের ৮৫ শতাংশ অভ্যন্তরীণভাবে এবং বাকি ১৫ শতাংশ আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মোমেন বলেন, ২০৩০ সালের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে এসডিজি অর্জনের জন্য আর্থিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির এটাই উপযুক্ত সময়।

অনুষ্ঠান স্বাগত বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আখতার হোসেন এসডিজি বিষয়ে একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন। প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরী, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির এবং ইউনিলিভার বাংলাদেশের পরিচালক শামীমা আক্তার।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান সিইসির

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাগুলো রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০১:১৪:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ জুলাই ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাগুলো রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকে বলে জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল আমিনা জে মোহাম্মদের কাছে অভিযোগ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

শনিবার (১ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল আমিনা জে মোহাম্মদের সঙ্গে ‘রোড টু সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস সামিট ২০২৩’ শীর্ষক সেমিনার শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিরোধী দল নালিশ-টালিশ করে। সে কারণে দেশের জনগণের কাছে তাদের আস্থা নেই। জনগণের প্রতি বিশ্বাস নেই। তাই তারা বিদেশিদের কাছে নালিশ করেন। এক সময় ব্রিটিশদের কাছে আমাদের দেশ ২০০ বছর পরাধীন ছিল। তখনও মীর জাফরের মতো ষড়যন্ত্রকারীরা ছিল, এখনও আছে। তবে, এখন নালিশ করে লাভ হবে না। এ রকম ষড়যন্ত্রকারী সব সময় ছিল, এখনো আছে। তবে জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বিদেশিদের ডেকে এনে দেশের যেন অনিষ্ট করতে না পারে, এজন্য জনগণকে সচেতন থাকতে হবে । জনগণকে বলব, যারা দেশকে ধ্বংস করতে চায়, তাদেরকে বর্জন করুন। তাহলে দেশের মঙ্গল, জনগণের মঙ্গল।

জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেলের সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে আলাপ হয়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। উন্নয়ন বজায় রাখা বড় চ্যালেঞ্জ। ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্য বিমোচনও বড় চ্যালেঞ্জ।

আব্দুল মোমেন বলেন, আমি জনগণকে আহ্বান জানাই, যারা দেশের ধ্বংস চায়, আপনারা তাদের বর্জন করুন। এ দেশের উন্নতি হলে দেশের যে-যেই মতের বা দলের হোক না কেন; তারও উন্নতি হবে। সুতরাং সবাই একসঙ্গে দেশের যাতে অনিষ্ট না হয়, বিদেশ থেকে ডেকে এনে যেন দেশের অনিষ্ট না করা হয়, সেই কাজটিই করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আশা করি আগামী দিনে আমাদের যত দলমত আছে, তারা দেশটাকে ধ্বংস করবেন না। আর নালিশ-টালিশ করে খুব লাভ হবে না। দুঃখের বিষয়, আমাদের অনেক উন্নয়ন সহযোগী রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আমি আজ তাকে (আমিনা) সেটি বলেছি, আপনাদের যত উন্নয়ন সংস্থা, তাদের উন্নয়ন কার্যক্রমে মনোযোগ দেওয়া উচিত, রাজনীতিতে নয়। (বাংলাদেশের) নির্বাচন যখন হবে, তখন হবে। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিচ্ছি। সেটি নিয়ে আর কথা বলার কোনো প্রয়োজন নেই।

তিনি বলেন, আমরা তার (আমিনা) সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক আলোচনা করিনি। আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশ প্রতিদিন চ্যালেঞ্জের মুখে থাকে। উন্নয়ন বড় চ্যালেঞ্জ আমাদের, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পূরণ বড় চ্যালেঞ্জ আমাদের।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে জাতিসংঘের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের আট বছর পরও এসডিজি অর্জনে অর্থায়ন প্রক্রিয়া খুব দ্রুত এগোচ্ছে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আমরা খুব ভালো করেছি, আমরা এসডিজিকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি এবং আমরা এটিকে আমাদের পুরো সিস্টেমে অন্তর্ভুক্ত করেছি। বাংলাদেশ তার এসডিজি অর্থায়নের ৮৫ শতাংশ অভ্যন্তরীণভাবে এবং বাকি ১৫ শতাংশ আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মোমেন বলেন, ২০৩০ সালের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে এসডিজি অর্জনের জন্য আর্থিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির এটাই উপযুক্ত সময়।

অনুষ্ঠান স্বাগত বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক মো. আখতার হোসেন এসডিজি বিষয়ে একটি উপস্থাপনা তুলে ধরেন। প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরী, অ্যাকশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির এবং ইউনিলিভার বাংলাদেশের পরিচালক শামীমা আক্তার।