Dhaka মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট ২০২৫, ১১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানকে ৩০০ কোটি ডলার ঋণ দিতে রাজি আইএমএফ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের একটি প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছেছে। এ ঋণ পেলে দেশটি তার দুর্বল অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে পারবে। এছাড়া লাখ লাখ মানুষকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলা দেওয়া দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিকে সংকট থেকে বের করে আনতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আইএমএফ বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) এক বিবৃতিতে বলেছে, কর্মকর্তা পর্যায়ের এ চুক্তির আবেদন নির্বাহী বোর্ডের অনুমোদন সাপেক্ষে জুলাইয়ের মাঝামাঝি বিবেচনার জন্য সুপারিশ করা হবে।

কয়েক মাস ধরে আটকে থাকা এ চুক্তি পাকিস্তানকে তাদের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় ২২ কোটি মার্কিন ডলারে প্রবেশাধিকার দেবে এবং ঋণদাতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ পাওয়ার সুযোগ ও দেশের ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকি কমাবে।

আইএমএফ আরও বলেছে, নতুন এ চুক্তি সামনের সময়কালে বহুপাক্ষিক এবং দ্বিপাক্ষিক অংশীদারদের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তার জন্য একটি কাঠামো প্রদান করবে।

পাকিস্তানে গত বছর বিপর্যয়কর বন্যায় লাখ লাখ মানুষের অর্থনৈতিক দুর্দশা আরও জটিল হয়ে উঠে। অনেকের পরিবারকে চরম দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দেয়। এ অবস্থায় অনেকে খাদ্য, জ্বালানি এবং ওষুধের মতো প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলে।

দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার ও বিক্ষোভ ঘিরে থাকা রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ঋণ সুরক্ষিত করার প্রচেষ্টা আরও জটিল হয়। দুঃশাসন ও দুর্নীতির অভিযোগে গত বছর অনাস্থা ভোটে ইমরান খানকে নাটকীয়ভাবে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

নিষ্ঠুর দারিদ্র্য অনেককে পাকিস্তান ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে। ব্যাপক খাদ্যাভাব, ক্রমবর্ধমান মূল্য চাপে দেশের মানুষ বেসামাল হয়ে পড়ে। গত এপ্রিলে রমজান মাসে শত শত মানুষ বিনামূল্যে এক ব্যাগ ময়দা পাওয়ার জন্য রাস্তায় হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এ সময় অনেকে পদদলিত হয়ে মারাত্মকভাবে আহত হয়। এমন পরিস্থিতি শুধু দরিদ্রদেরই প্রভাবিত করেনি। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারও অসহায় হয়ে পড়ে।

ঋণ নেওয়ার আগে পাকিস্তান কর বাড়ানো এবং ব্যয় কমানোসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। আইএমএফের সঙ্গে দেশটির একটি অনমনীয় ইতিহাস রয়েছে। দেশটির বর্তমান ঋণ কর্মসূচি ২০১৯ সালে শুরু হয়েছিল। কিন্তু ইসলামাবাদ তহবিল কিছু প্রয়োজনীয়তা শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় বারবার স্থবির হয়ে পড়ে এ ঋণ কর্মসূচি।

বিশেষজ্ঞরা আগেই সতর্ক করে বলেছিলেন নিজস্ব তহবিল ছাড়া ঋণ নিলে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে খেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে।

দেশটি মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ বছর মূল্যস্ফীতি বেড়ে পণ্যের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী, যেমন- পেঁয়াজ, মুরগির মাংস, ডিম, চাল, সিগারেট ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে অস্থিরতা রয়েছে। সূত্র: সিএনএন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

আপস করলে খালেদা জিয়া অনেক আগেই ক্ষমতায় বসতে পারতেন : সেলিমা রহমান

পাকিস্তানকে ৩০০ কোটি ডলার ঋণ দিতে রাজি আইএমএফ

প্রকাশের সময় : ১০:০৩:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ জুন ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের একটি প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছেছে। এ ঋণ পেলে দেশটি তার দুর্বল অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে পারবে। এছাড়া লাখ লাখ মানুষকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলা দেওয়া দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিকে সংকট থেকে বের করে আনতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আইএমএফ বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) এক বিবৃতিতে বলেছে, কর্মকর্তা পর্যায়ের এ চুক্তির আবেদন নির্বাহী বোর্ডের অনুমোদন সাপেক্ষে জুলাইয়ের মাঝামাঝি বিবেচনার জন্য সুপারিশ করা হবে।

কয়েক মাস ধরে আটকে থাকা এ চুক্তি পাকিস্তানকে তাদের জন্য অতিপ্রয়োজনীয় ২২ কোটি মার্কিন ডলারে প্রবেশাধিকার দেবে এবং ঋণদাতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ পাওয়ার সুযোগ ও দেশের ঋণখেলাপি হওয়ার ঝুঁকি কমাবে।

আইএমএফ আরও বলেছে, নতুন এ চুক্তি সামনের সময়কালে বহুপাক্ষিক এবং দ্বিপাক্ষিক অংশীদারদের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তার জন্য একটি কাঠামো প্রদান করবে।

পাকিস্তানে গত বছর বিপর্যয়কর বন্যায় লাখ লাখ মানুষের অর্থনৈতিক দুর্দশা আরও জটিল হয়ে উঠে। অনেকের পরিবারকে চরম দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দেয়। এ অবস্থায় অনেকে খাদ্য, জ্বালানি এবং ওষুধের মতো প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলে।

দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার ও বিক্ষোভ ঘিরে থাকা রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ঋণ সুরক্ষিত করার প্রচেষ্টা আরও জটিল হয়। দুঃশাসন ও দুর্নীতির অভিযোগে গত বছর অনাস্থা ভোটে ইমরান খানকে নাটকীয়ভাবে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

নিষ্ঠুর দারিদ্র্য অনেককে পাকিস্তান ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে। ব্যাপক খাদ্যাভাব, ক্রমবর্ধমান মূল্য চাপে দেশের মানুষ বেসামাল হয়ে পড়ে। গত এপ্রিলে রমজান মাসে শত শত মানুষ বিনামূল্যে এক ব্যাগ ময়দা পাওয়ার জন্য রাস্তায় হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এ সময় অনেকে পদদলিত হয়ে মারাত্মকভাবে আহত হয়। এমন পরিস্থিতি শুধু দরিদ্রদেরই প্রভাবিত করেনি। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় অনেক মধ্যবিত্ত পরিবারও অসহায় হয়ে পড়ে।

ঋণ নেওয়ার আগে পাকিস্তান কর বাড়ানো এবং ব্যয় কমানোসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। আইএমএফের সঙ্গে দেশটির একটি অনমনীয় ইতিহাস রয়েছে। দেশটির বর্তমান ঋণ কর্মসূচি ২০১৯ সালে শুরু হয়েছিল। কিন্তু ইসলামাবাদ তহবিল কিছু প্রয়োজনীয়তা শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় বারবার স্থবির হয়ে পড়ে এ ঋণ কর্মসূচি।

বিশেষজ্ঞরা আগেই সতর্ক করে বলেছিলেন নিজস্ব তহবিল ছাড়া ঋণ নিলে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে খেলাপি হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে।

দেশটি মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ বছর মূল্যস্ফীতি বেড়ে পণ্যের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী, যেমন- পেঁয়াজ, মুরগির মাংস, ডিম, চাল, সিগারেট ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারে অস্থিরতা রয়েছে। সূত্র: সিএনএন।